somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

মুভি রিভিউ: ডার্লিংস (আমার আকাজের কাজ..........)

২৯ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দেখলাম নেটফ্লিক্সে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত গৈারী খান ও আলিয়া ভাট প্রযোজিত+অভিনিত "ডার্লিংস" মুভিটি। ডমিস্টিক ভায়োলেন্সের মতো সিরিয়াস বিষয়ের উপর মুভিটি হলেও এতে হার্ড কমেডির তকমা লাগানো আছে। যার কারনে এতো স্পর্শকাতর বিষয়টাকে মোটামুটি সবাই মিলে-ঝুলে ছাগলামীর পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আর বিরক্তিটাকে আরো উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে গেছে আলিয়া ভাট এর অভিনয়। স্বামীর মাইরধরে যে ভাইটামিন আছে আর তা যে অত্যন্ত আনন্দের বিষয় আলিয়া ভাট এর অভিনয় দেখে এ প্রথম জানলাম। আলিয়ার অভিনয় দেখে সারাক্ষনই মনে হচ্ছিল সে হানিমুন কাটাচ্ছে, অত্যাচোরে জর্জরিত কোন বউ না। এ ছবি দেখে আরো অনেক জ্ঞান লাভ করলাম যেমন "স্বামী" মানেই অত্যাচারী আর তাকে খুন করা তেমন কোন কঠিন কাজ না। আর খুন করে ধরা পরারও তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। বদরুন্নেসা (আলিয়া) ও তার মা শামসুন্নেসা (শেফালি) উভয়ই একই কাজ করে আইন-কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে।

"ডমিস্টিক ভায়োলেন্স" এ শব্দটা বলতে গেলে আমাদের উপমহাদেশের মানুষের কাছে শুধুমাত্র বউ পেটানোর মাঝেই সীমাবদ্ধ। আর এ নিয়ে তেমন কোন বিশেষ উচ্চবাচ্য হয় না। কারন স্ত্রীকে মৃদু প্রহারে বৈধতা যেমন আছে, তেমনি স্বামী প্রবরের রাগ, দু:খ, হতাশা, বসের ঝাঁড়ি, বাড়িওয়ালার গুতানী, রিক্সাওয়ার মুখ ঝাঁমটা, সিএনজি ওয়ালার ভাব........... সব কিছুর রাগ বউ এর প্রয়োগের মাধ্যমে বউকে উত্তম-মধ্যম দেয়াটাও ভাত খাওয়ার মতই খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার আমাদের এক শ্রেনীর কাছে। দাদার দাদার দাদা তার বউ এর ঝাঁড়ছে, বাপে মা'রে পিটাইছে, চাচা, মামা চাচা ফুফা সবাই বউ পিটায়ে ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করছে। এ বিষয়টা কিছুটা হলেও ছবিতে ফুটে ইঠেছে।

"ডমিস্টিক ভায়োলেন্স" শব্দটা শুধুমাত্র পেটাপিটির মাঝে যে সীমাবদ্ধ নেই তা অনেকেই বলতে গেলে বুঝে না। স্ত্রীকে যথাযথ সন্মান না করা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না থাকা, মানসিক অত্যাচার করা, এবিউসিব ভাষা বা গালাগালি করা, বাক স্বাধীনতা না থাকা, মানবিক সম্পর্ক গড়ে না তোলা......... এরকম অসংখ্য বিষয় হতে পারে। তবে ফিজিক্যাল টর্চার বা শারিরীকভাবে মারধর সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিষয়। আমাদের সমাজ যতক্ষন পর্যন্ত মারধর এর সর্বোচ্চ পর্যায়ে না পৈাছে ততক্ষন পর্যন্ত এটাকে "ডমিস্টিক ভায়োলেন্স" বলতে নারাজ। এমন কি এ মারধরের খবর জানার পরও এটাকে এডজাস্ট করা বা মেনে নেয়ার জন্য পরিবার সমাজ রাস্ট্র সবাই পরামর্শ দেয়। কেউ একটু ভেবে দেখে না রক্ত মাংসে গড়া এ মেয়েটিরও কষ্ট আছে, দু:খ আছে, ভালো লাগা আছে, মারলে ব্যাথা লাগে। এসব নিয়ে তারা চিন্তা করে না কারন মেয়েদেরকে মানুষ হিসেবেই তারা ভাবতে পারে না, এরাতো চাবি দেয়া পুতুল কিংবা দাস অথবা শুধুই "মেয়ে মানুষ"।

অথচ এ পুরুষমানুষগুলো বুঝে না, তার পাশে থাকা এ নারীটি তার জীবন দিয়ে এ ভদ্রলোকের সংসার রক্ষা করছে, সন্তান জন্ম দিচ্ছে, তাদের লালন পালন করছে, সে অসুস্থ্য হলে তার মাথার কাছে বসে থাকছে, বিপদে-আপদে তার পাশে থাকছে। সামান্য একটু ভালোবাসা, একটু ভালো বিহেব, একটু মানবিক সম্পর্ক তাকে দিতে পারে সুন্দর একটি পারিবারিক জীবন, রাখতে পারে চমৎকার একটি পরিবেশ সন্তানদের জন্য। কিন্তু না..... এদের সুখে থাকতে ভুতে কিলায়!!!!

আবারো বলছি, সব পুরুষদেরকে নিয়ে কথা বলছি না। আমি অমানুষদেরকে নিয়ে কথা বলছি। যাদের হাত পা মাথা সবই আছে কিন্তু তারা মানুষরুপী পশু। আর শুধুমাত্র নারীদের এবিউস নিয়ে কথা বলছি, কারন "ডালিংস" ছবি প্রসঙ্গে আলোচনা আসছে। এর বিপরীত চিত্রও আছে। পুরুষ এবিউজ ও কম নয় এ সমাজে। তা নিয়ে অবশ্যই লিখবো।


সোহানী
আগষ্ট ২০২২
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৩৩
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×