
উপনিবেশবাদের বিনাশ হয়নি, রিফর্ম হয়েছে মাত্র! এই রিফর্ম মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ঘটেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে আমেরিকা যেটি করছে সেটি ঐ নয়া উপনিবেশবাদের চাষাবাদ মাত্র! আর, এই উপনিবেশবাদের চাষাবাদকে এই দেশের একদল উচ্চ মার্গীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছে, আমেরিকা নাকি বাংলাদেশে মানবাধিকার, ভোটাধিকার, গনতন্ত্রের উন্নয়নে কাজ করছে! ১৮ শতকে উপনিবেশবাদের বিকাশে একদল দেশীয় অনুগত দাস শ্রেণি সেবাদাস হিসাবে কাজ করেছিল, এখনও সেই পরিস্থিতিই বিরাজমান!
বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা বেশ চোখে পড়ার মতো। পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে, টক শোতে হচ্ছে আলোচনা। খবরে প্রকাশ: সরকার যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করার জন্য লবিস্ট নিযুক্ত করেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন তাঁর ‘গণতন্ত্র’ সম্মেলনে বাংলাদেশকে ডাকেননি। বাংলাদেশের র্যাবের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে! এই প্রেক্ষাপটে অনেকেই বলছেন, মানবাধিকারের সবক আর যার কাছেই নিই না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিতে আমরা রাজি নই, যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার অধিকার নেই। এ ধরনের বক্তব্যকে ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি যা–ই হোক, মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলার যৌক্তিক কারণ রয়েছে।
আমেরিকার হাতভরা রক্ত আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দাগ। পারস্যের সব সুগন্ধি ঢেলেও সেই হাতের গন্ধ দূর করা যাবে না। গুয়ানতানামো বে ডিটেনশন ক্যাম্পে ‘হেফাজতে মৃত্যু’ ঘটেছে ৯ জনের। ইরাকে মার্কিন সেনারা বন্দীদের ওপরে কী রকম যৌন ও নৃশংস অত্যাচার করত, তার ভিডিও দেখে বিশ্ববাসী স্তম্ভিত হয়ে যায়! এমনকি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম চলাকালে নিয়মনীতি ভেঙে পাকিস্তানিদের অস্ত্র সরবরাহ করা, বঙ্গোপসাগরের দিকে সপ্তম নৌবহর পাঠানো, চীনকে বলা ভারত আক্রমণ করতে, এমনকি দরকার হলে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঠেকাতে পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করবে বলে প্রেসিডেন্ট নিক্সনের উক্তি—সব মিলিয়ে বাংলাদেশে মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষের মৃত্যুর জন্য নিক্সন-কিসিঞ্জারকে দায়ী করে বিচার করা উচিত বলে গবেষকেরা বলছেন।
অর্থাৎ মানবাধিকার প্রশ্নে হিতোপদেশ দেওয়ার অধিকার আমেরিকার থাকার কথা নয়।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরিন ব্যাপারে কথা বলার জন্য মাার্কিন পররাষ্ট্র নীতির প্রতি ঘৃনা প্রকাশ করা উচিৎ এবং নব্য মীরজাফর গংদের প্রতিহত করা সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৮:৩৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




