somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প:ঢাকার আকাশে ফ্লাইং সসার এবং প্রোফেসর আশরাফির ব্লু রে গান

০৫ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধানমন্ডির অরচার্ড পয়েন্টের ওপরে বিশাল একটা ফ্লাইং সসার। দুপুরের ঝলমলে রোদ ঠিকরে পড়ছে কালচে রঙের বিশাল চাকতির গায়ে। হলিউডি মুভিতে যেমন দেখা যায় ঠিক তেমনি চাকতির কিনারে একটা নীল আলোর রশ্মি ঘুরছে। তবে এবার এলিয়েনরা কী এক অজ্ঞাত কারণে নিউইয়র্ক কিংবা লস এঞ্জেলেস শহরের বদলে বেছে নিয়েছে ঢাকা শহর।
দশ মিনিট হল শান্ত ওর ইয়ামাহা বাইকটা নিয়ে জ্যামে আটছে। ওর পিছনে একটা নীল হেলমেট পড়ে বসে আছে ফারহান । ওরা রাশিয়ান কালচারাল সেন্টারে আর্টসেলের কনসার্টে যাচ্ছে। ফারহান প্রথমে ফ্লাইং সসারটা দেখতে পেল। ও বলল, দোস, আমার হেলুসিনেশন হচ্ছে রে।
শান্ত বলল, কি দেখতে পাচ্ছিস দোস?
অরচার্ড পয়েন্টের ছাদের দিকে তাকা দোস।
শান্ত লাল হেলমেট খুলে তাকিয়ে বলল, হুমম, আমারও হেলুসিনেশন হচ্ছে।
প্যানাসনিকের শোরুম আর ফাস্ট ফুডের দোকানের সামনে জটলা। কমার্শিয়াল ভবনের জানালায় ভিড়। অরচার্ড পয়েন্টের ওপরে উড়ন্ত সসারটা তখনও শূন্যে স্থির। ফুটপাতের ওপর লোকজন দাঁড়িয়ে পড়েছে। তাদের চোখেমুখে বিস্ময় আর আতঙ্ক। ফারহান বলল, তাহলে মাস হেলুসিনেশন দোস।
হুমম। চল, প্রফেসর আশরাফির কাছে যাই। উনি কী বলেন শুনি।
চল।
শান্ত এবার একটা ভীষণ বে-আইনি কাজ করে বসল। ওর একশ তেইশ পয়েন্ট সেভেন সিসির সেনালি রঙের ইয়ামাহা এন্টিসারটা ফুটপাত ওপর তুলে আনল। তাপর ধীর গতিতে চালাতে লাগল। ট্রাফিক পুলিসসহ সবাই ফ্লাইং সসার দেখতে ব্যস্ত। কে বাধা দেবে।
ফারহান পকেট থেকে স্যামসং এস থ্রিটা বের করে কল করল। বিজ বিজ শব্দ হচ্ছে। তার মানে মোবাইল জ্যাম । তার মানে ফ্লাইং সসারের ব্যাপারটা হেলুসিনেশন নাও হতে পারে। এই প্রথম ও শীত বোধ করে।
ফুটপাতের ভিড়ের ফাঁক গলে ইয়ামাহাটা মিরপুর রোডে নিয়ে এল শান্ত।
প্রফেসর আশরাফির ল্যাবটি মিরপুর রোডে ‘স্পেস গার্ডেন’ নামে একটি বহুতলের টপ ফ্লোরে। প্রফেসর আশরাফি ঠিক অধ্যাপনা করেন না। তাঁর এম আই টি কিংবা ক্যালটেক -এর ডিগ্রি-টিগ্রি নেই । তিনি শখের বৈজ্ঞানিক। তিনি বেশ কিছু অভিনব ডিভাইস/গেজেট আবিস্কার করেছেন। এই যেমন, কনভার্টিবল স্পিডবোট, হেল্পফুল রোবট, বাড়ি পাহারার জন্য শাউটিং ডগ, মালটিপল মেরিন সান গ্লাস, সোলার বাইক। তবে তাঁর উদ্ভাবনগুলি দেশে তেমন সাড়া মেলেনি। নেইম অ্যান্ড ফেইম এর ব্যাপারে প্রফেসর আশরাফির ভাগ্যই বিরূপ। এ নিয়ে তাঁর মনে দারুন ক্ষোভ আর প্রচন্ড হতাশা।
শান্ত ‘স্পেস গার্ডেন’- এর বেইজমেন্ট ঢুকে ডান দিকে লিফটের কাছে বাইকটা পার্ক করল। এখানকার গার্ডরা ওদের ভালো করেই চেনে। তাদের একজন আবার মিলিটারি কায়দায় স্যালুট দিল। ওরা গার্ডদের কাছে হেলমেট রেখে লিফট এর কাছে এসে দাঁড়াল ।দু’জনে ফ্লাইং সসার নিয়ে আলোচনা করছে।
এই ফাঁকে বলে দিই কীভাবে ওদের সঙ্গে প্রফেসর আশরাফির পরিচয় হল। সে এক ভারি মজার ঘটনা বটে। গতবছর প্রফেসর আশরাফি পদ্মা নদীতে কনভার্টিবল স্পিডবোট (সি এস বি) টেস্ট করবেন। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দেশবাসীকে সময়মতো মাওয়া ফেরিঘাটে পৌঁছতে অনুরোধ করেছেন প্রফেসর আশরাফি। শান্ত ও ফারহান কৌতূহলী ছিল। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষাও হয়ে গেছে। সময়মতো ওরা মাওয়া গিয়ে পৌঁছল। পদ্মার পাড়ে অনেক লোক জড়ো হলেও কারওই পোর্টেবল স্পিডবোটে করে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার সাহস হচ্ছিল না। প্রফেসর আশরাফির মুখ শুকনো দেখে শান্তদের খারাপ লাগল। ওরা একটা বুদ্ধি বের করে। শান্ত ভালো সাঁতার জানে। ও প্রফেসর আশরাফির কাছে গিয়ে দাঁড়াল। এখানেই বলে রাখি যে প্রফেসর আশরাফি মোটেও প্রফেসর শঙ্কুর মতন দেখতে নন, এবং তাঁর মাথায় টাকও নেই। প্রফেসর আশরাফি ছ’ ফুট লম্বা; কাঁধ অবধি লম্বা জট পাকানো লালচে চুল। স্মার্ট শরীর, পেশল বাহু, পেটা স্বাস্থ। চৌকো মুখে চশমা-টশমাও নেই । সেভ করা মসৃণ গাল। থুতনিতে কাঁচাপাকা ফ্রেঞ্চ কাট দাড়ি। বয়স? এই ধরা যাক পঞ্চান্ন কি ছাপ্পান্ন। চিরকুমার এবং নিরামিষভোজী প্রফেসর আশরাফির গায়ের রংটা ওই গৌড় বর্ণই।
শান্ত বলল, আমার নাম তৌহিদ জামান শান্ত। বুয়েটে ইইই তে ভরতি হয়েছি।
অ। তা ইইই তে কি হয় বাপু?
ডিপার্টমেন্ট অভ ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং।
অ।
স্যার। আপনার সি এস বি জিনিসটা জোশ। আমি ওটায় উঠে পদ্মা পেরোতে চাই।
উঠবে? সত্যি? প্রফেসর আশরাফি খুশি হয়ে উঠলেন।
শান্ত লাল রঙের একটা লাইফ জ্যাকেট পরে নিল। ওদিকে ফারাহান একটা স্পিডবোট ভাড়া করে উঠে পড়েছে। নদীতে শান্তর কোনও বিপদ হলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে। ফারহান ভরতি হয়েছে এনএএমই ডিপার্টমেন্টে। (ডিপার্টমেন্ট অভ নাভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং) চোখে বাংলাদেশ নেভির জন্য নিউক্লিায়ার সাবমেরিন বানানোর স্বপ্ন।
সাদা রঙের পোর্টেবল স্পিডবোটটা ছোট্ট। দেখতে অনেকটা কমোডের মতন তবে পানির ওপর ভেসে থাকছে। প্রফেসর আশরাফি শিখিয়ে দিলেন কীভাবে অপারেট হয়। শান্ত কোনও রকম বিপদ ছাড়াই পদ্মা পাড় হতে পারল। সেই থেকে প্রফেসর আশরাফির সঙ্গে ওদের অন্তরঙ্গতা । প্রফেসর আশরাফির কপালে নেইম অ্যান্ড ফেইম না জুটলেও তাঁর ধনসম্পদ অঢেল। ঢাকার ধনী বনেদী পরিবারের সন্তান তিনি। প্রচুর ধনসম্পদ পেয়েছেন উত্তরাধিকারসূত্রে । সেই অর্থে ১২ তলা ‘স্পেস গার্ডেন’- এর টপ ফ্লোর কিনে ফেলেছেন। ছাদের মালিকানাও প্রফেসর আশরাফি।
প্রফেসর আশরাফি ল্যাব-এ নেই। ওরা কাঁচের স্লাইডিং ডোর ঠেলে ছাদে পা দিতেই বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর দু’টি ফাইটার এয়ারক্র্যাফট ভয়ানক আওয়াজ করে উড়ে গেল। ফারহান আবার আর্মস অ্যান্ড অ্যামুনেশন সম্বন্ধে ভালো খোঁজখবর রাখে। ঝলমলে আকাশে চেয়ে ফারহান বলল, এফ সেভেন বিজিআই কমবেট এয়ারক্রাফট। বাংলাদেশ এয়ারফোর্স এ বছরই চিন থেকে এনেছে।
শান্ত মাথা নাড়ে।
বেশ বড় ছাদ। প্রফেসর আশরাফির বাগানে শখ। অর্ধেক জুড়ে বাগান। বাগানে একজন মালি আছে। মালির নাম নাসিরউল্লাহ। এই মুহুর্তে সে কলমির ক্ষেতে উবু হয়ে আছে। পরনে লুঙ্গি আর গেঞ্জি। নাসিরউল্লাহ রান্নাবান্নাও। আসলে সকল কাজের কাজী সে । প্রফেসর আশরাফির মান্দাতা আমলের শেভ্রলে স্টেশন ওয়াগনটাও সেই চালায়।
আসলে নাসিরউল্লাহ প্রফেসর আশরাফির তৈরি রোবট!
প্রফেসর আশরাফি ছাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছেন। চোখ একটা লাল রঙের এপেক্স ১২৮ মাক টেলিস্কোপ- এ। পরনে কালো রঙের ধূসর কোট। চকচকে কালো জুতা জোড়া অত্যন্ত পালিশ করা। শান্তদের না দেখেই প্রফেসর আশরাফি বললেন, SAP টা পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি ।
SAP? ফারহান ও শান্ত একই সঙ্গে চেঁচিয়ে উঠল।
প্রফেসর আশরাফি বললেন, হ্যাঁ, SAP. Suspected Alien Spacecraft.
ওহ্ । এই না হলে বৈজ্ঞানিক। সাধারণ মানুষের মতন করে একজন বৈজ্ঞানিক ভাববেন কেন?
টেলিস্কোপ -এ তোমাদেরও দেখেছি। তোমরা ধানমন্ডির অরচার্ড পয়েন্টের সামনে ছিলে। কিন্তু UPA টার উদ্দেশ্য ঠিক বুঝছি না।
UPA? ফারহান ও শান্ত একই সঙ্গে চেঁচিয়ে উঠল।
হ্যাঁ। UPA. Unexplained Aerial Phenomena.
ওহ্ । এই না হলে বৈজ্ঞানিক। সাধারণ মানুষের মতন করে ভাববেন কেন?
প্রফেসর আশরাফি ঘুরে দাঁড়িয়ে বললেন, তোমরা এসেছ। ভালোই হল। চল ল্যাবে গিয়ে বসি। কুল ব্রেইনে ভাবা যাক সাইনটিস্ট হিসেবে এখন আমাদের করনীয় কী ।
চলুন।
প্রফেসর আশরাফির কোটের বুক পকেটে একটি লাল টকটকে গোলাপ। তিনি আজ লাল রঙের শার্ট আর নীল রঙের টাই পরেছেন। সব সময় ধোপদূরস্ত থাকতে ভালোবাসেন।
গোটা টপ ফ্লোর জুড়ে পার্টিশন। একপাশে ল্যাব। বেশ বড়। বড় একটা টেবিলের ওপর অনেক ডিভাইস, গেজেট, আর কম্পিউটার। ক্রিম কালারের দেয়ালে লেখা: আই অ্যাম লিও। পাশে সিংহ রাশির চিহ্ন। তার পাশে মকর রাশির স্টিফেন হকিং (জন্ম: ৮ জানুয়ারি)- এর একটি প্রোট্রেট, তার পাশে সালভাদর দালির বিমূর্ত ছবি, তার পাশে ক্যারিবিয় ভ্যূডু মুখোশ ও বাংলাদেশের ম্রো আদিবাসীদের বাঁশী ঝুলছে। আর এদিকের দেয়ালে বিশাল স্টারচার্ট। তার পাশে লার্জ স্ক্রিনের একটি প্লাজমা টিভি। তার উলটো দিকে কয়েকটি কালো রঙের আরামদায়ক পুরু সোফা। প্রফেসর আশরাফি তার নির্দিষ্ট সিঙ্গেল সোফায় বসলেন। তারপর বললেন, ওই সাসপেকটেড এলিয়েন স্পেসক্রাফটের ব্যাপারে একটা সংবাদ সম্মেলন করব ভাবছি। এরই মধ্যে আমি সব অ্যারেঞ্জ করে ফেলেছি।
ঠিক তখনই মাথার ওপর দিয়ে এয়ার ফোর্সের কমব্যাট এয়ারক্রাফট উড়ে গেল। ফারহান বলল, এসব কমবেট এয়ারক্রাফট-এ পি এল টু ইনফ্রারেড গাইডেড এয়ার টু এয়ার মিজাইল আছে। এয়ারফোর্সের ওরা এখন মিজাইল চার্জ না করলে হয়। হাতির গায়ে কাদা ছুড়ে লাভ কি?
ঠিক। শান্তু বলল।
প্রফেসর আশরাফি পকেট থেকে রুমাল বের করতে করতে বললেন, হুমম। মিসাইল ছুড়ে কাজ হবে না বটে। তবে সাসপেকটেড এলিয়েন স্পেসক্রাফট তাক করে আমার উদ্ভাবিত
বিআরজি ছুড়লে অবশ্যই কাজ হবে।
ফারহান বলল, কি বললেন?
নাসিরউল্লাহ লেবুর শরবত নিয়ে এল। শরবতের গ্লাস নিয়ে প্রফেসর আশরাফি মুচকি হাসলেন। কাঁচাপাকা ফ্রেঞ্চকাট দাড়িতে হাত বোলালেন। তারপর হাসি থামিয়ে বললেন, বললাম যে আনএক্সপ্লেইনড এরিয়েল ফেনোমেনা তাক করে আমার উদ্ভাবিত বিআরজি ছুড়লে কাজ হবে। বিআরজি হল ব্লু রে গান। এখন বুঝলে কিছু?
কিছুটা হতভম্ব ফারহান জিজ্ঞেস করে, কাজ হবে বলছেন? বলে শরবতে চুমুক দিল।
আলবৎ হবে। ল্যাব কাঁপিয়ে হুঙ্কার ছাড়লেন প্রফেসর আশরাফি । তারপর এক চুমুক শরবতটুকু শেষ করে 'আহ' শব্দ করে গ্লাসটা সামনের কাঁচের টেবিলের ওপর রেখে কোটের পকেট থেকে রুমাল বের করে মুখ মুছতে মুছতে প্রফেসর আশরাফি বললেন, দশ বছর ধরে ডিভাইসটা গোপনে ডেভেলাপ করেছি। ইন ফ্যাক্ট, এলিয়েনরা ওদের স্পেসশিপগুলি বিশেষ এক ধরণের ম্যাটার দিয়ে তৈরি করে যার বৈশিষ্ট্য অনেকটা আমাদের পরিচিত পলিমার -এর মতন। আমার তৈরি বিআরজি-র নীলরশ্মি ওটার ইলেকট্রন ভরের পরিমান কমিয়ে দেয়। ফলে আনএক্সপ্লেইনড এরিয়েল ফেনোমেনা শূন্যে মিলিয়ে যায়।
বাহ্।
হ্যাঁ। দাঁড়াও দেখাচ্ছি জিনিসটা । বলে প্রফেসর আশরাফি উঠে দাঁড়ালেন। তারপর ওদিকে পার্টিশনের ওপারে চলে গেলেন। একটু পর ফিরে এলেন নরম লেদারের তৈরি কালো রঙের বেশ বড় একটা ব্যাগ নিয়ে। অনেকটা গিটারের কাভারের মতন দেখতে। চেইন খুলে প্রায় এয়ারগানের সমান প্লাস্টিকের তৈরি একটা কী বার করলেন। জিনিসটা একেবারে ট্রান্সপারেন্ট । ভিতরে ঝকঝকে পার্টস দেখা যাচ্ছে। সরু সিলিনডারটি সাদা রঙের । তার ওপরের সরু একটা কালো রঙের টেলিস্কোপ লাগানো। কাঁচ রঙের ট্রিগারটার ভিতরে প্যাঁচানো স্প্রিংও দেখা যাচ্ছে।
ও এইটা? ফারহান বলল। বলে শান্তর দিকে চেয়ে আছে। শান্ত চেয়ে আছে। চশমার ওপাশে ওর মনি দুটি তিরতির করে কাঁপছে।
হ্যাঁ। এটা। বলে প্রফেসর আশরাফি ফারহানের দিকে কটমট করে তাকালেন।
ফারহান অনেকটা উত্তেজিত হয়ে উঠে বলল, তাহলে এখুনি ওটা ছুড়ুন । চলুন ছাদে যাই।
আহা বোকা ছেলে। এটা ছোড়ার আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে না। শহরে এলিয়েন পড়েছে। ব্যাপারটা এখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারে। তাছাড়া এই ছাদ থেকে রে ছুড়লে কাজ হবে না। ক্লোজ ডিসটেন্স থেকে থেকে নীলরশ্মি ছুড়তে হবে।
তাহলে এখন উপায়? শান্তর কন্ঠস্বরে হতাশা ফুটে উঠেছে।
প্রফেসর আশরাফি নীলরশ্মির মারণাস্ত্রটা আবার লেদারের ব্যাগে ভরতে ভরতে বললেন, উপায় একটা আছে। এয়ার ভাইস মার্শাল শরীফউদ্দীন আহমেদ আমার বাল্যবন্ধু । দু’জনে এক সঙ্গে সেন্ট জোসেফ স্কুলে পড়েছি । সমস্যা হল ওকে ফোনে পাচ্ছি না। ওর সঙ্গে একবার কথা বললে কাজ হত। গত বছর ওকে একটা সোলার লন মোয়ার গিটফ করেছি। ফ্রি। আমার কথা ও না শুনে যাবে কই।
শান্ত জিজ্ঞেস করল, আপনি সংবাদ সম্মেলন করতে চাইছেন ওই ব্লু রে গান- এর ব্যাপারটা বলার জন্য?
একজেটলি। তাছাড়া দেশের লোক জানবে আমি তাদের সঙ্কটকালে কত উদ্বিগ্ন।
ফারহান জিজ্ঞেস করে, কিন্তু, এরি মধ্যে যদি এলিয়েনরা ঢাকা শহর অ্যাটাক করে বসে?
প্রফেসর আশরাফির হাত নেড়ে বললেন, আরে, না না। ঘন্টাখানেকও হয়নি ওটা এসেছে। এলিয়েনরা এখন ঢাকা শহরের ডেটা কালেক্ট করছে। এই শহরে প্রায় দুই কোটি মানুষ। এদের সবার রক্তের গ্রুপ, জিন এর কাঠামো, হাড়ের ক্যালসিয়াম, সিরাম, এনজাইম, হরমোন, মগজের সেলের গঠনের ডেটা নিতে অনেক হ্যাপা। ওদের সময় লাগবে। এখন চল এখন অ্যারোমা সেন্টারে যাই।
অ্যারোমা সেন্টারে কেন? শান্ত জিজ্ঞেস করে।
তোমরা আসার আগে আমি "দৈনিক বাংলাজমিন"-এর বিশিষ্ট সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব- এর সঙ্গে কথা বলেছি। সে আমার বাল্য বন্ধু। তোমরা আসার আগে ওর মাধ্যমে অ্যারোমা সেন্টারের হলরুমে প্রেস কন্সফারেন্স অ্যারেঞ্জ করেছি। বলতে বলতে প্রফেসর আশরাফি কালো লেদারের ব্যাগটা কাঁধে তুলে নিলেন।
ওরা নীচে নেমে এল। নীচে নেমে ফারহান গার্ডকে বলল, বাইকটা একটু দেখো। আমরা বাইরে যাচ্ছি।
আইচ্ছা স্যার।
নাসিরউল্লাহ ঘিয়ে রঙের মান্দাতা আমলের একটা শেভ্রলে স্টেশন ওয়াগন নিয়ে এল। প্রফেসর আশরাফির বসলেন সামনে সিটে। শান্ত আর ফারহান পিছনে। নাসিরউল্লাহর পরনে লুঙ্গি। তবে সে গেঞ্জির ওপর ঘিয়ে রঙের ফতুয়া পরে নিয়েছে। সে ধীরেসুস্থে স্টেশন ওয়াগনটা বড় রাস্তায় তুলে আনল । রাস্তা প্রায় ফাঁকা। রাস্তায় আর্মির ট্রাক।
প্রফেসর আশরাফি কোটের পকেট থেকে একটা এলজি অপটিমাস বের কাকে যেন ফোন করলেন। পেলেন না হয়তো। "ধ্যাত" বলে বিরক্তি প্রকাশ করলেন ।
কি হল প্রোফেসর?
কী আর হবে! আমার কপাল। মনিরকে ফোনে পাচ্ছি না।
কাকে?
মনির। মানে এয়ার ভাইস মার্শাল শরীফউদ্দীন আহমেদ। আমার বাল্যবন্ধু । ওকে পেলে সসারটার কাছে যাওয়ার পারমিশন পেতাম। গত বছরের আগের বছর ওকে একটা সোলার আইরন বানিয়ে ফ্রি দিয়েছি।
ফারহান বলল, তিনি হয়তো এখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিটিং করছেন।
প্রফেসর আশরাফি বিরক্ত হয়ে কাঁধ ঝাঁকালেন।
অ্যারোমা সেন্টারটি মিরপুর রোডে ওয়ালটনের শোরুমের পাশে। পৌঁছতে পৌঁছতে তিনটা বাজল।ভিতরের হলরুমটি বিশাল। তবে একেবারে ফাঁকা। দেয়ালে একটি ব্যানার টাঙানো। তাতে বোল্ড করা কালো অক্ষরে বড় বড় করে লেখা: ঢাকা আন্ডার অ্যাটাক।তার নীচে লেখা: অ্যান্ড প্রফেসর আশরাফি’স কনসার্ন অ্যাবাউট দি অ্যাটাক (৩য় লাইনে) অলসো ডিসপ্লেইং হিজ লেটেস্ট এক্সক্লুসিভ বিআরজি ডিভাইস অ্যাজ আ পাওয়ার ফুল লেজার উইপন অ্যাগেনস্ট দি আননোন গ্যালাকটিক এনিমিজ।
শান্তর কেমন সন্দেহ হল। প্রোফেসর এইসব ব্যানার ছাপলেন কখন? ফারহান দূর থেকে সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব কে দেখেই চিনতে পারল। পাকা চুল, ক্লিন সেভ করা মুখ। দেখলে বেশ ইয়াং মনে হয় ।টকশোয়ে এই লোককে প্রচুর দেখা যায়। ইনি বাংলাদেশে তৃতীয় শক্তি উত্থানের বিপক্ষে মতামত রাখেন। সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব -এর পাশে জিন্স আর বেগুনি রঙের কমিজ পরা একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে। ছোট ছোট ছাঁটা চুল। চোখে ছোট চারকোণা ফ্রেমে কালো চশমা। এদের একটু দূরে ২২/২৩ বছরের লিকলিকে চেহারার কালো রঙের টি-শার্ট পরা একটি ছেলে ক্যামেরা কাঁধে দাঁড়িয়ে। ক্যামেরাম্যান মনে হল।
সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব কে দেখে প্রফেসর আশরাফি জিজ্ঞেস করলেন, কি রে লিটু আর সব লোকজন কই?
সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব মুখ কাঁচুমাচু করে বললেন, আর বলিস না দোস্ত। সব অরচার্ড পয়েন্ট কাভার করতে গেছে।
প্রফেসর আশরাফি মুখ গণগণে লাল হয়ে উঠল। সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব বললেন, এই যে চ্যানেল ফর্টি নাইন- এর একজন জার্নালিস্ট এসেছে। এই যে, এর নাম তানিয়া তাবাসসুম।
প্রফেসর আশরাফি একবার তানিয়া তাবাসসুম এর দিকে তাকালেন। তারপর সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব-এর দিকে তাকিয়ে বললেন, তুই না চ্যানেল ফর্টি নাইন- এর একজন উপদেষ্টা?
হ্যাঁ। আর ওই যে ক্যামেরাক্র। ওর নাম শাহিনূর।
তানিয়া তাবাসসুম বেশ স্মার্ট । বলল, স্যার। আপনার ইনভেন্ট করা লেজার গানটা কি সত্যিই কাজ করে?
প্রফেসর আশরাফি চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন, ওখানে গিয়ে দাঁড়াও। কাজ করে কিনা এখুনি দেখাচ্ছি।
না বাবা । বলে এক লাফে তানিয়া তাবাসসুম । কিছুটা সরে গেল।মেঝের ওপর পেন্সিল হিলের খটাস শব্দ হল।
রাস্তা থেকে অ্যাম্বুলেন্সের পেঁ পুঁ পেঁ পুঁ শব্দ ভেসে এল। ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি ঘন্টি বাজিয়ে চলে যায় । মাথার ওপরে ঘটাং করে শব্দ হল। প্রফেসর আশরাফি চিৎকার করে বললেন, আর্মিকে অ্যাটাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর্মি মিজাইল চার্জ করছে মনে হল।
ওরা দৌড়ে অ্যারোমা সেন্টার-এর বাইরে বেড়িয়ে এল। রাস্তা প্রায় ফাঁকা। গুরগুর গুরগুর শব্দে একটা মাটিরঙা ব্যাটল ট্যাঙ্ক যাচ্ছে। আশে পাশের বিল্ডিংয়ের ছাদে জানালায় উৎসুক জনতার ভিড়।
প্রফেসর আশরাফি কোটের পকেট থেকে এলজি অপটিমাসটা বের করে কানে ঠেকিয়ে চিৎকার করছেন, হ্যালো, হ্যালো। ... মনির। হ্যাঁ...হ্যাঁ। আমি শ্যামল, দোস্ত। ফ্লাইং সসারে মিজাইল চার্জ করে কাজ হবে না। ওইটা বিশেষ ধরনের পলিমারে তৈরি। হ্যাঁ...হ্যাঁ। বাট। আই হ্যাভ আ প্ল্যান দোস্ত। আই নিড পারমিশন টু গো দেয়ার। ওকে। ধন্যবাদ, দোস। পকেটে এলজিটা রাখতে রাখতে প্রফেসর আশরাফি হাসতে হাসতে বললেন, মনির ... মানে এয়ার ভাইস মার্শাল শরীফউদ্দীন আহমেদ প্রাইমিনিস্টার-এর সঙ্গে কথা বলে এখুনি জানাবে বলল।
মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই ঘ্যাঁষ করে ফুটপাতের কাছে আর্মির একটা জিপ এসে থামল।জিপ থেকে একজন স্মার্ট আর্মি অফিসার নামলেন। সাবলীল ভঙ্গিতে ওদের কাছে এসে বললেন, আই অ্যাম মেজর ইফতেখার হায়দার। হু ইজ প্রফেসর আশরাফি?
আমি ইয়াং ম্যান। বলে এক গাল হেসে প্রফেসর আশরাফি এগিয়ে গেলেন।
মেজর ইফতেখার হায়দার বুড়ো আঙুল তুলে জিপ দেখিয়ে জিপে ওঠার ইঙ্গিত করলেন।
শান্ত, ফারহান আর সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব কে দেখিয়ে প্রফেসর আশরাফি বললেন, ওরা আমার টিমের। ওরাও যাচ্ছে কিন্তু।
ওকে। মেজর ইফতেখার হায়দার কাঁধ ঝাঁকিয়ে শ্রাগ করলেন।
প্রফেসর আশরাফির পিছন পিছন সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব, শান্ত আর ফারহান জিপে উঠল। তানিয়া তাবাসসুম বলল, মেজর, আমিও কিন্তু ওনার টিমের।
ওকে।বলে মেজর ইফতেখার হায়দার জিপ দেখিয়ে বুড়ো আঙুল তুলে জিপে ওঠার ইঙ্গিত করলেন।
ক্যামেরা ম্যান কে ডেকে তানিয়া তাবাসসুম বলল, শাহিনূর। তুমি আগে ওঠ তো । শাহিনূর ক্যামেরা নিয়ে চোখের পলকে জিপে উঠে পড়ল। তার পিছনে তানিয়া তাবাসসুম। শান্ত আর প্রফেসর আশরাফি সামনের সিটে বসেছিলেন। প্রফেসর আশরাফি ঘাড় ফিরিয়ে তানিয়া তাবাসসুম কে জিজ্ঞেস করলেন, এই মেয়ে। ক্যামেরায় কি লাইভ টেলিকাস্ট করা যাবে?
সরি, স্যার। তানিয়া তাবাসসুম মুখ কালো করে বলল।
প্রফেসর আশরাফি মুখ কালো হয়ে উঠল। পারলে জিপ থেকে তানিয়া তাবাসসুম কে নামিয়ে দেন।
চেকপোস্ট পার হয়ে মিনিট পাঁচেক লাগল আরচার্ড পয়েন্ট এর সামনে পৌঁছতে। রাস্তার দু’পাশে ব্যারিক্যাড। অ্যাম্বুলেন্স আর ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। লোকজনের ভিড়। বেশির ভাগই স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী। ইংলিশ মিডিয়ামের মনে হল। কী কারণে তারা ভিতরে ঢুকতে মরিয়া। র‌্যাব ও পুলিশ আটকে রেখেছে।
আরচার্ড পয়েন্ট- এর সামনের রাস্তায় একটি মাটি-রঙা টাইপ সিক্সটি নাইন এম কে টু জি মেইন ব্যাটেল ট্যাঙ্ক থেমে আছে। তার কাছে জিপ থামালেন মেজর ইফতেখার হায়দার। জায়গাটায় রীতিমতো যুদ্ধাবস্থা ।ফুটপাত ঘেঁষে কয়েকটি আর্মির ট্রাক।তার ওপর হেভিমেশিন গান। ফুটপাতের ওপর হেভি আর্টিলারি পজিশন নিয়েছে। ঢাকা ব্যাংকের সামনে একটি সারফেস টু এয়ার মিজাইল। আশেপাশের অফিস বিল্ডিং-এর ছাদে কৌতূহলী জনতা। সাংবাদিক। বারবার ক্যামেরার ফ্ল্যাশ ঝলসে উঠছিল।
প্রফেসর আশরাফি দ্রুত জিপ থেকে নেমে ট্যাঙ্ক দেখিয়ে বললেন, মেজর ওই ট্যাঙ্কটার ওপরে উঠলে আমার জন্য সুবিধে হয় ।
ওকে। বলে ট্যাঙ্কের কাছে গিয়ে কী যেন বললেন মেজর ইফতেখার হায়দার।
প্রফেসর আশরাফির ফিট শরীর। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তিনি ট্যাঙ্কের ওপর উঠে গেলেন। দু’ পা ফাঁক করে দাঁড়ালেন। কাঁধ থেকে লেদারের ব্যাগটা নামিয়ে ধীরে সুস্থে বি আর জিটা বার করলেন। তারপর সময় নিয়ে ওটা তাক করলেন শূন্যে ঝুলে থাকা ফ্লাইং সসারের দিকে। প্রফেসর সময় নিচ্ছেন। মিস করলে চলবে না। কোটি কোটি টিভিদর্শক নিঃশ্বাস বন্ধ শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্যটা করে দেখছে। আশেপাশের ক্যামেরার ফ্লাশ বারবার ঝলসে উঠল।শাহিনূর ট্যাঙ্কের খুব কাছে এসে ক্যামেরা ধরে রেখেছে। প্রফেসর আশরাফি বিআরজিটা নামিয়ে কী সব টিপে প্যারামিটার ঠিক করে নিলেন। তারপর আবার লেজার গানটা কাঁধে তুলে তাক করলেন। ঠিক সাত সেকেন্ড পর ট্রিগার টিপলেন প্রোফেসর। নল থেকে ঘন নীল রশ্মি ছুটে সসারটার গায়ে লাগতেই সসারটা শূন্যে মিলিয়ে গেল।
জনতার তীব্র চিৎকার আর উল্লাস শোনা গেল। আর্মিরাও হাততালি দিল। তানিয়া তাবাসসুম আনন্দে লাফাচ্ছে। সাংবাদিকরা ছুটে আসতে লাগল। প্রফেসর আশরাফি তখনও ট্যাঙ্কের ওপর দাঁড়িয়ে। সাংবাদদিকরা ছবি তুলছে। সাংবাদিকদের মধ্যে এটিএন নিউজের মুন্নী সাহা কে দেখে এক লাফে ট্যাঙ্ক থেকে নামলেন প্রফেসর আশরাফি । যেন তাঁর সঙ্গে কথা বলার আগ্রহই বেশি। মুন্নী সাহা বলল, আমাদের প্রিয় বাংলাদেশে আপনার মতন একজন এ এ এ একজন প্রতিভাবান ... এ এ এ
উত্তরে প্রফেসর আশরাফি হে হে করে হাসলেন।এই ডামাডোলের মধ্যে মেজর ইফতেখার হায়দার প্রফেসর আশরাফি কে একটা মো্বাইল এগিয়ে দিলেন। তিনি মোবাইল কানে ঠেকিয়ে বললেন, জ্বী, জ্বী। অবশ্যই অবশ্যই । তারপর শান্ত আর ফারহান চোখ টিপে ফিসফিস করে প্রফেসর আশরাফি বললেন, প্রাইমিনিষ্টার ।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাটথা বলে স্পেস গার্ডেন-এ ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা গল। সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব, তানিয়া তাবাসসুম আর শাহিনূর আসতে চেয়েছিল। প্রফেসর আশরাফি তাঁর ল্যাবে কাউকে এলাও করেন না। শুক্কুরবার হোটেল রেডিসনে বিশাল পার্টি দিবেন বলে ওদের বিদায় করলেন।
প্রফেসর আশরাফি তাঁর নির্দিষ্ট সোফায় বসলেন।
শান্ত বলল, এবার বলেন। আসল ঘটনা কি?
প্রফেসর আশরাফি হাসলেন। বললেন, আসল ঘটনা হল ও পি।
ও পি মানে?
ও পি মানে অপটিক্যাল ফেনোমেনন। ওয়ান কমন এক্সাম্পল ইজ দ্য রেইনবো। হোয়েন লাইট ফ্রম দ্য সান ইজ রিফলেকটেড অ্যান্ড রিফ্যাকটেড বাই ওয়াটার ড্রপলেটস। আ মিরাজ ইজ অ্যান এক্সাম্পল অভ অ্যান অপটিক্যাল ফোনেমেনোন। ওই ফ্লাইং সসার হল আমার তৈরি করা অপটিক্যাল ফেনোমেনন।
শান্ত আর ফারহানে মুখ হা হয়ে গেল। নাসিরউল্লাহ লেবুর শরবত দিয়েছিল। দু'জনের গলায় শরবত আটকে যায় আর কী। ফারহান কাশতে লাগল।
প্রফেসর আশরাফি বললেন, আমি এত বড় বৈজ্ঞানিক। আর দেশের লোকে সেটা জানবে না। তাই সামান্য ট্রিক খাটালাম আর কী। প্রধানমন্ত্রী তখন বললেন, ব্যস্ততা কাটিয়ে উঠিয়ে তিনি আমাকে ডিনার এর দাওয়াত দেবেন । আমার একুশে পদক সিওর।
শান্ত বলল, প্রাইমিনিস্টার কি একুশে পদক এর কথা বললেন?
না বলেননি। তবে ডিনারে অবশ্যই বলবেন। দেশের জন্য যা করলাম। এখন না দিলে কার মাথা কাটা যাবে তোমারই বল?
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:২২
২৫টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×