somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" নামাজ " ইসলামের দ্বিতীয় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ । যা মুসলিম-অমুসলিমের মাঝে পার্থক্যকারী সূচক হিসাবে বিবেচিত এবং মুসলমান মাত্রই দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।(ঈমান ও আমল - ৫)।

০৩ রা মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি - istockphoto.com

ঈমান আনার পর ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বা কাজ হল নামাজ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল্লাহর পক্ষ থেকে বার বার নামাজের তাগিদ পেয়েছেন।পবিত্র কুরআনে পাকে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি ৮২ বার সালাত শব্দ উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।নামাজ প্রসংগে মহান আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন,"তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। আর নিঃসন্দেহে তা বড়ই কঠিন- বিনীতদের জন্যে ছাড়া"।( সুরা বাকারাহ ,আয়াত- ৪৫)।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ আরো বলেন,"তোমরা সালাত সমূহের প্রতি এবং ( বিশেষ করে ) মধ্যবর্তী সালাতের প্রতি যত্নবান হও, এবং আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্যে একান্ত অনুগত অবস্থায় দাড়াও"।(সুরা বাকারাহ ,আয়াত - ২৩৮)।তিনি আরো বলেন,"এরপর যখন নামায শেষ করবে তখন দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করবে। যখন তোমরা নিরাপদ হবে, তখন যথাযথভাবে নামায আদায় করবে। নির্ধারিত সময়ে নামায আদায় করা মুসলমানদের জন্য ফরজ।" (সুরাহ নিসা,আয়াত - ১০৩)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত তরক বা পালন না করাকে শিরক বলে অভিহিত করেছেন এবং একে মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী সূচক হিসাবে ঘোষণা করেছেন (তিরমিযী - ২৬২১)।হজরত উম্মি ফারওয়াহ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, "নবী কারিম (সা.) কে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, সবচেয়ে মর্যাদাবান ‘আমল কোনটি? তিনি বলেন, ওয়াক্তের প্রারম্ভে সালাত আদায় করা"। (সুনানু আবী দাঊদ: ৪২৬, জামি’উত তিরমিযী:১৭০)।হযরত জাবির (রা.) হতে বর্ণিত -" তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, বান্দা (আনুগত্য) ও কুফরীর মধ্যে (পার্থক্য) হলো সালাত ত্যাগ করা"। (সহীহ মুসলিম - ৮২)।

প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজকে ঈমানের পরে স্থান দিয়েছেন। নামাজের গুরুত্ব ও ফায়দা সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরামের সামনে অসংখ্য হাদিস বর্ণনা করেছেন। হযরত আবূ হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, "মুনাফিকদের কাছে ফজর ও ইশা অপেক্ষা অধিক ভারী কোনো সালাত নেই। আর যদি তারা জানত যে, এতদুভয়ের মধ্যে কী (ফযীলাত) রয়েছে, তাহলে অবশ্যই তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এর জন্যে আসত"। (সহীহ বুখারী - ৬৫৭, সহীহ মুসলিম - ৬৫১) ।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, "আল্লাহ তাআলা মনোনীত সর্বোত্তম আমল হলো নামাজ (বুখারি ও মুসলিম) । অতএব যে বেশি বেশি নামাজ পড়তে সক্ষম, সে যেন বেশি বেশি নামাজ পড়ে"। (তাবারানি)।


ছবি - alamy.com

নামাজই একমাত্র ইবাদত, যার মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার সব কাজ ছেড়ে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য নিবেদিত হয়ে যায়। এ নামাজই মানুষকে দুনিয়ার সব পাপ-পংকিলতা থেকে ধুয়ে মুছে পাক-সাফ করে দেয়। দুনিয়ার সব অন্যায়-অনাচার থেকে হেফাজত করে।

নামায, নামাজ বা সালাত হল ইসলাম ধর্মের প্রধান ইবাদাত বা উপাসনাকর্ম। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আবশ্যক বা ফরজ। নামায ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মাঝে দ্বিতীয়। ঈমান বা বিশ্বাসের পর নামাযই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যা দৈনিক আদায় করা বাধ্যতামূলক সকল মুসলমানের জন্য। নামাজগুলি হল -

১। ফজরের নামাজ - সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত ফজরের নামাজের সময়। (মোট - ৪ রাকাত ) - ২ রাকাত সুন্নত এবং ২ রাকাত ফরজ।

২। যোহরের নামাজ - এটি ঠিক দুপুর থেকে আসরের পূর্ব পর্যন্ত আদায় করা হয় বা যায়। (মোট - ১২ রাকাত) - ৪ রাকাত সুন্নত,৪ রাকাত ফরজ,২ রাকাত সুন্নত এবং ২ রাকাত নফল।

৩। আসরের নামাজ -এটি বিকেলের সময় আদায় করা হয়।যোহরের পর পরই এর সময় শুরু হয় এবং সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত এর সময় থাকে।( মোট - ৮ রাকাত) - ৪ রাকাত সুন্নত এবং ৪ রাকাত ফরজ।

৪। মাগরিবের নামাজ - এটি সূর্যাস্তের পর আদায় করা হয়। মাগরিবের সালাত আদায়ের সুন্নাহ এবং গ্রহণযোগ্য সময় হচ্ছে, সূর্যাস্তের পরে কোনো রকমের দেরি না করে মাগরিবের সালাত আদায় করা।(মোট - ৭ রাকাত) - ৩ রাকাত ফরজ,২ রাকাত সুন্নত এবং ২ রাকাত নফল।

৫। এশার নামাজ - এটি রাতে আদায় করা হয়। মাগরিবের নামাজের সময় অতিবাহিত হওয়ার পর ইশার নামাজের সময় শুরু হয় এবং রাতের তিনের এক ভাগ সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত পড়া সর্বোত্তম।(মোট - ১৫ রাকাত) - ৪ রাকাত সুন্নত , ৪ রাকাত ফরজ,২ রাকাত সুন্নত,২ রাকাত নফল এবং ৩ রাকাত বিতর।


ছবি - deccanchronicle.com

৬।জুম্মার নামাজ - প্রতি শুক্রবারে যোহরের নামাজের পরিবর্তে জুম্মার নামাজ আদায় করতে হয়।মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বিশেষ দিন শুক্রবার।এদিন যোহরের নামাজের পরিবর্তে দুই রাকাত জুম্মার নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ।

জুম্মার দিনে ফরজ নামাজের পূর্বে ২ রাকাত তাহিয়্যাতুল অজু সুন্নত, ২ রাকাত দুখলুল মসজিদ সুন্নত,৪ রাকাত কাবলাল জুমআ সুন্নত তারপর খুতবা পাঠের পর ইমামের পিছনে জামাতের সাথে ২ রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতে হয়। তারপর ৪ রাকাত বা’দাল জুমআ,২ রাকাত ওয়াক্ত সুন্নাত এবং ২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করা উত্তম।( তবে, ফরজের আগে ৪ রাকাত কাবলাল জুম্মা ও ফরজের পরে ৪ রাকাত বাদাল জুম্মা আদায় করতে হয়) আর বাকী নামাজ গুলি নামাজ আদায় করা উত্তম।

ফরজ নামাজ - ফরজ অর্থ আবশ্যক, অপরিহার্য, জরুরি।যে সকল নামাজ পড়ার জন্য মহান আল্লাহ তাআলা নির্দেশ করেছেন তাকে ফরজ নামাজ বলা হয় ।কেউ ফরজ অস্বীকার করলে কাফির হয়ে যাবে ।দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে সতেরো রাকাত (ফজর ২,যোহর ৪,আসর ৪,মাগরীব ৩ ও ইশা ৪) নামাজ ফরজ।

ফরজ নামাজ দুই প্রকার । যথা-

১। ফরজে আইন - যে কাজ প্রত্যেক বালেগ, বিবেকবান মুসলমান নর-নারীর উপর সমানভাবে ফরজ তাকে বলা হয় ফরজে আইন । যেমন, দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, রমযানে রোজা রাখা , ঈমান, হজ, জাকাত।

২।ফরজে কেফায়া - বলা হয়, যে ফরজ কিছু মুসলমান আদায় করলেই সকলের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়। আর যদি একজনও আদায় না করে তাহলে সকলেই গুনাহগার হবে,তাকে বলা হয় ফরজে কেফায়া। যেমন, জানাযার নামাজ পড়া।

সুন্নত নামাজ - সুন্নত হল এমন আমল যা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমল করেছেন এবং তার প্রতি উৎসাহিত করেছেন কিন্তু তা ফরজ বা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে কোন দলীল পাওয়া যায় না।মহানবী (সাঃ) নির্দেশে অথবা তার আমলের উপর নির্ভর করে যে নামাজ আদায় করা হয়, তাকে সুন্নত নামাজ বলে।

সুন্নত দুই প্রকার : সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ ও সুন্নতে জায়েদা। চার ওয়াক্তে বারো রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ ,(ফজর-২,জোহর-৬, মাগরিব -২, ইশা -২) নামাজ এবং দুই ওয়াক্তে (আসর-৪,ইশা-৪) আট রাকাত সুন্নতে জায়েদা নামাজ ।

১।সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ - সুন্নতে মুয়াক্কাদা ওই সুন্নত, যার ওপর রাসুলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত এমনভাবে আমল করতেন যে তা ওজরবিহীন (বিশেষ অপারগতা) কখনো ছাড়তেন না। যথা - ফজরের ফরজের আগে ২ রাকাত, যোহরের ফরজের আগে ৪ আর পরে ২ রাকাত, মাগরিবের ফরজের পরে ২ রাকাত আর ঈশার ফরজের পরে ২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ।

২।সুন্নতে জায়েদা - সেসব সুন্নত, যার ওপর রাসুলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত আমল করলেও ওজরবিহীন মাঝে-মাঝে ছেড়ে দিতেন। সুন্নাতে জায়েদা হল অতিরিক্ত সুন্নাত নামাজ।তার বিধান হলো—তার ওপর আমল করা প্রশংসনীয় ও সওয়াবের কাজ। তবে অপ্রয়োজনে ওজরবিহীন ত্যাগকারীকে তিরস্কার করা যাবে না। যথা আসরের ৪ রাক'য়াত ও ঈশার ৪ রাক'য়াত সুন্নতে জায়েদা ।


ছবি - daily-sun.com

ওয়াজিব নামাজ সমুহ - ওয়াজিব অর্থ আবশ্যক, অপরিহার্য, জরুরি।কার্যত ওয়াজিব ফরজ বিধানের মতোই অবশ্য কর্তব্য। ওয়াজিব ত্যাগকারী কবিরা গোনাহগার হিসেবে গণ্য হবে।কিন্তু ওয়াজিব অস্বীকার করলে কাফির হবে না বরং ফাসিক হবে।এ নামাজের গুরুত্ব ফরজের পরই।যে সকল নামাজ পড়ার জন্য মহান আল্লাহ্ তাআলার নির্দেশ থাকলেও এ নির্দেশাবলী ফরজের মত এত জোরালো নয়।এ ধরনের নামাজ কে ওয়াজিব নামাজ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেমনঃ- বিতর নামাজ।কেউ ইচ্ছাকৃত ও নিয়মিত না পড়লে গুনাহ হবে।দৈনিক তিন রাকাত বিতর নামাজ ওয়াজিব ।যা আলাদা ভাবে না পড়ে সাধারণত ইশার নামাজের পরে পড়া হয়।

নফল নামাজ - নফল নামাজ পড়লে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়। অনেকের মতে, হাশরের মাঠে যদি ফরজ নামাজ প্রয়োজনের থেকে কম থাকে, তাহলে মহান আল্লাহ ফরজের পরে ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল ইত্যাদি থেকে নিয়ে সেই মানুষকে উদ্ধারের চেষ্টা করবেন। কাজেই আপাত দৃষ্টিতে এটা খুব একটা জরুরি মনে না হলেও প্রকৃত অর্থে অত্যন্ত জরুরি। এ নফল নামাজই রোজ হাশরে মানুষের জন্য বেহেশত-দোযখের সিদ্ধান্তকারী হয়ে যেতে পারে। দৈনিক ৬ রাকাত নফল (যোহর-২,মাগরিব-২,ইশা - ২) নামাজ পড়া উত্তম।

নফল নামাজের নিষিদ্ধ সময় -

সূর্যোদয়ের সময় সব নামাজ নিষিদ্ধ, সূর্য মাথার ওপর স্থির থাকা অবস্থায় নামাজ পড়া মাকরুহে তাহরিমি, সূর্যাস্তের সময় চলমান আসর ব্যতীত অন্য কোনো নামাজ বৈধ নয়। এ ছাড়া ফজর নামাজের ওয়াক্ত হলে তখন থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত এবং আসর ওয়াক্তে ফরজ নামাজ পড়া হলে তখন থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো ধরনের নফল নামাজ পড়া নিষেধ। এই পাঁচটি সময় বাদে অন্য যেকোনো সময় নফল নামাজ পড়া যায়। (আওকাতুস সালাত)।
সূর্য উঠার শুরু থেকে হলুদ আলো পুরোপুরি দূর না হওয়া পর্যন্ত, সূর্য যখন মাথার ওপরে এবং সূর্য ডোবার সময় , এ তিন সময় নামাজ পড়া নিষেধ হওয়ার কারণ সম্পর্কে জ্ঞানীরা বলেন, সূর্য যখন ওঠে, যখন মাথার ওপর ওঠে এবং যখন ডুবে যায়- এ তিন সময় সূর্য পূজারিরা সূর্যকে সেজদাহ করে। তখন কেউ যদি নামাজ পড়ে তাহলে তাকেও সূর্য পূজারি মনে হতে পারে। এ জন্য এ সময় সব ধরনের নামাজ পড়া এবং সেজদাহ করা ইসলামী শরিয়ত মাকরুহে তাহরিমি তথা নিষেধ মনে করে।


কাযা নামাজ - ভুলবশত কিংবা অন্য কোনো বিশেষ কারণে কোনো ওয়াক্তের নামাজ যথাসময়ে আদায় করতে না পারলে পরবর্তীতে এই নামাজ আদায় করাকে কাজা নামাজ বলা হয়। ফরজ কিংবা ওয়াজিব নামাজ ছুটে গেলে তার কাজা আদায় করা আবশ্যক।সুন্নত কিংবা নফল নামাজ আদায় করা না গেলে কাজা আদায় করতে হয় না।কোন নামাজ কাজা হলে পরের ওয়াক্তের নামাজ আদায় করার পূর্বে তা আদায় করে নেয়া ভাল।অনেক বেশী ওয়াক্তের নামাজ কাজা হলে কাজা নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো প্রত্যেক নামাজের সময় একাধিক ওয়াক্তের কাজা নামাজ আদায় করে নেয়া। যেমন কোনো ব্যক্তি আসরের নামাজের আজানের পর সেদিনকার ফরজ নামাজ পড়ার আগে কাজা আসরের নামাজ আদায় করল পরে সেদিনকার নামাজ পড়ল। এভাবে কাজা নামাজ আদায় করতে করতে একসময় যখন মনে হবে তার আর কোনো নামাজ কাজা নেই, তখন কাজা নামাজ পড়া বাদ দিয়ে নফল নামাজের মনোযোগী হবে।

এ ছাড়াও আরো কিছু নামাজ রয়েছে ।যথা -


ছবি-tazakhobor24.com

১। তাহাজ্জুদ নামাজ - ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ নামাজ হলো তাহাজ্জুদ। পবিত্র কোরআনে তাহাজ্জুদ আদায়ের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।সালাতুল লাইল বা তাহাজ্জুদ এশার নামাজ আদায়ের পর থেকে সুবেহ সাদিকের আগ পর্যন্ত পড়া যায়। তবে অর্ধ রাতের পর থেকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ভালো। শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা সর্বোত্তম।শেষ রাতের এ নামাজ অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। যাকে তাহাজ্জুদের নামাজ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ নামাজ সুন্নত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়তেন।প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই দুই রাকাত করে এ নামাজ আদায় করতেন। যেকোনো সূরা দিয়েই এ নামাজ পড়া যায়। তবে তিনি লম্বা কেরাতে নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা উত্তম।তাই প্রতি বার ২ রাকাত ২ রাকাত করে ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়াই ভালো।সম্ভব হলে ১২ রাকাআত তাহাজ্জুদ নামাজও আদায় করা যায়। তবে ৮ রাকাআত আদায় করা উত্তম। তাও সম্ভব না হলে নূন্যতম ৪ রাকাত আদায় করলেও হয়।তবে তাহাজ্জুদ নামাজের কোনো কাজা নেই এবং তা আদায় না করলে কোন গুনাহ নেই তবে পড়া উত্তম।

২। ইশরাকের নামাজ : সূর্য পরিপূর্ণভাবে উদিত হওয়ার পর ইশরাকের নামাজ আদায় করতে হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করতেন। এ সময় দোয়া, তাসবিহ পাঠ ও দ্বিনি আলোচনা করতেন। সূর্যোদয়ের পর তিনি দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। এই আমলের প্রতি রাসুলুল্লাহ (সা.) অন্যদেরও উৎসাহিত করেছেন। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, "যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল এবং সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকিরে বসে থাকল; অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, সে একটি পরিপূর্ণ হজ ও ওমরাহর সওয়াব পাবে"। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস - ৫৮৬)।

৩।চাশতের নামাজ বা সালাতুত দুহা - সূর্য মধ্য আকাশে স্থির হওয়ার আগ মুহূর্তে ‘দুহা’র নামাজ আদায় করা হয়। পৃথকভাবে আদায় করার অবকাশ থাকলেও অনেকেই এটাকে ইশরাকের নামাজ হিসেবেই উল্লেখ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, সময়ের শুরুতে আদায় করলে সেটা ইশরাক আর সময়ের শেষে আদায় করলে দুহা।চাশতের নামাজের ৪ রাকাত তবে সর্বনিম্ন ২ রাকাত পড়া যায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, "তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয়তম (রাসুল সা.) আমাকে তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন, যেন আমি তা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ত্যাগ না করি। প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, দুহার নামাজ ও ঘুমানোর আগে বিতর আদায় করা"। (সহিহ বুখারি, হাদিস - ১১৭৮)।

৪।আওয়াবীন নামাজ - মাগরিব ও এশার নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে আদায়কৃত ছয় রাকাত নামাজ ‘আউয়াবিন’ নামে পরিচিত। আল্লামা মাওয়ার্দি এই মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। (মুগনির মুহতাজ : ১/৩৪৩)। তবে কেউ কেউ ‘দুহা’ নামাজকেই আউয়াবিনের নামাজ বলেছেন। নাম নিয়ে মতভিন্নতা থাকলেও এই সময় নামাজ আদায়ের গুরুত্ব হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, "যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ আদায় করবে এবং এগুলোর মধ্যে কোনো মন্দ কথা না বলে, তার আমলনামায় বারো বছর ইবাদতের সওয়াব লেখা হবে"। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস - ১১৬৭) ।

৫।সালাতুত তাওবা - সালাতুত তাওবা বিষয়টি আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদসহ অনেক গ্রন্থেই রয়েছে। কোনো গোনাহ হয়ে গেলে - দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে, তাওবা ইস্তিগফার করে, দরুদ শরিফ পড়ে কান্নাকাটিসহ আল্লাহর কাছে দোয়া ও মোনাজাত করলে আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমা করবেন। এই নামাজকে সালাতুত তাওবা বা তাওবার নামাজ বলা হয়।

৬।সালাতুল হাজাত - সালাতুল হাজাত প্রসঙ্গটি বুখারি, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, মিশকাতসহ বহু হাদিস গ্রন্থে রয়েছে। পাক-পবিত্র হয়ে দোয়া, ইস্তিগফার ও কয়েকবার দরুদ শরিফ পড়ে একাগ্রতার সঙ্গে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে হবে। নামাজ শেষে ১১ বার ‘ইয়া কাজিয়াল হাজাত’ (হে প্রয়োজন পূর্ণকারী) পড়বে এবং আরও কয়েকবার দরুদ শরিফ পড়ে ভক্তি ও মহব্বতের সঙ্গে উদ্দেশ্য পূর্ণ হওয়ার জন্য দোয়া ও মোনাজাত করতে হবে। ইনশা আল্লাহ মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হবে।

৭।সালাতুত তাজবীহ - সালাতুত তাসবীহ "তাসবীহের নামাজ" নামেও পরিচিত। নবী মোহাম্মদ (সা.) তার অনুসারীদেরকে এ নামাজ পালনে উৎসাহিত করছেন। জীবনে একবার হলেও মুসলমানরা যেনো এ নামাজ পড়ে সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।সালাতুত তাসবীহ চার রাকাত। প্রতি রাকাতে "সুবাহানাল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার" তাসবীহগুলো ৭৫ বার পড়তে হয়। চার রাকাতে মোট ৩০০ বার পড়তে হয়।

রাসুল (সা.) তার চাচা হজরত আব্বাস (রা.)-কে বলেন, ‘চাচা, পারলে আপনি সালাতুল তাসবিহ নামাজ সপ্তাহে একবার, তাও না হলে মাসে একবার, তাও না পারলে বছরে একবার পড়বেন। তাতেও অক্ষম হলে অন্তত জীবনে একবার হলেও এ নামাজ পড়বেন। এ নামাজ দ্বারা জীবনের ছোট, বড়, স্বেচ্ছায়, অনিচ্ছায়, নতুন, পুরনো, গোপন, প্রকাশ্য সব রকম অপরাধ মাফ হয়ে যায়।’

৮।ইশতেখারার নামাজ - ইস্তেখারা শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো, কোন জিনিসের ক্ষেত্রে কল্যাণ কামনা করা। সালাতুল ইস্তেখারা হলো, আল্লাহর নিকট কোন জিনিসের ক্ষেত্রে কল্যাণ কামনা করা। কোন কিছু বা বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা থাকলে এই নামাজ পড়া হয়। এই নামাজ খুব নিয়ামতপুর্ণ । এই নামাজটির নিয়ম হলো, দুই রাকাত নামাজ পড়বে তারপর নামাজ শেষে আল্লাহর প্রশংসা করবে অর্থাত আল্লাহর হামদ পড়বে তারপর রাসুলে কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর দরূদ পড়বে। রাতে ঠিক শোয়ার আগে অযু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বেন। এটি স্বাভাবিক নফল নামাজের মতই। এতে বিশেষ কোন নিয়তের প্রয়োজন নেই। তবে সালাত কেন পড়ছেন তা আপনার অন্তরে জাগ্রত থাকাই যথেষ্ট।

৯।শবে মিরাজের নামাজ - রজব চাঁদের ২৭ তারিখ রাত্রে নবী কারিম (সঃ) মে’রাজ শরীফে গমন করেছিলেন। এই রাত্রে আল্লাহতালা তার অসীম কুদরতে মুহূর্ত কালের মধ্যে সপ্তম আসমান , বেহেস্ত, দোজখ ইত্যাদি এবং আরশে মোয়াল্লা আবলোকন করিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন।শবে মে’রাজ এর নামাজ পড়ার নিয়ম দুই, দুই রাকাত করে কমপক্ষে ১২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে হয়।তবে কেউ চাইলে বিভিন্ন নফল ইবাদাত সহ আর বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করতে পারেন। তবে মনে আবশ্যক যে, এশার নামাজ আদায় করার সময় তিন রাকাত বিতির নামাজ আদায় করা যাবে না। এই তিন রাকাত নামাজ আদায় করবেন সকল নফল নামাজ এর পর।শবে মেরাজ এর নিয়ত অন্যান্য নফল নামাজের মতই।


ছবি - metro.co.uk

১০।শবে বরাতের নামাজ - মহান আল্লাহ তাআলা আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতদের জন্য ইবাদতের বিশেষ কিছু সুবিধা প্রদান করেছেন। এর মধ্যে পাঁচটি রাত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ইবাদতের এই বিশেষ পাঁচটি রাত হলো: জুমার রাত, দুই ঈদের রাত, শবে বরাত বা মুক্তির রাত তথা নিসফ শাবান বা শাবান মাসের মধ্য রাত এবং শবে কদর বা কদরের রাত অর্থাৎ মর্যাদাপূর্ণ রজনী।

মূলত ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত এবং ‘বারাত’ অর্থ সৌভাগ্য। এ দুটি শব্দ নিয়ে ‘শবে বরাত’, অর্থাৎ সৌভাগ্যের রজনী।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে,(ইবনে মাজাহ)। ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নামাজ। মহান আল্লাহ এ রাতে বান্দাদের জন্য তাঁর অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেন। মহিমান্বিত এ রজনীতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বিগত জীবনের সব ভুল-ভ্রান্তি, পাপ-তাপের জন্য গভীর অনুশোচনায় মহান আল্লাহর দরবারে সকাতরে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। নফল ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নফল নামাজ।এই রাতে মুসলমানরা নফল নামাজ, জিকির-আজকার, কোরআন মজিদ তিলাওয়াতের মধ্যদিয়ে বিনিদ্র রাত কাটিয়ে বিনম্র প্রার্থনা করেন ভবিষ্যৎ জীবনে পাপ-পঙ্কিলতা পরিহার করে পরিশুদ্ধ জীবনযাপনের জন্য। একইসঙ্গে মরহুম আত্মীয়-স্বজনসহ চিরবিদায় নেয়া মুসলিম নর-নারীর কবর জিয়ারত করে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন। এ ছাড়া পাড়া-মহল্লার মসজিদগুলোতেও সন্ধ্যার পর থেকেই মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। অনেকে গভীর রাত পর্যন্ত ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থেকে শেষ রাতে সেহরি খেয়ে পরদিন নফল রোজা রাখেন। শাবান মাসের পরেই আসে পবিত্র মাহে রমজান। তাই শবে বরাত মুসলমানদের কাছে রমজানের আগমনী বার্তা বয়ে আনে। এ রাতের নিয়মিত নফল ইবাদতের মধ্যে রয়েছে - বাদ মাগরিব ছয় থেকে বিশ রাকাত আউওয়াবিন নামাজ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ছয় রাকাত নামাজ আদায় করবে; এসবের মাঝে কোনো মন্দ কথা না বলে, তার এই নামাজ ১২ বছরের ইবাদতের সমতুল্য গণ্য হবে। হজরত আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, "যে ব্যক্তি মাগরিবের পর বিশ রাকাত নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন"। (তিরমিজি, মিশকাত, ফয়জুল কালাম, হাদিস - ৪৪৯-৪৫০)। তাছাড়া, এ রাতের শ্রেষ্ঠতম ইবাদত হলো তাহাজ্জুদ নামাজ।এ প্রসংগে মহান আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন, "এবং ভোর রাত্রির কিছু অংশ কুরআন তিলাওয়াত আর নামায কায়েম করার মধ্য দিয়ে জাগ্রত থাকো। এটা তোমার জন্যে অতিরিক্ত দায়িত্ব। অচিরেই তোমার রব তোমাকে ‘প্রশংসিত স্থানে’ প্রতিষ্ঠিত করবেন"।( সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত - ৭৯)। এ ছাড়া সালাতুস তাসবিহ এবং অন্যান্য নফল নামাজ আদায় করা যায়।দু‘রাকাত করে যত বেশী পড়া যায় তত বেশী ছওয়াব। এ নামাজের প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর সূরা ইখলাছ, সূরা ক্বদর, আয়াতুল কুরছী বা সূরা তাকাছুর ইত্যাদি মিলিয়ে পড়া অধিক ছওয়াবের কাজ। এই ভাবে কম্পক্ষে ১২ রাকাত নামাজ আদায় করা উত্তম। এর বেশি যত রাকাত আদায় করা যায় ততই উত্তম।

সতর্কতা:
মনে রাখতে হবে ফরজ নফলের চেয়ে অনেক বড়। শবে বরাতের নামাজ যেহেতু নফল সেহেতু নফল পড়তে পড়তে ফরজ পড়া ভুলে গেলে বা ঘুমের কারণে পড়তে না পারলে কিন্তু সবই শেষ। অর্থাৎ নফল নামাজ পড়ে পড়ে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন আর এই দিকে ফজরের নামাজ পড়তে পারলেন না।এ যেন না হয় এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

১১।শবে কদরের নামাজ - রমজান মাসের শেষ দশ দিনের যেকোনো একটি রাত হল শবে কদর। এ রাতের ফজিলত অন্য যেকোনো রাতের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। বলা যেতে পারে- এ রাত হাজার রাত অপেক্ষা উত্তম। এ রাতে যত বেশি নফল নামাজ আদায় করবেন তত বেশি সওয়াব।

শবে কদরের রাতে যত বেশি পারা যায় নামাজ পড়া, আল কোরআন তেলাওয়াত করা, জিকির ও দোয়া করা ভাল। যেন আল্লাহ্‌ তা'য়ালা আমাদের আগের গুনাহ মাফ করে দেন এবং রহমত ও বরকত দান করেন। এ রাত নামাজসহ বিভিন্ন ইবাদতের মধ্যদিয়ে কাঁটিয়ে দেয়া
উত্তম।
দুই রাকআত করে সালাম ফিরিয়ে ন্যূনতম আট রাকআত থেকে যত সম্ভব পড়া যেতে পারে। সূরা ফাতেহার সাথে জানা যেকোনো সূরা মিলিয়ে পড়লেই চলবে। কিছু ব্যতিক্রম নিয়মে সূরা ফাতেহার সঙ্গে ৩৩ বার সূরা আল কদর, ৩৩ বার ইখলাস পড়লেও অসুবিধার কারণ নেই।“সুবাহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার” এ দোয়া পাঠ করলে অধিক সওয়াব পাওয়া যাবে।


ছবি - thecognate.com

পরিশেষে…নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া মুমিন মুসলমানরে ঈমানের দাবি ও ফরজ ইবাদত। নামাজি ব্যক্তিই হলো সফল। যার সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন প্রিয়নবি। তিনি বলেছেন-"যে ব্যক্তি নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে; কেয়ামতের দিন ওই নামাজ তার জন্য নূর হবে এবং হিসেবের সময় নামাজ তার জন্য দলিল হবে এবং নামাজ তার জন্য নাজাতের কারণ হবে"।

পক্ষান্তরে----যে ব্যক্তি নামাজের প্রতি যত্নবান হবে না- কেয়ামতের দিন নামাজ তার জন্য নূর ও দলিল হবে না। তার জন্য নাজাতের কোনো সনদও থাকবে না। বরং ফেরাউন, হামান ও উবাই ইবনে খালফের সাথে তার হাশর হবে।’

নামাজ যথাযথ আদায়ে আমাদের সকলের যত্নবান হওয়া আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সহিহ তরিকায় সঠিক পদ্ধতিতে নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। ফরজ নামাজ আদায়ের পাশাপাশি বেশী বেশী নফল নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। নামাজকে পরকালের নাজাতের ওসিলা বানিয়ে দিন।‘হে আমাদের রব! আপনি আমাদেরকে এমন কিছু বহন করাবেন না যার সামর্থ আমাদের নেই। আর আপনি আমাদের পাপ মোচন করুন, আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আমাদের প্রতি দয়া করুন, আপনিই আমাদের অভিভাবক। আমিন।

চলবে -

** তথ্যসূত্র - উইকিপিডিয়া এবং আল কোরআন,হাদীস ।
===========================================================
পূর্ববর্তী পোস্ট -

ঈমান ও আমল - ৪ Click This Link
("ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ" - যার শুরুটা কালেমা বা ঈমানে। যা শুধু মুখে বলা নয়, অন্তরে বিশ্বাস ও কর্মে পরিণত করার বিষয়)।
ঈমান ও আমল - ৩ Click This Link
(তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব )।
ঈমান ও আমল - ২ Click This Link
("শুক্রবার - পবিত্র জুমা"- মুসলমানদের জন্য এক মর্যাদা ও ফজিলত পূর্ণ দিন এবং জুমার দিনের কতিপয় আমল )।
ঈমান ও আমল - ১ Click This Link
(যেসব আমলে মানুষের অভাব দূর হয় ও জীবন সুখের )।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:২৪
১৯টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×