somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২, কাউন্ট ডাউন (২০/১১/২০২০) দুই বছর বাকি।কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২২ প্রস্তুতির সর্বশেষ আপডেট।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০২২ সালের ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ আরব এলাকার ছোট মরুর দেশ কাতারে অনুষ্ঠিত হবে। আরব বিশ্বে এটি হবে ফিফার প্রথম বিশ্বকাপ এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে এটিই হবে প্রথম বিশ্বকাপ ।২০০২ সালের দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের পর এশিয়াতে অনুষ্ঠিত এটি হবে ফিফার দ্বিতীয় বিশ্বকাপ।





লুসাইল স্টেডিয়াম,কাতার।

২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর ৮৬,০০০ জন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন লুসাইল স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ।১৮ ডিসেম্বর কাতারের জাতীয় দিবস, এটি কাতারে সরকারি ছুটির দিন।

স্টেডিয়াম পরিচিতি -

১। লুসাইল স্টেডিয়াম, দোহা,কাতার ।

- বিশ্বকাপ উপলক্ষে নতুন করে নির্মিত হচ্ছে লুসাইল স্টেডিয়াম। রাজধানী দোহা থেকে ২৩ কিলোমিটার উত্তরে মরুভূমির মধ্যে নির্মিত হচ্ছে এটি। এই স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল খেলা।কাতার বিশ্বকাপের সবথেকে বড় স্টেডিয়ামটি হচ্ছে এই লুসাইল স্টেডিয়াম। এর অবস্থান নবনির্মিত লুসাইল সিটিতে।যা কাতারের রাজধানী দোহা থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার উত্তরে।প্রায় ৮৬ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পূর্ণ এই স্টেডিয়ামে মোট ৯টি খেলা আয়োজিত হবার কথা রয়েছে।লুসাইল স্টেডিয়ামের চারপাশ কৃত্রিম জলাধার দ্বারা বেষ্টিত। আর তার বাইরে আছে সর্বমোট ৬টি পার্কিং এড়িয়া।গোলাকার ছাদবিশিষ্ট স্টেডিয়ামটির ইনডোর এবং আউটডোর দুই ধরনের মাঠই একসাথে ব্যাবহার করা যাব। প্রয়োজনে এর ছাদের অংশবিশেষ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে খোলা আকাশের দৃশ্যও এই মাঠ থেকে উপভোগ করা যাবে।



২। আল বায়েত স্টেডিয়াম,আল খোর,কাতার

এবং তাবু আরব বিশ্বের একটি ঐতিহ্যবাহী জিনিষ।আরববাসীদের জীবন-যাপনের সাথে তাবু ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আরবদের প্রায় সকল উৎসব তাবুতে অনুষ্ঠিত হয়।আর তাই জুলাইয়ে, এটি নিশ্চিত করা হয়েছে যে আরব বিশ্বে ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী তাবুর অনুরূপ ৬০,০০০ ক্ষমতার ভেন্যু অত্যাশ্চর্য আল বায়েত (তাঁবুর মত স্টেডিয়াম নকশা) স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।

- স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হয় ঝিনুকের প্রত্যাকৃতি দিয়ে, সকল দর্শকের জন্য উপরে ছাদ বিশিষ্ট বসার জায়গা থাকবে। অসংখ্য যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে, বাহিরের পার্কিংগুলোতে প্রায় ৬,০০০ গাড়ী, ৩৫০টি বাস, এবং চলাচলরত আরো ৩৫০টি বাস ধারণ করার ক্ষমতা থাকবে। সেই সাথে ১,০০০ ট্যাক্সি ও ওয়াটার ট্যাক্সি ধারণ করতে পারবে। আসন সংখ্যা প্রায় ৬০,০০০ ,এছাড়াও থাকবে সংবাদকর্মীদের জন্য ১০০০ আসন।প্রায় ৬০,০০০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পূর্ণ এই স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচ সহ মোট ৮টি খেলা আয়োজিত হবার কথা রয়েছে।

একনজরে কাতার -

কাতার পারস্য উপসাগরের একটি ছোট পাথুরে মরুর দেশ।আরব উপদ্বীপ থেকে শুরু করে উত্তরে পারস্য উপসাগরের ভিতরে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত উপদ্বীপ কাতারের আয়তন ১১,৪৩৭ বর্গ কিমি।কাতার উপদ্বীপটি উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিলোমিটার), পূর্ব থেকে পশ্চিমে ৫০ মাইল (৮০ কিলোমিটার) এবং সাধারণত আয়তক্ষেত্রাকার।ভূভাগটি মূলত সমতল এবং এর সবজায়গায় পাথুরে ভূমি । এটি আরব উপদ্বীপের পূর্ব উপকূল থেকে উত্তর দিকে প্রসারিত কাতার উপদ্বীপে অবস্থিত। কাতারের দক্ষিণে সৌদি আরব, এবং এর পশ্চিমে দ্বীপরাষ্ট্র বাহরাইন অবস্থিত আর পূর্ব, পশ্চিম এবং উত্তরদিকে পারস্য উপসাগর।কাতারে বসবাসরত মোট জনসংখ্যা ২৮ লাখ। এর মধ্যে কাতারের নাগরিক মাত্র তিন লাখ। আরব উপদ্বীপের মত কাতারও একটি উত্তপ্ত ও শুষ্ক মরু এলাকা। এখানে ভূ-পৃষ্ঠস্থ কোন জলাশয় নেই এবং প্রাণী ও উদ্ভিদের সংখ্যাও যৎসামান্য। বেশির ভাগ লোক শহরে, বিশেষত রাজধানী দোহা শহরে বাস করে। দেশটিতে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় মজুদ আছে।কাতারের রয়েছে বিশাল প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত। গ্যাস মজুতের দিক থেকে কাতার বিশ্বে তৃতীয়এবং তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানিতে কাতার বিশ্বে প্রথম।। এই প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে দেশটির অর্থনীতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ।বর্তমানে মাথাপিছু আয়ের হিসেবে কাতার বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশগুলির একটি।১৯৭১ সালে এটি পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। ১৮ ডিসেম্বর প্রতিবছর কাতারের জাতীয় দিবস অনুষ্ঠিত হয় ।

এক নজরে ২০২২ বিশ্বকাপ -

আয়োজক দেশ - কাতার, রাজধানী - দোহা।
মোট স্টেডিয়াম / ম্যাচ ভেন্যু - ৮ টি ।
মোট ম্যাচ / খেলা - ৬৫ টি ।
উদ্বোধনী ম্যাচ এবং স্টেডিয়াম - ২১ নভেম্বর ২০২২,আল আল বায়েত স্টেডিয়াম,আল খোর,কাতার।
ফাইনাল ম্যাচ এবং স্টেডিয়াম - ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ৮৬,০০০ জন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন লুসাইল স্টেডিয়াম,লুসাইল সিটি,কাতার।


এক নজরে ২০২২ কাতার ফিফা বিশ্বকাপ

২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল হবে কাতারে । এটিই হবে প্রথম বিশ্বকাপ ,যা প্রচলিত বিশ্বকাপের সময় মে, জুন বা জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত না হয়ে পরিবর্তে বিশেষ ব্যবস্থায় ২১ নভেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর - ২০২২সালে কাতারে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কাতারের গ্রীষ্মের প্রচণ্ড উত্তাপের কারণে ২০২২ বিশ্বকাপটি প্রচলিত মে, জুন বা জুলাইতে হওয়ার পরিবর্তে এই প্রথম বার নভেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এবং এটি প্রায় ২৮ দিনের সীমিত সময়সীমায় খেলতে হবে এবং প্রতিটি স্টেডিয়ামই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং সব স্টেডিয়ামগুলির উপরে ছাদ থাকবে।মোট ৮ টি স্টেডিয়ামে খেলা হবার সম্ভাবনা এবং শিডিউল আছে।

পরের (২০২৬ ) ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬ টুর্নামেন্টটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডার জন্য নির্ধারিত এবং ৩২ টি দল বৃদ্ধি করে ৪৮ টি দল অন্তর্ভুক্ত করবে। বর্তমানে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ।

২০২২ ফিফা বিশ্বকাপে ১২ দিনের গ্রুপ পর্বে প্রতিদিন চারটি খেলা থাকবে এবং টুর্নামেন্টের পরে ম্যাচগুলিতে অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে যাওয়া সাপেক্ষে কাতারে মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে।এরই মধ্যে ফিফা নভেম্বর ও ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপের সময়সূচি প্রকাশ করেছে।প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০ টায় , বিকেল সাড়ে ৩ টা, সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা এবং রাত সাড়ে নয়টায় ।উভয় সেমিফাইনাল - আগের রাউন্ডের কয়েকটি গেমের মতো সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে শুরু হবে । তৃতীয় স্থানে নির্ধারনী ম্যাচ সহ ফাইনাল হবে রাত সাড়ে ৮ টায়।মোট ৩২ টি দল চূড়ান্ত ভাবে অংশগ্রহন করবে।

২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ কাপ সম্পর্কিত গ্রাউন্ড ওয়ার্ক কাজের সর্বশেষ আপডেট

২০১৭ সালের জুন মাসে চারটি প্রতিবেশী দেশ (সউদি আরব,আরব আমিরাত,বাহরাই ও মিশর ) যখন কাতারের উপর অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তখন দেশটি নানা ধরণের সমস্যার মুখে পড়েছিল।চারটি দেশের অভিযোগ হচ্ছে, কাতার সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে। যদিও এ ধরণের অভিযোগ কাতার সবসময় অস্বীকার করে আসছে।এ চারটি দেশ অবরোধ তুলে নেবার বিনিময়ে কাতারকে ১৩টি শর্ত দিয়েছিল।এগুলোর মধ্যে রয়েছে - ইরানের সাথে কাতারের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করা, আল-জাজিরা টিভি চ্যানেল বন্ধ করা। কিন্তু কাতার কোন শর্ত মানেনি। ফলে ১৯ মাস পরেও অবরোধ এখনো বহাল রয়েছে।এই অবরোধের ফলে প্রথমদিকে যদিও বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে শংকার আশংকা ছিল তবে শেষ পর্যন্ত এই অবরোধ কাতারের বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে খুব বেশী প্রভাব ফেলতে পারেনি এবং ইরান ও তুরস্কের সাহায্য-সহযোগীতায় এবং কাতারের আমীর তামিম বিন হামাদ আল থানির দূরদর্শীতা ও কুটনৈতিক সাফল্যের ফলে এবং সমগ্র কাতারসাসীর সহায়তা ,দেশপ্রেম ও শ্রমিক-কর্মচারী ও প্রশাসনের দিনরাত কঠোর পরিশ্রমের ফলে কাতার এ সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছে।

২১ নভেম্বর শনিবার ২০২০

ঠিক দু'বছর আগে ফিফা বিশ্বকাপ এর পরবর্তী আসর এবং গ্রাউন্ডওয়ার্কের অগ্রগতির সর্বশেষ অগ্রগতির অবস্থান জানানো হয়েছে। ঠিক দু'বছর পরের মধ্যপ্রাচ্য এবং প্রথমবারের মত আরব বিশ্বে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপ নিচ্ছিদ্র-নিবিড় প্রকৃতি, আধুনিক প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং আকর্ষণীয় সংস্কৃতির মাঝে,যা ২০২২ সালে সকল দর্শককে একটি অনন্য অভিজ্ঞতার বিশ্বকাপ উপহার দেবে বলে আশা করা যায় । গ্রুপ পর্বের সময় দিনে একাধিক ম্যাচ, যা এই বছরের শুরুর দিকে ঘোষিত হিসাবে দৈনিক চারটি খেলার সাথে একটি উত্তেজনাপূর্ণ সময়সূচী উপস্থাপন করবে।

ইতিমধ্যে তিনটি স্টেডিয়াম চূড়ান্ত করা হয়েছে ।খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম, আল জানুব স্টেডিয়াম এবং এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম। COVID-19 মহামারী সত্ত্বেও নিরাপদে ২০২২ সালে ৬৫ টিরও বেশি ম্যাচ নিরাপদে আয়োজন করার জন্য এই ইভেন্টটির জন্য পরিকল্পিত অবকাঠামোগুলির ৯০% সমাপ্তিতে পৌঁছেছে। আরও তিনটি টুর্নামেন্ট ভেন্যু নির্মাণের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে: আল রাইয়ান স্টেডিয়াম , আল বাইত স্টেডিয়াম এবং আল থুমামা স্টেডিয়াম। বাকি দুটি স্টেডিয়ামের মূল কাজগুলি - রস আবু আবউদ স্টেডিয়াম এবং লুসাইল স্টেডিয়াম - ২০২১ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

দেশব্যাপী অবকাঠামো গত উন্নয়ন কাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।অত্যাধুনিক দোহা মেট্রো সহ - (যা ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ কাতার ২০১৯ এর সময় দর্শকরা সাফল্যের সাথে ব্যবহার করেছিলেন) নতুন নতুন রাস্তা এবং হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ, যা ২০২২ সালের মধ্যে বছরে ৫০ মিলিয়নেরও বেশি দর্শনার্থীর জন্য ব্যবহার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

২০২০ অবশ্যই পুরো বিশ্বজুড়ে চ্যালেঞ্জিং বছর ছিল এবং ফুটবলও তার ব্যতিক্রম ছিল না। নানারকম অসুবিধা সত্ত্বেও, গত কয়েক মাসে নির্মান কাজের অবিচ্ছিন্ন অগ্রগতি হয়েছে, যা আবারো কাতারের দৃঢ়তা এবং অব্যাহত প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নকেই দেখিয়েছে। এটা নিঃসন্দেহ যে, কাতারের সম্মানিত আমিরের নেতৃত্বে আগামী দু'বছরের মধ্যে একটি অবিস্মরণীয় ফিফা বিশ্বকাপের আসরের আয়োজক হতে যাচছে কাতার।

সম্প্রতি কাতার সফরে এসে এবং প্রস্তুতি কাজের সর্বশেষ অবস্থা পরিদর্শন শেষে ফিফা ২০২২ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সম্পর্কে ফিফা প্রধান বলেন,“সম্প্রতি কাতার সরকার কর্তৃক ঘোষিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শ্রম সংস্কারের পাশাপাশি স্টেডিয়াম নির্মাণে নির্মাণ কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি অগ্রগতিও হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে দোহায় আমার সংক্ষিপ্ত সফরের সময় আমি প্রথম দেখেছি যে প্রস্তুতিগুলি কতটা এগিয়েছে এবং আমি দেখেছি যে,দেশ এবং ঐ অঞ্চলে ইতিমধ্যে যে রূপান্তরকামী প্রভাব ফেলছে তার জন্য আমি কাতারের প্রতি আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রত্যাশা করছি যে এটি একটি অনন্য অভিজ্ঞতার বিশ্বকাপ হবে সারা বিশ্ব জুড়ে এবং অবশ্যই দর্শকদের দিবে সেরা বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা"।

সুপ্রিম কমিটি অফ ডেলিভারি অ্যান্ড লিগ্যাসির সেক্রেটারি জেনারেল, এইচ হাসান আল থাওয়াদি যোগ করেছেন: “আমরা গত দশ বছরে যে অগ্রগতি করেছি তার জন্য আমরা অত্যন্ত গর্বিত। টুর্নামেন্ট এবং জাতীয় অবকাঠামো প্রকল্প উভয়ই বেশ উন্নত এবং প্রস্তাবিত সমস্ত কিছু চূড়ান্ত কিক-অফের আগেই শেষ করা হবে। ইতিমধ্যে আমাদের অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলিতে শ্রমিকদের অধিকার, শিক্ষা এবং উদ্যোক্তাদের মতো এঅঞ্চলের মানুষের জীবনে ইতিমধ্যেই ভালো প্রভাব ফেলছে"।তিনি আরো বলেন,“এটি একটি অবিশ্বাস্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ ফিফা বিশ্বকাপ - কাতার, আরব অঞ্চল এবং বিশ্বের জন্য। কাতার ২০২২ সালে প্রথম বারের মতো মধ্যপ্রাচ্য এবং আরব বিশ্বকে কোটি কোটি মানুষের সথে পরিচয় করিয়ে দেবে, এবং যাতে আমাদের দেশ ও অঞ্চল সম্পর্কে লোকেরা জানতে পারবে । আমরা ২০২২ সালে বিশ্বকে স্বাগত জানাতে খুব উচ্ছ্বসিত। "

কাতার আধুনিক সময়ে ফিফা বিশ্বকাপের সবচেয়ে আকর্ষনীয় এবং ঝমকালো আসর আয়োজন করবে এবং উপহার দিবে । সমস্ত স্টেডিয়ামগুলি একে অপরের নিকটবর্তী হওয়ায় এবং একটি অতি আধুনিক পরিবহন পরিকাঠামো দ্বারা সংযুক্ত করা হবে যাতে কম সময় ও অর্থ ব্যায়ে দর্শক ,খেলোয়াড় এবং মিডিয়া ভ্রমণ করতে পারবে। টুর্নামেন্ট জুড়ে দর্শনার্থীরা এক জায়গায় অবস্থান করতে সক্ষম হবেন এবং কোনও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট নিতে হবে না। স্টেডিয়ামগুলির মধ্যে দীর্ঘতম দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার (আল বাইট থেকে আল জানুব), যখন সবচেয়ে সংক্ষিপ্ততমটি মাত্র ৫ কিলোমিটার (শিক্ষা শহর থেকে আল রায়য়ান)।টিকেট পাওয়া সাপেক্ষে একজন দর্শক চাইলে প্রতিদিন সবগুলি খেলাই মাঠে বসে উপভোগ করতে পারবে।

এবার আসুন দেখি বাকী স্টেডিয়ামগুলি -



৩। আল ওয়াকরাহ স্টেডিয়াম ,দোহা ,কাতার ।

স্টেডিয়াম পরিচিতি - ইরাকি-যুক্তরাজ্য স্থপতি যাহা হাদিদের এক অতুলনীয় স্থাপনা হলো আল ওয়াকরাহ স্টেডিয়াম। বক্রতার রানী হিসেবে খ্যাত যাহা হাদি এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় ‍দিয়েছেন।স্টেডিয়ামটি তৈরি করার জন্য তিনি ধারনা নিয়েছেন সাগরের নৌকায় চলার সময় স্থানীয় নৌকার ফুলে ওঠা পালের আকৃতি থেকে।আরব সাগরের বুকে ঢেউয়ের স্রোতে ভেসে চলার সময় দেখা দৃশ্য তিনি এই স্থাপত্বে ব্যবহার করছেন বলে জানা যায়।স্টেডিয়ামটি একইসাথে সৃজনশীল, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং নান্দনিক ডিজাইন সম্পন্ন।
প্রায় ৪০ হাজার ধারণ ক্ষমতা বিশিষ্ট এই স্টেডিয়ামে মোট ৬টি খেলা অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।যার মধ্যে রয়েছে পাঁচটি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ এবং একটি রাউন্ড ১৬ এর ম্যাচ।



৪। আল রায়ান স্টেডিয়াম ,দোহা ,কাতার ।

স্টেডিয়াম পরিচিতি - আল রায়ান স্পোর্টস ক্লাব কাতারের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ফুটবল ক্লাব। এই ক্লাবটির অধীনে আহমেদ আলী স্টেডিয়াম নামে একটি স্টেডিয়াম রয়েছে।সেই স্টেডিয়ামটিকে বিশ্বকাপের জন্য পুনঃসংস্কার করা হচ্ছে। যাকে পরবর্তিতে আল রায়ান স্টেডিয়াম হিসেবে নামকরন করা হবে।এর ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৪৪ হাজার। এই স্টেডিয়ামটিও বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে। ২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপের সকল স্টেডিয়াম গুলোর মধ্যে স্টেডিয়ামে মোট ৬টি খেলা আয়োজিত হবে যার মধ্যে রয়েছে পাঁচটি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ এবং একটি রাউন্ড ১৬ এর ম্যাচ।সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সাল নাগাদ এটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।এই স্টেডিয়ামের মুল আকর্ষণ হচ্ছে স্টেডিয়ামের বহির্ভাগ ত্রিমাত্রিক আবরণ দ্বারা তৈরি হবে যা বিজ্ঞাপন সহ বিভিন্ন দৃশ্য প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে একটি ত্রিমাত্রিক গোলাকার পর্দার মতো করে কাজ করবে।



৫। খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম ,দোহা ,কাতার ।

স্টেডিয়াম পরিচিতি - কাতারের সবচেয়ে পুরানো স্টেডিয়াম গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। ১৯৭৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।কাতারের সাবেক আমির খলিফা বিন হামাদ আল থানির নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়।স্টেডিয়ামটি তে অনেক আগে থেকেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।বর্তমানে ২০২২বিশ্বকাপ ফুটবলকে সামনে রেখে নতুন করে এর সংস্করণ করে ২০১৭ সালে পুনঃরায় উদ্বোধন করা হয়।ফলে এখন এর ধারণক্ষমতা প্রায় ৪০ হাজারে।
বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণ ম্যাচ সহ খলিফা স্টেডিয়ামে মোট সাতটি খেলা আয়োজিত হবে।যার মধ্যে রয়েছে গ্রুপ পর্বের পাঁচটি, রাউন্ড ষোল এর একটি এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণ ম্যাচ।
এই স্টেডিয়ামের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এতে রয়েছে আকর্ষণীয় নকশার দ্বৈত খিলান। যার সাথে আবার দীর্ঘ পথ জুড়ে প্রশস্ত শামিয়ানা রয়েছে



৬। রাস আবু আবুউদ স্টেডিয়াম,দোহা ,কাতার ।

স্টেডিয়াম পরিচিতি - বিশ্বকাপ ফুটবলকে সামনে রেখে রাস আবু আউদ নামে আরো একটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে কাতারে।এর ধারণক্ষমতা হবে ৪০ হাজার।এতে মোট ৬টি খেলা আয়োজিত হবার কথা রয়েছে যার মধ্যে গ্রুপ পর্বের পাঁচটি এবং রাউন্ড ষোল এর একটি ম্যাচ রয়েছে।



৭। আল থুমামা স্টেডিয়াম,দোহা ,কাতার ।

স্টেডিয়াম পরিচিতি - প্রায় ৪০ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই স্টেডিয়ামটি রাজধানী দোহার সমুদ্রতীর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।এখানে কোয়ার্টার ফাইনাল সহ মোট সাতটি খেলা অয়োজন হবার কথা রয়েছে।
যেখানে থাকছে ৫টি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ, একটি রাউন্ড ১৬ এর ম্যাচ এবং একটি কোয়াটাড় ফাইনাল।স্টেডিয়ামটি কাতারের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় পরিচয়ের নিদর্শন স্বরূপ।মধ্য প্রাচ্যের প্রায় সব উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রের পুরুষরা একধরনের হাতে বোনা টুপি পরে। যার নাম স্থানীয় ভাষায় গাফিয়া।আলথুমামা স্টেডিয়াম আকৃতিতে দেখতে বিশাল টুপির মতো,যা রাষ্ট্রের পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।





৮। এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম,দোহা ,কাতার ।

স্টেডিয়াম পরিচিতি - এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামটি কাতার ফাউন্ডেশন স্টেডিয়াম নামেই বেশি পরিচিত।কাতারের এডুকেশন সিটি মূলত এমন একটি স্থান যেখানে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা কেন্দ্র অবস্থিত।ঠিক এই সকল প্রতিষ্ঠানের পাশেই তৈরি হতে চলেছে এই এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম।

স্টেডিয়ামটির নকশাঙ্কন করা হয়েছে ঐতিহাসিক ইসলামিক স্থাপত্য এবং আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রণে।এর বহির্ভাগে অবস্থিত হীরা এবং ত্রিভুজাকৃতির নকশার রঙ সূর্যের স্থান পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজ থেকে পরিবর্তিত হতে থাকবে।এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামটি ৪০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন।সম্পৃতি স্টেডিয়ামটি উদ্বোধন করা হয়েছে। যেখানে বিশ্বকাপের মোট সাটটি খেলা আয়োজিত হবার কথা রয়েছে।যেখানে গ্রুপ পর্বের মোট ৫টি খেলা, রাউন্ড ষোল এর একটি খেলা এবং একটি কোয়াটার ফাইনাল আয়োজিত হবার কথা রয়েছে।

সব কিছু মিলিয়ে আশা করা যায় , ২০২২ সালে ফুটবল প্রেমিরা কাতারেএকটি চমতকার,আকর্ষনীয় ও নিরাপদ বিশ্বকাপ ফুটবল উপভোগ করতে পারবে এবং দর্শকরা এবং সারাবিশ্বের মানুষ পাবে মুসলিম,শিক্ষা-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে নতুন করে পরিচিতি।
==================================================================
তথ্য উৎস - গালফ নিউজ ও আল জাজিরা।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫০
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×