লিবিয়ায় আটকে পরা বাংলাদেশিদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের ভূমিকা প্রত্যক্ষ ভাবে এখনো চোখে পরেনি।
কারণ তারা এখনো সরজমিনে পৌছতে পারেন নি, তবে ফিল্ডে নামার প্রোগ্রাম ইতি মধ্যে হাতে নিয়েছেন, তৈরি করেছেন নতুন কন্ট্রল রুম।
এ বিষয়ে হাসান ইকবাল ভাইয়ের পোষ্ট থেকে তার ভাইয়ের আটকে পরার সংবাদে আমার কমেন্টের অনুসরনে আজ সকালে এটিএন বাংলার এক সিনিয়র রিপোর্টারের এসএমএস আসে আমার মোবাইলে।
এসএমএস অনুযায়ি আমি তাকে ফোন করি, তখন তিনি বললেন তিনি লিবিয়ায় আটকে পরা বাংলাদেশিদের নিয়ে রিপোর্ট করতে চান এবং এই বিষয়ে আমার সাহায্য চান।
আমিও তাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিই, এবং বাংলাদেশ দূতাবাসে ফোন দিই।
প্রথমে আমি দূতাবাসের পরিচিত এক অফিসারকে ফোন দিই।
কুশল বিনিময় বাদ।
-প্রশ্নঃ আচ্ছা, লিবিয়ায় আটকে থাকা বাংলাদেশিদের নাকি মিশরে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, কথাটা কি সত্যি:
উততর: হ্যা, মিশর এবং তিউনিসিয়ায় সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
- প্রশ্ন: তো, এই পরিকল্পনা কতদুর অগ্রসর হয়েছে?
উত্তরঃ ইতিমধ্যে প্রায় ৭০০ জন বাংলাদেশি মিশরের বর্ডার 'সাল্লিম'' এসে পৌছেছে। তারা সেখানে একটি অস্থায়ি ক্যাম্পের মাঝে আছে।
-প্রশ্নঃ তাহলে তাদের খাবার দাবার কিংবা সিকিউরিটির কি অবস্থা?
উত্তরঃ ''রেড ক্রিসেন্ট'' ও ''আই ও এম'' আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের দেখভাল করছে, আমরা তাদের সাথে যথা সম্ভব যোগাযোগ রক্ষা করার চেষ্টা করছি।
-প্রশ্নঃ আমাদের দূতাবাসের কেহ কি আছেন সেখানে? থাকলে প্লিজ তার কন্টাক্ট নম্বরাটা দিন, আমি একটু যোগাযোগ করতে চাই। কয়েকজন লোকের খোজ খবর নিতে চাই।
উত্তরঃ না, আমাদের কেহ সেখানে এখন পর্যন্ত পৌছে নি। কাজেই কারো নাম্বার দেয়া যাচ্ছে না।
-- প্রশ্নঃ ত, কবে নাগাদ আমাদের লোকজন মানে আপনারা ঐ অন্চলে পৌছতে পারবেন??
-- আগামিকাল ''হারুনুর রশিদ'' সাহেব কায়রো পৌছবেন, তিনি পৌছলেই আমরা কয়েকজনের একটি টিম ঐ অন্চলে পাঠাবো। আর হারুন সাহেব শুধু মাত্র এই প্রোগ্রাম নিয়েই কায়রো আসছেন।
(হারুন সাহেব হচ্ছেন আমাদের পরিচিত প্রাক্তন কাউন্সেলর)
--- আচ্ছা ভাইজান রাগ করিয়েন না, আসলে অনেক প্রশ্ন করছি আপনাকে, কারণ এটিএন বাংলায় আমাকে একটু ইনফরমেশন নিতে বলেছে তাই একটু বেশিই প্রশ্ন করছি।
-- ও, ------- ---- মিডিয়ার লোকজন জিজ্ঞেস করলে, ------- তুমি এককাজ কর। সরাসরি এম্বাসিডরের সাথেই কথা বল। তাহলে ভাল হবে, তিনি আরো বেশি তথ্য দিতে পারবেন।
এই বলে তিনি আমাকে এ্যাম্বাসিডর সাহেবের প্রাইভেট সেল নাম্বারটা দিলেন।
তার সাথে আরো কিছু কথা হলো, তারপর বিদায় নিয়ে এ্যাম্বাসিডর সাহেবের নিকট ফোন দিলাম।
কুশল বিনিময়ের পর, আমি তাকে প্রথমেই এটিএন বাংলার কথা বললাম।
তারপর-
-- ধারাবাহিক ভাবে উপরের প্রশ্ন গুলো করলাম, প্রায় একই উত্তর পেলাম।
সাথে কিছু অতিরিক্ত প্রশ্ন জিজ্ঞাসিলাম।
প্রশ্নঃ তাহলে আমাদের টিমি কবে নাগাদ ঐ সাল্লিম এলাকায় পৌছতে পারে?
উত্তরঃ আমাদের টিম অলরেডি রাস্তায় আছে। অতিসত্তর সেখানে পৌছে যাবে।
-প্রশ্নঃ আপনাদের জানামতে কতজন বাংলাদেশি মিশরের দিকে আসতে পারে, বা আপনারা কতজনকে এই দিকে আনার পরিকল্পনা করেছেন?
উত্তরঃ আপাতত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের মত এসে পৌছেছে, আমাদের নিকট খবর আছে যে, আরো বেশকিছু বাংলাদেশীদের এদিক নিয়ে আসা হচ্ছে, তবে প্রকৃত সংখ্যা বলা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রশ্নঃ এদেরকে কিভাবে মিশরে প্রবেশ করানো হবে, কারণ এদের তো ভিষা বা কোন কাগজ পত্র নেই?
উত্তরঃ হ্যা, তাদের পাসপোর্ট বা সেই জাতীয় কোন ডকুমেন্ট নেই তাই ভিষা থাকার প্রশ্নই আসে না। তাই আমরা ইজিপ্টের উচ্চ পর্যায়ে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। তাদেরকে রিকোয়েষ্ট করছি বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য, আশাকরি এটা কোন সমস্যা হবে না।
প্রশ্নঃ আচ্ছা, তাদের কি ভাবে রাখা হবে? মানে পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে তারপর কি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে? কারণ তাদের অধিককাংশই গড়িব মানুষ, অনেকর আবার ভিষাও নেই, তাদের একবার লিবিয়ার বাহির করা হলে যদি দ্বিতিয়বার লিবিয়ায় প্রবেশ না করতে পারলে তারা অনেক ক্ষতির সম্মুখিন হবে।
উত্তরঃ তাদের অস্থায়ি ক্যাম্পে রাখা হচ্ছে ও হবে। পরিস্থিতই ঠান্ডা হলেই তাদের আবার আগের স্থানে পৌছে দেবার ব্যাবস্থা করা হবে।
প্রশ্নঃ তাদেরকে কারা এই অন্চলে পৌছিয়ে দিয়েছে?
উত্তরঃ কিছু কিছু কম্পানি নিজস্ব লোকজনদের এই এলাকায় পৌছিয়ে দিচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক বেশ কিছু সংস্থাও বেশ ভাল কাজ করে চলছে।
প্রশ্নঃ এদের থেকে কেহ যদি দেশে ফিরে যেতে চায়, কিন্তু তাদের নিকট কোন কাগজ পত্র নেই সেক্ষেত্রে কি ব্যাবস্থা নেয়া হতে পারে?
উত্তরঃ এক্ষেত্রে কেহ টিকিটের পয়সার ব্যাবস্থা করতে পারলে আমরা তাদের দেশে পাঠানোর ব্যাবস্থা করবো।
উল্টো তার প্রশ্নঃ আচ্ছা আপনি কি একুশে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানে এসেছিলেন?
আমার জবাবঃ না, আমার আসা হয় নি।
মনে হলো তিনি আর বেশি কথা বলতে আরাম বোধ করছেন না।
তাই আমিও আর বেশি সময় নষ্ট করতে চাইলাম না, তাছাড়া দিনটিও ছিল শনিবার ছুটির দিন।
উপসংহারে বললেন, আপনারা ছাত্ররা আছেন, আমরাও আছি। যদি তাদের মিশরে আনা যায় তাহা হলে সবাই মিলেই তাদের দেখভাল করব, না কি বলেন?
জ্বি হা, অবশ্যই। এটা তো আমাদের নৈকিট দা্যিত্ব। আমাদের কোন কাজে আসবে মনে করলে যে কোন সময়েই আমাদের ডাকতে পারেন।
-- প্লিজ শেষ একটি ক্থাঃ
হ্যা, বলুন।
প্রশ্নঃ আমার এক পরিচিত আল-হাসান ফারুক" মিসরাতা, লিবিয়াতে জব করে। সে খুব সমস্যায় আছে। দেশে সবাই অনেক চিন্তায় আছে, তার খুজটা কিভাবে পেতে পারি....
উত্তরঃ সেক্ষেত্রে লিবিয়ায় অবস্থিত আমাদের দুতাবাসের সাথে যোগাযোগ করলে হয়ত খবর পেতে পারেন।
আল্লাহ হাফেজ, থ্যাংকস..ইতি টানলাম।
------------------------------
চলবে......... কাল পরশু আবার ফোন দিব।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৩:২৮