somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

বর্তমানের কানাডার মাইগ্রেশান নিয়ে একটা সাবধানতা পোস্ট

১৬ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ৮:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নিহত শ্রীলংকান পরিবার

কানাডার মাইগ্রেশান নিয়ে প্রায় ১৫টা পর্ব লিখেছিলাম। ইচ্ছে ছিল একটা বই বের করার সবগুলো নিয়ে। কিন্তু এতো ব্যাস্ত জীবনে আর সময় করে উঠতে পারিনি। তবে আবারো বলে রাখি আমি লেখালেখি করি তা ট্যাকা পয়সা আয়ের জন্য না।

তাহলে প্রশ্ন কেন লেখালেখি করি?

উত্তর: ঘরের খায়ে বনের মোষ তাড়ানো স্বভাব আমার। সে স্বভাব থেকে লিখালিখি করি যদি কারো উপকারে আসে!!

যাহোক যা বলছিলাম, কানাডার মাইগ্রেশান নিয়ে। এতদিন যেমন তেমন ছিল কিন্তু কিছুদিন যাবৎ দেশ থেকে যেভাবে স্টুডেন্ট, ভিজিটর, পিআর এমন কি স্কুল লেভেলের বাচ্চারা আসছে তা দেখে কিছুটা আতংকিত। এবং যতটুকু দেখেছি এদের বড় অংশই রিফুইজ ক্লেইম করার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ছে। আর তাইতো সেই পুরোনো লিখা খুলে আবার লিখতে বসলাম।

প্রিয় দেশবাসী,

কিছু সাবধান বাণী আবারো দিচ্ছি।

১) আপনাদেরকে করজোড়ে নিবেদন করছি দেশের দালালদের কথায় কোনভাবেই পা দিবেন না।
২) এখন কানাডার বাস্তবতা প্রচন্ড কঠিন। কারন এটা আম্রিকা না, কানাডার ইকোনমি অনেক ছোট। কিছু না কিছু জুটে যাবে এমন চিন্তা আম্রিকায় হয়তো সম্ভব কিন্তু কানাডায় না।
৩) রিফুইজ ক্লেইম করে বা স্টুডেন্ট বা ভিজিট ভিসায় এসে চাকরী জোটানো এক কথায় অসম্ভব। কানাডিয়ান সিটিজেনদেরই চাকরী জোটে না ঠিকভাবে।
৪) বাসা ভাড়া এখন ২/৩ গুন। কানাডিয়ান সিটিজেনরাই পাগল হয়ে যাচ্ছে বাসা ভাড়া নিয়ে। সেখানে নিউ কামারদের জন্য অনেক কঠিন যদি না টাকার বস্তা নিয়ে আসেন।
৫) জিনিস পত্রের দাম এতো এতো বেশী বেড়ে গেছে যে তা কমার কোন লক্ষনই দেখছি না। একটি পরিবার আগে ২/৩ হাজার ডলার দিয়ে চলতে পারতো মাসে, এখন তা ৪/৫ হাজারের নীচে পারছে না।
৭) আপনি রাতদিন পাগলের মতো খেটে রিফুইজ কোটায় এপ্লাই করলেন কিন্তু রিজেক্ট হলে কিন্তু আপনাকে ফিরে যেতে হবে। এবং এর সম্ভবনা বিশাল।
৮) ক্যাশে কাজ করে সরকারী ভাতা ক্লেইম করবেন, এমন কিছু যদি প্লান করে থাকেন তাহলে বলবো আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন।
৯) স্টুডেন্ট ভিসায় এসে এক সেমিস্টারের ফি দিয়ে বাকি সেমিস্টারের ফি/থাকা/খাওয়া জোগাড় করবেন.... এমন কিছু যদি ভেবে থাকেন তাহলে বলবো কোনভাবেই তা সম্ভব হবে না। ২৪/৭ দিন যদিও কাজ করেন তাও পারবেন না তা জোগাড় করতে। কারন এখানে বিদেশী স্টুডেন্টদের টিউশন ফি প্রায় তিনগুন।

তাহলে কারা আসবেন?

১) পিআর নিয়ে আসতে পারলে সবচেয়ে ভালো। কারন সরকারী অনেক সুবিধা পাওয়া সম্ভব। আর সিটিজেন হবেই তার প্রায় নিশ্চয়তা আছে।
২) আপনার বা আপনার বাবা/মায়ের যদি টাকার গুদাম থাকে তাহলে আসতে পারেন যেকোন ভিসায়। সেমিস্টারের ফি/থাকা/খাওয়া কোন ব্যাপারই না। টাকা থাকলে বাঘের চোখ সবখানেই জোগাড় সম্ভব।

আমি এ লিখায় ভয় দিচ্ছি না, সাবধান করছি। চারপাশে স্টুডেন্ট বা ভিজিট ভিসায় এসে কিছু মানুষের করুণ চিত্র দেখে বাধ্য হচ্ছি লিখাটা লিখতে। এমনো খবরে এসেছে যে স্টুডেন্টরা ব্রিজের নীচে থাকছে, সেল্টারে আশ্রয় নিচ্ছে।

ছোট্ট দুটো ঘটনা শেয়ার করি;

দেশে ভালো জব করতো ব্যাংকে। স্বামী/স্ত্রী/২.৫ বছরের বাচ্চা নিয়ে এসে এখন প্রায় পথে বসার অবস্থা। এক রুমের একটা বেসমেন্ট আরো তিনটা ফ্যামিলির সাথে কম ভাড়ায় থাকে। স্বামী কোন কাজ পায়নি, স্ত্রী অনেক কষ্টে একটা হাউজ ক্লিনিং মানে বুয়ার কাজ জুটিয়েছে। বাচ্চাটার অসুখ কিন্তু ডাক্তার দেখাতে পারছে না। কারন হেল্থ কার্ড নেই, পয়সা দিয়ে ডাক্তার দেখাতে হবে যা সম্ভব নয়। পরিচিত একজনের কাছে ওষুধ চেয়েছে বাচ্চাটার জন্য।

আরেকটা স্টুডেন্ট সেদিন বলছিল, দালাল তাকে বলেছে এক সেমিস্টারের ফি দিয়ে ভর্তি হলেই আর কোন সমস্যা নেই। বাকি সেমিস্টারের ফি/থাকা/খাওয়া এখানে থেকে জোগাড় করা যাবে। এখন সেমিস্টার ড্রপ দিয়ে যে কাজ করছে তা দিয়ে শুধু থাকার খাওয়ার পয়সা জুটেছে, সেমিস্টারের ফি সম্ভব হয়নি। তার কান্নাকাটি দেখে দেশ থেকে বাবা/মা বাড়ি বিক্রি করে টাকা পাঠানোর কথা চিন্তা করছে।

যাহোক, আরো ভয়ংকর সংবাদ দিয়ে লিখাটা শেষ করছি। মাত্র গত সাপ্তাহের ঘটনা;

শ্রীলংকান ভদ্রলোক বেশ দরদী মানুষ। তার দেশের একটা ইর্ন্টান্যাশানাল স্টুডেন্টকে বাসায় আশ্রয় দিয়েছিল। যতটুকু শোনা যাচ্ছে ছেলেটি সেমিস্টার ড্রপ করে। তারপর কি হয়েছিল তাদের মাঝে তা জানা যায়নি কিন্তু এ ছেলেটি পুরো পরিবারকে হত্যা করে। ভদ্রলোক ইনজুর্ড অবস্থায় কোনভাবে বাসা থেকে বের হয়ে আসতে পারলেও তার স্ত্রী ও চার সন্তান সহ পরিবারের আরেক বন্ধু পারেনি।

এ খবরে পুরো কানাডাবাসী অনেকটা শকের মাঝে যাচ্ছে।

সবাই ভালো থাকুন এ রমজানে খারাপ খবরের মাঝেও। তবে কানাডায় আসার আগে বাস্তবতাটা জেনে তারপর পা দিবেন প্লিজ।

সোহানী
মার্চ ২০২৪
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ ভোর ৬:৪১
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিছু হিন্দু অখন্ড ভারত চায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৮




মুসলিম অখন্ড ভারত শাসন করেছে তখন তারা ছিলো সংখ্যা লঘু। খ্রিস্টান অখন্ড ভারত শাসন করেছে, তারা তখন সংখ্যা লঘু মুসলিম থেকেও সংখ্যা লঘু ছিলো। তারপর মুসলিমদেরকে সাথে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। টাইম ম্যাগাজিনের আগামীর ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় বাংলাদেশের নাহিদ ইসলাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:১২




নাহিদের ভাষ্য, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বুঝতে হবে। বাংলাদশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতার যে পালাক্রম– অবশ্যই তার অবসান হতে হবে। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’ ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গল্প প্রকাশিত হবার পর নিষিদ্ধ হয়

লিখেছেন জাহিদ শাওন, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৫০


এক কাপ চা, শীতের সন্ধ্যায় বেশি ঝালের ভর্তায় মাখানো চিতই পিঠার অজুহাতে বুকপকেটে কতবার প্রেম নিয়ে তোমার কাছে গিয়েছিলাম সে গল্প কেউ জানে না।
আজকাল অবশ্য আক্ষেপ নেই।
যে গল্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধী চেষ্টা করেছিলেন বাংলাদেশের মিলিটারীকে ক্ষমতা থেকে দুরে রাখতে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৩:২৪



১৯৭১ সালের জেনারেশন'এর কাছে ইন্দিরা (১৯১৭ - ১৯৮৪ ) ছিলেন ১ জন বিশাল ব্যক্তিত্ব; যু্দ্ধ লেগে যাওয়ার পর, উনি বলেছিলেন যে, বাংগালীরা ভালো ও নীরিহ জাতি, তিনি এই জাতিকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - পর্ব ৩

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:২৩

জুলাই ১৮: ছাত্রলীগের হামলা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যা এবং ঢাবি প্রশাসনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে ১৭ই জুলাই কমপ্লিট শাট ডাউন কর্সুচী ঘোষনা করে বৈষম্যিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×