somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গাভী অধিকার আন্দোলনঃ তীব্র সঙ্কটে বর্তমান বিশ্ব (রম্য)

২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডিডিশি নিউজঃ বিশ্ব গাভী উন্নয়ন সংস্থা (বিগাউস) এর চলমান অসহযোগ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে নতুন করে তীব্র সঙ্কটে পড়েছে বর্তমান বিশ্ব। বাজারে তরল, হিমায়িত, পাউডার সকল প্রকার দুধের সরবরাহে তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে, আশঙ্কা করা যাচ্ছে শিগ্রই এর প্রভাব দুগ্ধজাত অন্যান্য পণ্যের বাজারেও পড়বে।


(রাস্তা অবরোধ করে অনশনরত গাভী)

গত ৩১শে সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন দাবীতে গাভীদের একটি বড় সংগঠন ‘বিশ্ব গাভী উন্নয়ন সংস্থার’ আহুত দুগ্ধপ্রদানবিরতি আর প্রতীবাদ আন্দলন শুরু হয়। রাজনীতি বিশ্লেষকরা এই আন্দোলনকে সারা বিশ্বের অকর্মণ্য ষাঁড়দের প্রতি গাভীদের বহুদিনের জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করছেন। উল্লেখ্য, সৃষ্টির শুরু থেকেই গর্ভধারণ, সন্তান জন্ম দেয়া, সন্তান লালনপালন ইত্যাকার সকল কাজ ষাঁড় সমাজ গাভীদের উপর একচেটিয়াভাবে চাপিয়ে রাখায় গাভী সমাজে অসন্তোষ দানা বাঁধে। বিশ্ব গাভী সংস্থার চেয়ারম্যান হাম্বা ফ্রেডিয়া বার্তা সংস্থা ‘ডিডিশি নিউজ’কে ক্ষোভের স্বরে জানান, ‘বিশ্ব সৃষ্টির শুরু থেকেই সন্তান জন্মদান, লালন-পালন আর দুধ উপর চাদেয়ার কাজ গাভীদের পিয়ে ষাঁড়তান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা কায়েম করে রেখেছে দুর্বৃত্ত ষাঁড়েরা। তারা কেবল গাভীদের পেছন পেছন ঘুরা ছাড়া আর কোন কাজই করেনা। এই অবস্থার পরিবর্তন জরুরী, তাদেরকে অবশ্যই সন্তান লালনপালনের ভার নিতে হবে’।

গাভীদের এই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছে ‘আন্তর্জাতিক বলদ সংঘ (আবস), এই সংস্থার মহাসচিব ম্বা চীমা বলেন, ‘আমাদেরকে জন্মের পরপরই মানুষ খোঁজা করে ফেলে যার ফলে আমরা বংশবিস্তার করতে পারিনা। আমরা সারা জীবন গাড়ি টানি, হালচাষ করি, এই পৃথিবীতে আমাদের ভূমিকার কাছে ষাঁড়দের ভূমিকা অতি নগন্য। সমাজে এরুপ অকর্মণ্য জাতির টিকে থাকার কোন মানে নেই, তাদের এরুপ অন্যায় আধিপত্য মেনে নেয়া যায় না’।


(গাভী অধিকার আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে বলদ সংঘের পদযাত্রা)

বিশ্বব্যাপী ষাঁড়বিরোধী তীব্র আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ষাঁড়সম্রাট ত্যাড়াব্যাড়া খাম্বা মুচকি হেসে ব্যাপক আত্মবিশ্বাসের সাথে বলেন, ‘আমরাই গো সমাজ টিকিয়ে রেখেছি, তাদের এসব আন্দোলন হালে পানি পাবেনা’।

এদিকে গাভীদের আন্দোলনে গভীর একাত্মতা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুরগি ফেডারেশন (আমুফে)। আমুফের সেক্রেটারি জেনারেল কর্কর হান্না ক্ষোভের কন্ঠে ডিডিশি নিউজকে জানান তারাও খুব শিগ্রই মোরগদের আধিপত্যের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের ডাক দেবেন। তার মতে মোরগেরা সারা জীবন গায়ে পারফিউম মেখে ঘুরে বেড়ানো আর পাড়ার মুরগি পটানো ছাড়া কোন কাজই করেনা অথচ তাদেরকেই সমাজের নেতৃত্বে দেখা যায়। এই অবস্থার পরিবর্তন একান্ত জরুরী।


(গাভী অধিকার আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে মুরগীর অবস্থান ধর্মঘট)

আমুফে নেতার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তার বাড়ির একমাত্র মোরগ হাট্টি কুক্কুরুত বলেন, ‘মুরগীদের এরুপ দাবী অত্যন্ত হাস্যকর, তারা যদি ডিম না পাড়ে তাহলে এই ডিম বড় হয়ে তারা পেট ফেটে মারা যাবে, নিজেদের বেঁচে থাকার স্বার্থেই তারা ডিম পাড়ে, এই কাজ একান্ত সমাজের জন্যই করছে এমন দাবী সম্পূর্ণ বানোয়াট’। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আমরা যদি তাদের কাছে না থাকি ২১ দিন কেন ২১ বছর বসে থেকেও কি একটা বাচ্চা ফোটাতে পারবে?’ সন্তান লালন পালনে অসহযোগিতা প্রসঙ্গে বলেন, ‘সমাজে আমাদের সংখ্যা অত্যন্ত কম, বিশ্বে কুক্কুট প্রজাতি টিকিয়ে রাখার মহান দায়িত্ব আমাদের ঘাড়ে। সমাজের সকল মুরগির দেখাশোনা করতে করতে সন্তানের খোঁজ নেয়ার সময় কোথায় আর ওরা একযোগে এত সন্তান জন্ম দেয়, শত শত সন্তানের আমরা কার খোঁজ রাখব?’

পশুপাখি সমাজে এই অনিশ্চয়তা আর ক্ষোভ প্রসঙ্গে পশুরাজের মতামত জানতে চেয়ে ডিডিশি নিউজের বিশেষ প্রতিনিধিদলকে তার বাংলোয় পাঠালে কাউকে ফেরত পাওয়া যায়নি।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গাভী সংস্থার আন্দোলনে অব্যাহতি দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে। সুত্র জানায়, ওলানে চাপ পড়লে তারা দুধ না দিয়ে পারবেনা, সব আন্দোলন শিগ্রই ব্যর্থ হবে।
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারা এমন মেধাবী এদেশে দরকার নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৩২



২০০১ সালে দেলাম ঘরে আগুন দেওয়া ও মন্দীরে হামলার জঘণ্য কাজ। ২০০৪ আবার দেখলাম ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারার জঘণ্যতম ঘটনা।জাতি এদেরকে মেধাবী মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষাঙ্গনে অপ্রীতিকর ঘটনার মুল দায় কুৎসিত দলীয় লেজুরভিত্তিক রাজনীতির

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫

সোস্যাল মিডিয়ার এই যুগে সবাই কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবি সাজতে চায়। কিন্ত কেউ কোন দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে রাজী নয়। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটা মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে । এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোমলমতিদের নিয়ে আমি কি বলেছিলাম?

লিখেছেন সোনাগাজী, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



আমি বলেছিলাম যে, এরা ভয়ংকর, এরা জাতিকে ধ্বংস করে দেবে।

ড: ইউনুসের সরকারকে, বিশেষ করে ড: ইউনুসকে এখন খুবই দরকার; উনাকে টিকিয়ে রাখতে হলে, কোমলমতিদের থামাতে হবে; কিভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিটিয়ে মানুষ মারার জাস্টিফিকেশন!

লিখেছেন সন্ধ্যা প্রদীপ, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩

এদেশে অনেক কিছুই সম্ভব।বর্তমান এলোমেলো সয়য়ে যা সম্ভব না বলে মনে করতাম তাও সম্ভব হতে দেখেছি।তবে মানুষকে কয়েক ঘন্টা ধরে পিটিয়ে মারাকে ইনিয়েবিনিয়ে জাস্টিফাই করা যায় এটা ভাবিনি।তাও মেরেছে কারা?
একদল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আহা তোফাজ্জল

লিখেছেন সামিয়া, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৪




মৃত্যু এখন এমনি সহজ
ভিডিও করতে করতে;
কথা বলতে বলতে
ভাত খেতে দিতে দিতে;
কনফিউজড করতে করতে
মেরে ফেলা যায়।

যার এই দুনিয়ায় কেউ অবশিষ্ট নাই
এমন একজনরে!
যে মানসিক ভারসাম্যহীন
এমন একজনরে!
যে ভবঘুরে দিক শূণ্য
এমন একজনরে!
যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×