আমরা ঠিক দাঁড়িয়ে আছি জীবন মৃত্যুর মাঝামাঝি। ইচ্ছে করলেই যেকোন একদিকে ঝুঁকতে পারি, কিভাবে? ধরুন আপনি মৃত্যুর দিকে ঝুঁকতে চান! ওকে নো প্রবলেম, নীচের কিছু কাজ করলেই আপনি সোজা সে দরজার সন্ধান পেয়ে যাবেন। যদি না একান্ত আপনার পিছনে হোমড়া চোমড়া গোছের নিকট আত্বীয় থাকে। যারা আপনাকে নিয়ে যমে মানুষের টানাটানিতে ফিরিয়ে আনার মতো যথেস্ট চেস্টা করার ক্ষমতা রাখে!! যাক লিস্টের কাজ গুলোর দিকে নজর দেই,
১) সামনে ঈদ, আর ঈদ মানেই আনন্দ। আর আনন্দ থেকে কোনভাবেই আমাকে আপনাকে পরিবারকে বঞ্চিত করা ঠিক হবে না। তাই যেভাবেই পারেন ঠেলাঠেলি করে, গুতোগুতি করে মার্কেটে ছুটবেন। তিতলি শাড়ি, পাখী কামিজ, সাথে ম্যাচিং ব্লাউজ, গয়না, জুতা.... গুলশান, বনানী, নিউমার্কেট, গাউসিয়া আপনাকে উদ্বাত্ত আহবান জানাচ্ছে। সোস্যাল ডিসটেন্স এর ক্ষ্যাতা পুড়ি। আগে সাজগোজ, ঈদ আনন্দ, সেল্ফি, ফেসবুক....... তারপর চিন্তা করা যাবে ভাইরাস মাইরাস নিয়া।
২) রোজা চলছে, ভালো মন্দ কিছু খেতে ইচ্ছে করেই। তাই ভালো ইফতারের খোঁজে যাওয়া তেমন অন্যায় নয়। আর দু' চারজনকে বাসায় ডেকে ইফতার পার্টি এ আর এমন কি। বিশাল ইফতার পার্টিতো করছি না বা যোগ দিচ্ছি না গরীবের সামান্য এ আয়োজন।
৩) ভারতে লাখে লাখে আক্রান্ত হচ্ছে, গণহারে মরছে মানুষ। চিতায় জায়গা হচ্ছে না...। আরে তাতে কি, ওইটা ভারতে সমস্যা। আমাদের দেশেতো আর না। তাই নিশ্চিন্তে ঘোরা ফেরা করায়ই যায়।
৪) নো মাস্ক...। মাস্ক আবার কি? মার্কেটে যেয়ে সেল্ফি তুলতে হবে!! এসব মাস্ক টাস্ক পড়লে সেল্ফি তুলুম কেমনে!! আর আমারতো করোনা নাই, আশে পাশেও তো মনে হয় কারো নাই। তাই এতো সাবধানের কি আছে!!!
এবার আসি বিপরীতে দিকে, যারা ভাবেন জীবনের দিকেই আমাদের ঝোঁকা উচিত। তাদের ভাবনার লিস্টের দিকে না হয় একটু তাকাই।
১) এ এক জীবনে রোজা ঈদ অনেকবারই আসবে যদি বেচেঁ থাকি। তাই মাত্রতো একটা রোজা কিংবা ঈদ, একটু না হয় সাধারনভাবেই কাটালাম। না হয় পুরোনো কাপড় পড়েই এবারের ঈদটা করলাম, বাচ্চাদেরকে তাই বোঝালাম। সাধারন কিছু খেয়েই না হয় রোজাটা করলাম। কত মানুষইতো না খেয়ে আছে এ লকডাউনে কাজের অভাবে। আমরা যাদের দু'বেলা খাবারের চিন্তা করতে হয় না তারা না হয় কিছুদিন এ বিলাশিতা নাই বা করলাম। অনেক অনেক আনন্দ করার সুযোগ পাবো যদি বেচেঁ থাকি।
২) এটি ভাইরাস, চোখে দেখার কোনই উপায় নেই। আমি আপনি জানি না কে এটি বহন করছে। তাই প্রতিটি মূহুর্তেই সাবধান হতে হবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাবো না। যদি যেতেই হয় তাহলে মাস্ক পড়বো, ডিসটেন্স মেইনটেইন করবো, ভীড় এড়িয়ে চলবো, বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুবো। বাইরে থেকে এসেই কাপড় বদলিয়ে তা ধুতে দিবো।
৩) ভারতে লাখে লাখে আক্রান্ত হচ্ছে সামান্য সচেতনতার অভাবে। এবং বিশাল বর্ডারে এটি যেকোন সময়েই দেশে আসতে পারে। তাই সাবধান হতে হবে আরো বেশী। বর্ডার আমরা বন্ধ করেছি ১৪ দিনের জন্য কিন্তু পণ্যবাহী যানবাহন চলতে পারবে। তাই ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
এখন সিদ্ধান্ত আপনার! মুত্যুর দিকে ঝুঁকবেন নাকি জীবনের দিকে ঝুঁকবেন। আরো মনে রাখবেন আমরা নিতান্তই গরীব রাস্ট্র, সব কিছুর অঢেল সাপ্লাই নেই আমাদের। হাসপাতাল, ডাক্তার, নার্স, অক্সিজেন, আইসিইউ, ওষুধ..... সব কিছুই লিমিটেড। তাই ওই যে বল্লাম যাদের পিছনে একান্ত হোমড়া চোমড়া গোছের নিকট আত্বীয় থাকে ও অঢেল টাকা প্রয়োজনে ঢালতে পারবে তারাই পাবে সে লিমিটেড সুযোগ সুবিধা। এটাই কিন্তু বাস্তবতা, এটাই কিন্তু সরল সত্য।
তাই আসুন, একটু না হয় বাচাঁর চেস্টা করি ও অপরকে বাঁচতে সাহায্য করি!
সবাই ভালো থাকুন ও সুস্থ্য থাকুন।
নীচের ভারতে বর্তমান অবস্থার দু'টি ছবি শেয়ার করলাম আলজাজিরা থেকে। ও গাউছিয়ার একটা ছবি শেয়ার করলাম।
খবর সূত্র: Click This Link
https://www.aljazeera.com/gallery/2021/4/26/mass-funeral-pyres-reflect-indias-covid-crisis?fbclid=IwAR1U5xDw2xfSpxRfL7nMr1eMjQtGReloUq3axMZ7bgZpdcSHNOE8PAzL9fQ
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৮:৪৫