বাবার চাকরীর সুবাদে তখন আমরা ছিলাম খুলনায়। খুলনার খান জাহান আলী রোডে আমাদের বাসা ছিল। আমি যখনকার কথা বলছি তখন এমন ডেভলাপারদের অত্যাচারও ছিল না তাই তেমন হাইরাইজ বিল্ডিং ও ছিল না আশেপাশে। আমাদের বিল্ডিং ছিল ৬ তালা এবং এর চারপাশের ত্রিসীমানায় তেমন কোন বিল্ডিং ছিল না। আমরা ছিলাম তিনতালায়। বিল্ডিং এর ডিজাইন এমন ছিল যে জানালার সানশেড ও ছিল না কোন পাশেই। এমন কি বড় কোন গাছও ছিল না ধারে কাছে। বাসার সামনে ও একপাশে একটা বড় রাস্তা আর পিছনে খোলা একটা মাঠ আর আরেক পাশে একটা বস্তি। এই ছিল আমাদের বাড়ির বর্ননা।
তিন বেডরুমের বাসায় আমরা বাকিরা এক রুমে থাকলেও আমার বড় বোন একাই একটা রুমে থাকতো। বাসার ডিজাইন এমন ছিল যে দুই বেডরুমের মাঝে বাথরুম। এবং বাথরুমের সামনে ছোট একটি ড্রেসিং রুম। বাকি ড্রইং, ডাইনিং, রান্নাঘর ও সার্ভেন্টেস্ বাথরুম অন্য পাশে। যাই হোক, আমার বড় বোন ছিল তখন মেট্রিক পরীক্ষার্থী। ও ছিল মারাত্বক পড়ুয়া (এখনো পড়ে )। বরাবরেই কাক ডাকা ভোরে উঠে পড়তে বসে। সেদিনও যথারীতি ঘুম থেকে উঠেই বিশাল এক চিৎকার। আমরা সবাই হুড়মুড় করে উঠে বসি, বাবা মা ছুটে আসেন তাদের রুম থেকে। সবাই একযোগে চিৎকার...।
ঘটনা কি? দৈাড়ে লাইট জ্বালিয়ে দেখা গেল পুরো বাসার এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত পানিতে সয়লাব। প্রতিটা রুমেই পানিতে ভর্তি চারপাশ। সারা ঘরের জুতো সেন্ডল, বই খাতা, কাপড় চোপড় যা নীচে ছিল সব ভাসছে চারপাশে। যেহেতু মেইন দরজা বা বারান্দার সাথে রুমের একটু উঁচু ডিভাইডার ছিল তাই পানি বাসা পর্যন্তই আটকে ছিল। বাবা দৈাড়ে গেলেন বাথরুমের কল চেক করতে। নাহ্ সব কল বন্ধ। এমন কি বাথরুমের কলের নীচে আধা বালতি পানি পড়ে আছে। আর সেদিন চৈত্রের দুপুরে বৃষ্টির কোন লক্ষনই ছিল না তার আগে বা পরে।
ঘরের জানালা সবই বন্ধ ছিল। এমন নয় যে কেউ জানালার সানসেডে দাঁড়িয়ে পানি দিয়েছে। কারন আগেই বলেছি কোন সানসেড সেখানে ছিল না। আর পাইপ টেনে মই বেয়ে তিনতালা পর্যন্ত পানি দেয়াও সম্ভব নয় কোনভাবেই। আর এমন কাজ করার মতো সেরকম কেউ ছিল বলেও মনে পড়ে না।
যাইহোক, এ ঘটনা নিয়ে আমরা প্রায় কথা বলি। কিন্তু এখনো এর কোন সমাধান বের করতে পারিনি।
আজ এ পর্যন্ত। সময়ের টানাটানিতে বাকিভুতদেরকে আনতে পারিনি। আশা করি নেক্সট তাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো। বিশেষ করে কক্সবাজার থাকাকালীন রাত দুপুরে কাচাঁ মাছ খেতে দেখা সেই বোরকা পড়া মহিলা, যাকে আমি সহ অনেকেই দেখেছে। সে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।
আমার আগের ভুতের গল্প: ইহা একটি ভুতের গল্প হলেও হতে পারে.........
সবাই ভালো থাকুন আর বেশী করে ভয় পান। কাভা ভাইয়ের মতো বলবো না, শান্তিতে যে একটু ভয় পাবো তাও হতে দিবে না অনেকে ...........
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৬