somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসার মহব্বতীয় কায়দা!

১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শিরোণামটা দিরুক্তিদুষ্ট হয়ে গেল কিনা! মোটেই না। শানে নুযূলটা পরেই বলি। বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন একেবারে নতুন। ভর্তির পর প্রথম দিকে নাভিশ্বাস উঠেছিল। এই সব বড় বড় লেকচার খেয়ালি মনে হয় আবার ‘ঢাবি’ শব্দ মাথায় আসতেই ভয়ানক সিরিয়াস হয়ে যাওয়া-এর মধ্যেই ১ম সেমিস্টার ফাইনাল পরিক্ষা এসে হাজির। এখনও কেন জানি মনে হয় সেমিস্টারে ‘কী কী’ পড়ব- তা পড়েছি; আদত পড়া আর হয়ে উঠে নি আসল পড়াই। ফলস্বরুপ ইনকোর্স আর মিডটার্মগুলোতে ভয়াবহ পারফরম্যান্স। শেষের দিক থেকে প্রথম আরকি!!
তবে তীব্রতা দেখা গেল ফাইনাল পরিক্ষার দিন। কলাভবনের ৩ নম্বর পরিক্ষার হলে শতাধিক লোকপ্রশাসন পড়ুয়ার সরব উপস্থিতি। ড্রেস আপ, সাজসজ্জায় ভাটা পড়েনি কারোরই। প্রস্তুতি বলতে আমারও কম ছিল না। রাজনৈতিক স্টেজে দাঁড়ানোর উপযোগী একখান ডোরাকাটা পাঞ্জাবী গায়ে জড়িয়ে আছে। তবে এ খোসমেজাজ বেশিক্ষণ টেকিনি পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে। ফাইনাল পরিক্ষার এডমিট কার্ডই যে নেয়া হয় নি অফিস থেকে! এখন কি হবে? শুনেছি ফাইনাল জাতীয় পরিক্ষায় ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র স্যাররা আসেন; গার্ড দেন। সে হিসেবে সবার কাছে রুক্ষ হিসেবে পরিচিত,কেতারদুরস্ত মহাব্বত স্যার আসার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িেেয় দেয়া যায় না। স্যার কেমন রাগি তা এক ক্লাসের অভিজ্ঞতায় বুঝেছি; তবে ঐ বোঝাও নাকি ফরমালিনযুক্ত; -জানা গেল সালাহউদ্দিন স্যারের কথায়। একক্লাসে তার আসল তেজ বোঝা অসম্ভব । মহাব্বত স্যারের মুখোমোখি প্রথম হই বিভাগে ভর্তির দিন । ভাইভার নিমিত্তে সবাই করিডরে অপেক্ষমাণ।বিভাগে সদ্য ভর্তি হতে আসা ‘ইসরাফিল’ নামের এক ছাত্র হাল ফ্যাশন হিসেবে শীতকালীন মাফলারকে ‘টাই’র সুরতে গলায় ঝুলিয়েছে। অনেকেটা অমিতব্বচ্ছনীয় কায়দায়। কোত্থেকে বেড়িয়ে স্যার হরহর করে তার দিকে এগিয়ে গেলেন। খামছে ধরলেন তার গলাবন্ধনী। একটানে গলা থেকে মাফলারকে বিচ্ছিন করতে চাইলেন।
‘খোল এটা, বেয়াদব কোথাকার!
সঙ্গে থাকা বাবার সামনেই অপমানিত হল নিরিহ ছেলেটি। তবে ভয়ানক সে মেজাজের মাজেজা আমি আবিষ্কার করেছি।
ফরমাল হওয়ার মূল উপজীব্য ’টাই’ পুচকে মাফলারের কাছে হেরে যাবে- এ তো অসম্ভব। তাই মাফলারের উপর স্যারের অনাহুত আক্রমন যেন টাই এর ঐতিহ্য ধরে রাখার অদম্য প্রয়াস। অবশ্য মাস দু’একমােসর মধ্যে ইত্যকার রসায়ণ যুক্ত হয়ে ইসরাফিল নিজেকে মাইগরেট করেছে বিলেতে (ইংরেজি বিভাগে)।
।।
ঘড়িরকাটা মেনে পরিক্ষা শুরু হল ৯ টায়। অফিস খোলতে ১ ঘণ্টা বাকী। মমতাজ ম্যাম রণহুঙ্কার দিলেন এডমিট- রোল না আসা পর্যন্ত পরিক্ষা নয়। আমার দলে আরো ৩ জন। ইমু, আফিয়া আর লায়লা। এডমিট আসা পর্যন্ত আমাদের বসে থাকতে বলা হল। অবস্থান সবার থেকে বিচ্ছিন একটি কলামে। চারজন অলস সময় কাটাচ্ছি। এরই মধ্যে ‘লেখা যাবে না’ - শর্তে খাতা সরবরাহ করা হল। লেখার সুযোগই নেই-কারণ প্রশ্ন থেকে আমরা যোযন দূরে। ইস ! সবাই কি স্বার্থপর । হরহর করে নিজেদের পরিক্ষা দিয়ে চলছে আমাদের ৪ জনের ব্যাপারে থোরাই কেয়ার। আরে বেটা কলাম দূরে তো কি হয়েছে- চুপিসারে একটা প্রশ্ন এদিকে চালান করলেই পারিস। এসব ভেবে আর কি হবে। অঘটন যা ঘটার তা এরই মধ্যে ঘটে গেছে।

সবার চক্ষু চরক গাছ করে ডাক্তারী একটা ব্যাগ হাতে ঝুলিয়ে ‘দ্য কিং অব সিরসিটি, মি. মহাব্বত খান পরিক্ষার হলে। আর যায় কোথায়। এবার ঠ্যালা সামলা। দেরি না করে মহাব্বত স্যারকে আমাদের বিষয়ে অনুযোগ কররলেন মমতাজ ম্যাম। স্যারের স্বভাবসুলব ভঙি। যাও, বেড়িয়ে যাও । পরিক্ষা দিতে বলছে ক্যা? সারা দিন কার সাথে কাটাইছ যে এডমিট নিতে পার নি ...ডট ডট ডেস ডেস। পরিক্ষা আর দেয়া লাগবে না- বাকী ৩ জনের অবস্থা অনুমেয়। তবে কি জানি আমার কাছে স্যারের এসব তর্জন গর্জন স্বাভাবিক লাগছিল। স্যারের মুখের মত মনটা অতটা ভয়ানক মনে হচ্ছিল না। স্যারের আচরণও অস্বাভাবিক ভাবে আমার বিশ্বাসকে অনুসরণ করছিল। গত চল্লিশ বছর ধরে বদরাগী স্বীকৃতি পাওয়া মানুষটি ক্রমেই আমাদের ব্যপারে সহানুভ’তিশীল হতে লাগলেন। স্যারের ইঙিতেই বোধ হয় অফিস স্টাফ আলতাফ সাহেব আমাদের রোল নিয়ে হাজির। অথচ ১০ টা বাঝতে তখনও আধ ঘণ্টা বাকী! স্যার আসার কারণেই আধা ঘণ্টা বেশী সময় পরিক্ষা দিতে পারলাম। অবাক বিষয় , যে স্যার না আসার জন্য সবাই মনে মনে কলেমা জপছিলাম; সেই তিনিই কিনা হয়ে এলেন আশির্বাদ হয়ে।
অবাক পথিবী; সত্যি অবাক তাকিয়ে রয়, রেগে মেগে সব করে খুন ; তবু মায়া কমিবার নয়।
।।
মহাব্বত স্যার আসার আগ পর্যন্ত খাতা সমেত বসে ছিলাম। প্রশ্ন যেহেতু দেয়া হল না , আমি ভাবছি কী করা যায়। আরো তো পাক্কা ১ ঘণ্টা বসে থাকতে হবে। এমন সময় মাথায় আসল দুষ্ট বুদ্ধি । আচ্চা মমতাজ ম্যম তো দুটে প্রশ্ন গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন আসতে পারে। আসুক, না আসুক ওগুলোই লেখা শুরু করি। বাস! দেদারছে স্যারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে লিখে ফেল্লাম ১ টা প্রশ্ন । অজানা শঙ্কা- আসলে প্রশ্নটা কমন পড়েছে তো । প্রশ্ন পাওয়ার পর আল্লাহ আল্লাহ করছি যেন- যে উত্তর লেখেছি সেটা প্রশ্ন হয়। ইউরেকা! কমন! জীবনে অনেক প্রশ্ন কমন ফেলেছি; লিখেছি উত্তর। এটা বোধ হয় ওয়ান-এন-অনলি যার উত্তর কমন পড়েছে সেই প্রশ্নে
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×