somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

আমার বই "জীবন ও জীবিকার গল্প".......... এবং তার পরবর্তী প্যাচাল?

০৩ রা আগস্ট, ২০২১ সকাল ৯:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এবার বইমেলা সুপার ফ্লপ! এ ফ্লপের মাঝেই আমার বই নিয়া খুব হাউকাউ করলাম ক'দিন। তারপর একটু সময় চোখ বন্ধ কইরা টাইম পার করলাম সবার রিয়েকশান দেখার জন্য। কারন যারা গাঁটের পয়সা খরচ কইরা বইটা কিনছেন তারা কি আমারে গালি দিসেন নাকি হাসি দিসেন তা দেখতে চাইলাম। এবং রেজাল্ট যা পাইলাম তাতে আমি কিন্তু বেশ খুশি।

যাক্, এবার আমি আসল কথায়। আমি বই বের করার পর বলেছিলাম বইটি নিয়ে বিশ্লেষন দিবো। কিন্তু একজন ফুলটাইম চাকরীজীবি, ফুলটাইম কাজের বুয়া, কাম বাজার সরকার, কাম বেবিসিটার, কাম সুইপার, কাম মালী, কাম ক্লিনার হবার কারনে ফুরসত পাচ্ছিলাম না। তারপরও আসলাম অডিট রিপোর্ট নিয়ে :P

সম্পদ এর হিসাব:

আমি ব্যাক্তিগতভাবে অসম্ভব আনন্দিত যে যেরকম আশা করেছি তারচেয়েও বেশী আপনাদের কাছ থেকে সাড়া পেয়েছি। যেভাবে ভালোবেসে আমাকে সাদরে গ্রহন করেছেন সবাই তা এক কথায় আমি অভিভুত। অন্তত আমার পরিচিত প্রায় প্রত্যেকেই আমার আহবানে সাড়া দিয়েছেন, তাদের ভালোলাগার কথা জানিয়েছেন। একজন নতুন লেখক হিসেবে এর চেয়ে বড় সম্পদ আর কি হতে পারে?

কিন্তু যদি সত্য বলি তাহলে বলবো, আমি মোটেও স্যাটিসফাইড না বইটি নিয়ে। যেভাবে লিখতে চেয়েছিলাম সেভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারিনি। গল্পের সংখ্যা, বইয়ের পৃষ্ঠার সংখ্যা, শব্দের সংখ্যার মারপ্যাচে অনেক কিছুই কাঁটছাট দিতে হয়েছে। কোন কোন গল্পকে টেনে ছোট করতে হয়েছে। যে সব থিম নিয়ে শুরু করেছিলাম তাতে গল্পগুলো আরো ডিটেইলস হলে ভালো হতো। কিন্তু ধুম করে শেষ করে দিতে হয়েছে। তবে এটা সত্য যে আমি সবসময়ই খুব বেশী সমাজ নিয়ে ভাবি, আমার চোখে যা অসঙ্গতি তা সবার সাথে আলোচনার চেস্টা করি। সে হিসেবে বইটি ও আমার চিন্তা-চেতনার বাইরে নয়।

প্রতিশ্রতির দায়:

বইটি থেকে সংগ্রহিত অর্থ দিয়ে কিছু করার প্রতিশ্রতি ছিল। কিন্তু দেশের বাইরে থাকার কারনে এ দায়িত্ব দায়িত্বশীল একজনকে দেবার চিন্তা থেকেই জাদিদ ভাই এর ঘাড়ে এ দায়িত্ব তুলে দিয়েছি। এর পিছনে ব্যাখ্যা হলো আমার বইটির সাথে আপাদমস্তক ব্লগের মানুষজনই বলতে গেলে জড়িত। যার কারনে ব্লগের গার্জিয়ান হিসেবে জাদিদ ভাইকে এ দায়িত্ব দিয়ে নিজে ভারমুক্ত হয়েছি। উনিই যথাসময়ে সবাইকে জানাবেন এ নিয়ে।

গল্পের পিছনের গল্প:

প্রথমেই আমি জানিয়েছিলাম যে প্রতিটি গল্পই সত্য ঘটনার উপর ভিত্তি করে এবং সময় করে পিছনের গল্পগুলো নিয়ে আসবো। তাই আসলাম এবার তা নিয়ে। তাহলে শুনুন আমার বকবক।

পার্ভাট: বইয়ের প্রথম গল্প। গল্পটি পড়ে অনেকেই দ্বিধায় পড়েছেন। কারন সমাজের এ কুৎসিত দিকটার দিকে সবাই চেস্টা করে চোখ বন্ধ রাখতে। তবে আমাদের দেশের মতো সমাজে এরকম ঘটনা হয়তো কম কিন্তু পরিবারহীন পশ্চিমা কালচারে এ ধরনের ঘটনা প্রচুর। গল্পের ব্রকলিন মেয়েটির সাক্ষাতকার দেখেছিলাম একটি স্থানীয় টিভি চ্যানেলে। সে চক্রটি যখন পুলিশের হাতে ধরা পরে তখন ব্রকলিনকে স্যোসাল কাস্টডিতে নেয়া হয়। সেখানেই এক রিপোর্টার তার উপর একটি ডকুমেন্টারী তৈরী করে। সে সাক্ষাতকারে মেয়েটির অঝোরে কান্না আমার হ্ণদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল।

দ্বিচারিণী: এটি একটি প্রতারণার গল্প, প্রেম ভালোবাসার একজন আরেকজনকে ঠকানোর গল্প। কখনো কখনো বাস্তব যেন গল্পকেও হার মানায়। একটু চোখ মেললেই এমন ঘটনা আপনিও হয়তো দেখতে পাবেন যা আমিও দেখেছি।

আশ্রয়: এটি আমার প্রবাসী জীবনের চারপাশে থাকা বৃদ্ধদের গল্প। এ গল্পে রিটায়রমেন্টের পর পশ্চিমা বৃদ্ধদের জীবন সম্পর্কে ধারনা দিতে চেয়েছি পাঠকদের। আর সে সাথে আমাদের দেশের অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদেরকে কিছু ম্যাসেজ দিতে চেয়েছি। আমি খুব চাই এ দেশের বাবা-মায়েরা একদিন এমন করেই নিজেদের ভালো খুঁজে নিবে, নিজেদের স্বার্থ দেখবে।

একজন হাফ মানুষের গল্প: দেশের একজন সাধারন কেরানির গল্প। একটু তাকালেই এরকম চরিত্র আমাদের অফিস পাড়ায় দেখতে পাবেন। এ মানুষগুলো মনে করে পরিশ্রমই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। কিন্তু এ বোকাসোকা মানুষগুলো জানে না কিভাবে সবাই ব্যবহার করে তাদের। তার উদাহরন দিতে চেয়েছি আমি এ গল্পে।

কনক্লিক্ট: এ গল্পটি আমি বিদেশে বড় হওয়া ২য় প্রজন্মকে নিয়ে লিখেছি। খুব কাছ থেকে তাদের দ্বিধা দ্বন্দে বেড়ে উঠা দেখেছি। আর খুব কাছ থেকে তাদের কষ্টটা দেখেছি। তারা না পারছে বাঙ্গালী হতে না পারে পুরোপুরি বিদেশী কালচারে নিজেদেরকে সপে দিতে। এমন দোটানার মাঝে কাটে এ প্রজন্মের।

জলে ভাসা পদ্ম: এ গল্পটা আমার আপনার দেখা অসংখ্য সংসার জীবনের গল্প, খুব কাছ থেকে দেখা এমন সংগ্রামরত একটি মেয়ের গল্প।

একটি প্রোফাইল পিক এবং একজন সরীসৃপ: খুব কমন থিমের উপর লিখা একটি গল্প। অনলাইনে প্রেমে নামে প্রতারনার ফাঁদে পা দেবার গল্প। যা হয়তো আপনিও জানেন কিংবা নিজেই দেখেছেন।

একজন জরিনা বা কোন এক আকবরের স্ত্রী: এটি আমার খুব প্রিয় একটি গল্প। অনেক পরিশ্রম করে লিখাটা লিখেছিলাম এক সময়। যখন গার্মেন্টস সেক্টরে একের পর এক আগুন লাগার ঘটনা ঘটছিল তখনকার সময়ের এর উপর ভিত্তি করেই গল্পের থিম।

এক টুকরো ভালোবাসা: গল্পটা রোমেলা আর আশিক নামের প্রবাসী দম্পতির। যা আরো আট দশটা প্রবাসী পরিবারের মতই তারা ভিন্ন পরিবেশে টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যাস্ত। কিন্তু এ লড়াই সম্পর্কে তেমন কোন ধারনাই নাই আমাদের দেশে থাকা অনেকেরই। খুব কাছ থেকে দেখা এমন কিছু মানুষের গল্প বলার চেস্টা করেছি। !

যোদ্ধা: এক প্রতিবাদী নারীর গল্প। আমার জীবনে এমন নারীর দেখা পেয়েছি অসংখ্য কিন্তু এ সংগ্রামরত মেয়েগুলো খুব কমই সফল হয়েছে অফিস নামক পুরুষশাসিত যাঁতাকলে।

মানুষ কিংবা অমানুষ: অবসর নেওয়া উচ্চমধ্যবিত্ত তোফাজ্জল সাহেবের গল্প যার ছেলেরা দেশের বাইরে স্যাটেলড্। বিপদে আপদে আপনজনকে কাছে না পাওয়া অসহায় বাবা মায়েদের অবস্থা তুলে ধরার চেস্টা করেছি এ গল্পে। এমন পরিবারের সংখ্যা এখন বেড়েই চলছে দেশে।

সিদ্ধান্ত: দিনের পর দিন অত্যাচার সহ্য করা সুমনা নামের এক স্ত্রীর গল্প। এমন সুমনারা জীবনভর সহ্য করে স্বামীর অত্যাচার কিন্তু খুব কমই পারে সমাজ সংসার এর শিকল ভেঙ্গে এর থেকে বের হতে। এমন চরিত্রের দেখা আমি পেয়েছি অসংখ্য এবং একটু চোখ মেললে আপনিও পাবেন এমন কাছের কাউকে।

পিশাচ: এ গল্পটিি লিখার পর চোখ বন্ধ করে অনেকক্ষন বসেছিলাম। নিজের অজান্তেই চোখ ভিজে উঠেছিল রাশিদা নামের মেয়েটির কথা মনে করে। বাস্তবতা কখনো কখনো গল্পকেও হার মানায়।

পাত্রী চাই: এ গল্পটিতে আমি ছেলেদের একটা অংশের চাওয়া পাওয়ার চরিত্র ফুটিয়ে তোলার চেস্টা করেছি। যারা বিয়ে করার সময় রুপে গুনে চরিত্রে শিক্ষায় চলনে পোষাকে ও জমিদারের বংশের মেয়েদের খোঁজেন। কিন্তু আয়নায় নিজের চেহারা দেখে না ভুলেও।

এই হলো আমার লিখা ১৪ টি গল্পের বিশ্লেষন। আবারো অসংখ্য ধন্যবাদ সবসময়ই সাথে থাকার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:০২
২৯টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা শহর ইতিমধ্যে পচে গেছে।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



স্থান: গুলিস্থান, ঢাকা।

ঢাকার মধ্যে গুলিস্থান কোন লেভেলের নোংড়া সেটার বিবরন আপনাদের দেয়া লাগবে না। সেটা আপনারা জানেন। যেখানে সেখানে প্রসাবের গন্ধ। কোথাও কোথাও গু/পায়খানার গন্ধ। ড্রেন থেকে আসছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×