somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: এবার মোসাদ- এর মুখোমুখী প্রোফেসর আশরাফি

১২ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কুখ্যাত ইজরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ যে এত বড় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তা কে জানত! তবে প্রোফেসর আশরাফি দ্রুত মোকাবেলা করে মোসাদ- এর সে ষড়যন্ত্র নৎসাত করে দিলেন। ঘটনাটা ঘটেছিল এভাবে- মিরপুর রোডের আড়ংয়ের সামনে থেকে চ্যানেল ফর্টি ওয়ানের এক্স ক্যামেরা পারসন শাহীনূর কে বা কারা মাইক্রোবাসে তুলে নিল। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার সময় সে ‘স্পেস গার্ডেন’ থেকে খেয়ে দেয়ে বাড়ি ফিরছিল, তখনই ঘটনাটা ঘটল । অপহরণের দৃশ্যটা দেখেছিল ‘স্পেস গার্ডেন’-এর একজন গার্ড। নাসিরউল্লাহ কে সেই খবর দিল। নাসিরউল্লাহর ফোন পেয়ে প্রোফেসর আশরাফি দু’ এক জায়গায় ফোন করলেন। শাহীনূর সামান্য ক্যামেরাম্যান বলে তেমন রেসপন্স পেলেন না। ব্রিগেডিয়ার এস্তেমদাদ ওয়াজেদ জার্মানি। অবশেষে মেজর ইফতেখার হায়দার কে ফোন করলেন প্রফেসর । খোঁজখবর করে মেজর জানালেন, কিছু করতে পারছি না প্রোফেসর । সরি।
দুঃসংবাদ শুনে পরের দিন আটটার মধ্যেই সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব, তানিয়া তাবাসসুম, শান্ত ও ফারহান উত্তরার ল্যাবে পেঁছে গেল। প্রোফেসর আশরাফির মুখ কালো। বিমর্ষ ভঙ্গিকে বসে আছেন। তানিয়া কান্না কান্না কন্ঠে বলল, এখন কী হবে স্যার?
শাহীনূর ওর কলিগ। ওর উদ্বেগই বেশি। প্রফেসর বললেন, কাজটা কারা করেছে জানতে পেরেছি, কিন্তু কিছু করা যাচ্ছে না লোকটা পাওয়াফুল বলে।
লোকটা কে স্যার? শান্ত জিজ্ঞেস করে।
গাজীপুরের এক নটরিয়াস গড ফাদার। লোকটা অবশ্য ব্যবসায়ী। এফএফ গ্রুপ অভ ইন্ড্রাষ্ট্রির চেয়ারম্যান। নাম ফাইইম ফাইয়াজি। এফএসআরএম লিমিটেড- এর প্রতিষ্ঠাতা।
ফারহান জিজ্ঞেস করে, এফএসআরএম লিমিটেড মানে ফাইয়াজি স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড?
হ্যাঁ। লোকটা আসলে কুখ্যাত ভূমিদস্যু, ইট ভাটারও মালিক। এছাড়া জঙ্গী মদদ, জাল টাকা, মাদক ব্যবসা, আমর্স ডিলিং, হিউম্যান ট্যাফিকিং -এসব করে প্রচুর অর্থের মালিক হয়েছে সে। গাজীপুরে ‘ফাইয়িম প্যালেস’ নামে আলিশান এক অট্টালিকায় থাকে। ফাইইম ফাইয়াজির ডান হাত কুখ্যাত মাস্তান চোখ কানা ফাত্তাহ এবং বাম হাত নাচ বোচা টনি । সিআইডির এক ইন্সপেক্টর এদের বিরুদ্ধে তদন্ত করলেও ওপর মহলের নির্দেশে সে আর বেশিদূর এগো তে পারেনি।
কিন্তু স্যার, ছাপোষা শাহীনূরকে অপহরণ করে লোকটার কী লাভ? তানিয়া জিজ্ঞেস করে।
লাভ আছে। মেজর বলল, ফাইইম ফাইয়াজি অত্যন্ত নোংরা লোক। লোকজন অপহরণ করে ইট ভাটায় বেঁধে রেখে বিনে পয়সায় খাটায়।
ছি!
সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব বললেন, এত ভালো একটা ছেলে। সে কি না কিডন্যাপড হল।এখন কী করবি রে শ্যামল?
প্রোফেসর আশরাফি বললেন, একটা কিছু তো করবই । আফটার অল, আই অ্যাম আ সাইনটিষ্ট। যথেষ্ট ক্লু পাওয়া গেছে। প্রথমত: ফাইইম ফাইয়াজির গাজীপুরের বাড়ির খোঁজখবর নিতে হবে। মেজর বলেছে, ফাইইম ফাইয়াজির মূল আস্তানা হল -গাজীপুরের শালবনে একটি পরিত্যক্ত সিরামিক কারখানা। ম্যাপে দেখেছি জায়গাটা গাজীপুরের তেলিপাড়ায়। এই দু- জায়গায় আমাদের অনুসন্ধান চালাতে হবে। বলে উঠে পাশের রুমে চলে গেলেন। একটু পরই ফিরে এলেন সেই অ্যান্টিম্যাটার জেনারেটর ডিভাইস বা গোলাপি রঙের ফুল আঁকা টিনের ট্রাঙ্ক নিয়ে। সোফায় বসে এলজি অপটিমাস দিয়ে ফারহান- এর ছবি তুললেন। তারপর গোলাপি ট্রাঙ্কটা খুলে কী সব করলেন- ওটা থেকে কমলা রশ্মি বেরিয়ে সামনেই অবিকল দ্বিতীয় এক ফারহান তৈরি হল ।
তানিয়া তাবাসসুম চাপা আর্তস্বরে বলল, ও স্যার, এটা কে?
প্রোফেসর আশরাফি হেসে বললেন, আরে এ হল ফারহান- এর অ্যান্টি ম্যাটার । ওর নাম দিলাম: ফারহান -টু। ও আজ গাজীপুরের তেলিপাড়া শাল জঙ্গলে এক্সপিডিশান চালাবে।
কি করবে ও?
গাজীপুরের শাল জঙ্গলে এক্সপিডিশান চালাবে। ইন ফ্যাক্ট, ফারহান -টু হল টোপ। আমার প্ল্যান হল, ফাইয়াজির লোকেরা যেন ওকে কিডন্যাপ করে ইটভাটায় নিয়ে যায়। তাহলে শাহনূরের একটা খোঁজ পাওয়ার আশা আছে।
ওহ্। গ্রেইট।
এবার শান্তর দিকে তাকিয়ে প্রোফেসর আশরাফি বললেন, শান্ত।
জ্বী। স্যার।
তুমি তোমার বাইকে করে ফারহান -টু কে গাজীপুর পৌঁছে দাও । তারপর ওকে বাসস্টপে নামিয়ে দেবে।
ওকে স্যার। বলে শান্ত উঠে দাঁড়ায়। ওর পিছন- পিছন ফারহান-টু হাঁটতে থাকে। অবিকল ফারহান যেন। ঘুরে দাঁড়ানোর ভঙ্গি, হাঁটার ধরন। পরনে ফারহানের মতোই কালো থ্রিকোয়ার্টাস। ‘সামার অভ সিক্সটি নাইন’ লেখা নীল গেঞ্জি । তার ওপর শাদা শার্ট। পায়ে সাদা জাম্প কেডস।
প্রোফেসর আশরাফি এবার আবারর পাশের রুমে গেলেন। একটু পর রুম থেকে বেরিয়ে কালো রঙের একটি ছোট্ট ভালুকছানা সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব- এর দিকে ক্যাচ ছুড়ে দিলেন। ক্যাচ ধরে সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব বেকুব বনে গেলেন।
লিটু।
বল।
তুই এই ভালুক ছানা নিয়ে এখনই তেলিপাড়া যা। জায়গাটা জয়দেবপুর চৌরাস্তা ছাড়িয়ে ঢাকা- ময়মনসিংহ রোডে। গাড়ি থেকে শালবনে ভালুক ছানা ছুড়েই সোজা এখানে চলে আসবি। ব্যস। কম্পিউটার থেকে তেলিপাড়ার গুগুল ম্যাপের প্রিন্ট বার করেছি। এই যে ম্যাপ, নে।
ম্যাপ আর ভালুকছানা নিয়ে সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব বললেন, এই ভালুকছানা দিয়ে কি হবে রে?
প্রোফেসর আশরাফি বললেন, আসলে এটা হল রোবোটিক্স মানে ... রোবটস দ্যাট ইমুলেইট অর স্টিটিমিউলেট লিভিং বায়োলজিক্যাল অর্গানিজমস মেকানেক্যালি অর ইভেন ক্যামিকেলি। এই ভালুকছানা রোবোটিক্স আর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কম্বিনেশন । এটা ফাইইম ফাইয়াজির সিরামিক কারখানায় হানা দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করবে ।বদমাস লোকটাকে শায়েস্তা করা দরকার।
ওহ।
সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব শ্যামল, এই পুচকেটা গড ফাদারের আখরায় আতঙ্ক সৃষ্টিকরবে? এটা কে তো গুলি করলেই ফুটো হবে যাবে।
প্রফেসর হাসলেন। আরে না, না। গ্রেনেড ছুড়লেও এর কিছু হবে না।এটা বিশেষ ফাইবার দিয়ে তৈরি। শাল জঙ্গলে ছেড়ে দিলে ওটা ধীরে ধীরে আরও বড় হবে। ওসব পরে দেখবি। সব রেকর্ড করে রাখবে। এখন যা তো । আজ শুক্রবার। রাস্তা ফাঁকা। একটানে এটা তেলিপাড়ায় রেখে আয়। কুইক।
সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব চলে গেলেন।
প্রোফেসর আশরাফি বললেন, এবার তানিয়ার দিকে তাকিয়ে বললেন, তোমার আর ফারহানের পার্ট একটু রিক্সি তানিয়া। তোমাদের সিংহের গুহায় ঢুকতে হবে।
তানিয়া বলল, রিক্সি হলেও করব। শাহীনূর শ্রদ্ধা করত। আর ফারহানও সাহসী।
গুড।
স্যার আমি স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অভ অ্যাবারডিন- এ পড়ার সময় ওখানকার মাউন্টেনিয়ারিং ক্লাবের সদস্য ছিলাম। স্কটল্যান্ডের গ্রামপিয়ান মাউন্টেইনে উঠেছি বলে দস্যি মেয়ের খেতাব জুটেছিল।
ওকে, তাহলে তুমি চ্যানেল ফর্টি নাইনের রিপোর্টারে ছদ্মবেশে গাজীপুরে ফাইয়িম প্যালেস- এ যাবে। আর ফারহান যাবে ক্যামেরাপারসন হিসেবে। মেজর বলল, ফাইয়িম প্যালেসটা গাজীপুরের উত্তর ছায়াবীথি সড়কে গাজীপুর ডিসট্রিক্ট কোর্টের কাছে। যদি একসেস পাও তো ভালো। নইলে ফিরে এসো। তখন অন্য ব্যবস্থা করব। ফাইইম ফাইয়াজির ইন্টারভিউ নেবার চেষ্টা করবে। দেখ লোকটাকে ভজিয়ে তেলিপাড়া সিরামিক ইন্ড্রাষ্টি ভিসিট করতে পার কিনা। এখন তোমরা আমার সঙ্গে এসো । বলে প্রোফেসর আশরাফি পাশের রুমে গেলেন। রুমে লম্বা একটি টেবিল। টেবিলের ওপর গেজেট, ডিভাইস আর নানান ইলেকট্রনিক পার্টস।দেয়ালে ওয়াল ক্যবিনেট। ক্যাবিনেট থেকে একটা ডিভি ক্যামেরা বের করে ফারহানকে দিলেন প্রফেসর। বললেন, এটা তুমি রাখ। আর তানিয়া তুমি এই ডিভিইসগুলি রাখ। বলে একটা ড্রয়ার থেকে দুটো কালো রঙের ছোট্ট ডিভাইস দিলেন। বললেন, এগুলি গাজীপুরে ফাইয়িম প্যালেস আর তেলিপাড়ার সিরামিক ইন্ড্রষ্ট্রির ভিতরে কোথায় গোপনে রেখে দেবে। এই ডিভাইসগুলি অত্যন্ত পাওয়ারফুল। অডিও আর ভিডিও ট্রান্সমিট করবে। ফাইয়াজীর অপকর্মের প্রমান পেলে সরাসরি প্রাইমিনিষ্টারের সঙ্গে কথা বলব। আর এই মোবাইলটায় তোমার সিম ইনসার্ট করে নাও। বলে তানিয়াকে একটা নকিয়া এক্স-টু মোবাইল সেট দিলেন।
এটা কি স্যার?
এটা আসলে একটা লেজার গান। বুঝেছ? বিপদে পড়লে এই হ্যাশ বাটন প্রেস করবে।
ওকে, স্যার।
তানিয়ার পরনে কালো শার্ট আর কালো জিন্স। শার্টের কলারে ক্লিপ দিয়ে কী একটা আটকে দিয়ে প্রফেসর বললেন, সবচে ইম্পটেন্ট হল এটা । এটা মাইক্রোফোন। অন করাই আছে। তোমার সামনে কথাবার্তা যা তা সবই আমি শুনতে পাব। ওকে। তাহলে তোমরা অভিযানে বেরিয়ে পড়।
চল । ফারহান। বলে তানিয়া ব্যাগ কাঁধে তুলে নিল।
শোন, গাড়ি নিও না। ওরা সাসপেক্ট করবে। বাসে যাও।
ওকে স্যার।
ওরা ফাইয়িম প্যালেস পৌঁছতে দশটা বাজল। সাদা গেট। ধাক্কা দিতেই গাট্টাগোট্টা চেহারার এক লোক বেরিয়ে এল। ন্যাড়া মাথা গায়ের রং তামাটে। মুখের বসন্তের দাগ। সবুজ ফুলহাতা গেঞ্জির ওপর নীল শার্ট। জলদস্যুদের মত বাঁ চোখে কালো কাপড়। এই কি চোখ কানা ফাত্তাহ কিনা কে জানে। লোকটা কর্কক কন্ঠে বলল, কি চাই?
তানিয়া বলল, আমি ফারহাত জেরিন। চ্যানেল ফর্টি নাইনের রিপোর্টার। মিস্টার ফাইয়াজির ইন্টারভিউ নিতে এসেছি।
ওকে। ওয়েট। বলে লোকটা চলে যায়। একটু পর ফিরে এসে গেট খুলে ভিতরে ঢোকার ইঙ্গিত করল সে। গেটের ওপাশে চেইন দিয়ে বাধা সাদা রঙের একটি আমেরিকান বুলডগ। ওদের দেখে হিং¯্র আক্রমানত্মক ভঙ্গিতে ঢেউ ঢেউ করতে লাগল । ওপাশে বড় একটি লন। বাঁ পাশে টেনিস কোর্ট। সুইমিংপুল। ডান পাশে সাদা রঙের দোতলা রাজপ্রাসাদ। পোর্টিকোয় সিলভার রঙের একটি হ্যামার এইচ থ্রি। সিঁড়ি পেরোলে নীল কার্পেট মোড়ানো বিশাল ড্রইংরুম। মাঝখানে কালো রঙের ঢাউস সোফা সেট। দেয়ালে তুয়ার ঢাকা মাউন্ট কিলিমানজারোর ছবি। বাঁ পাশে বাঁকানো সিঁড়ি উঠে গেছে। সিঁড়ির গোড়ায় ধূসর কোট পরা ঢ্যাঙা মতন একটা লোক দু’পা ফাঁক করে ফিলমি কায়দায় দাঁড়িয়েছিল। চোখে সান গ্লাস। কোঁকড়া চুল। ফরসা। তবে নাক চ্যাপ্টা। এ কি নাক বোচা টনি? বাইরে বুলডগটা ভয়ঙ্করভাবে ডাকছে। নাক বোচা টনি কোটের পকেটে হাত ঢুকিয়ে দৌড়ে বেড়িয়ে গেল। তানিয়া ঝুঁকে কালো রঙের ডিভাইসটা সোফার নীচে রাখল।
একটু পর ওরা সিঁড়ি দিয়ে সুমো রেসলারদের মতন দেখতে বেঁটে মতন হলদে রঙের থলথলে একটা লোক কে নামতে দেখল। ফাইইম ফাইয়াজি ? লোকটার চুল ছোট ছোট করে ছাঁটা। পরনে লাল ড্রাগনের ছবি আঁকা হলদে হাওয়াই শার্ট আর সাদা হাফ প্যান্ট। হাঁটার সময় লোকটার বুকের চর্বি কাঁপছে। চোখ দুটি কুতকুতে । গলার নীচে গলকম্বর। দেখলেই বোঝা যায় লোকটা অবাঙালি।
সালাম স্যার। বলে তানিয়া ও ফারহান উঠে দাঁড়াল।
ফাইইম ফাইয়াজি গদগদ কন্ঠে বলল, বসুন, বসুন। বলে সোফায় বসল লোকটা।
তানিয়া বলল, আমার নাম নাসরীন জেরিন স্যার।আমি চ্যানেল ফর্টি নাইনের রিপোর্টার। আপনার একটা ইন্টারভিউ নিয়ে এসেছি।
তানিয়া বলল, স্যার এফএফ গ্রুপ অভ ইন্ড্রাষ্ট্রি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছে। বিশেষ করে এফএসআরএম লিমিটেড ইস্পাত শিল্পে তো মাইলফলক। ইন্টারভিউতে এসব প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পিছনে আপনা ভূমিকা তুলে ধরতে চাই।
ফাইইম ফাইয়াজি বলল, বেশ বেশ। সেটা করতে হলে তো আপনাকে আমার কাজ দেখতে হবে।
অবশ্যই। মনে মনে তানিয়া বলল স্যার সব শুনতে পাচ্ছেন তো?
ফাইইম ফাইয়াজি বলল, গাজীপুরের তেলিপাড়ায় আমি একটা চিপ সোলার প্যানেলের ইন্ড্রাষ্ট্রি দিয়েছি। আগে সেটা অ্যাবানডোনেড সিরামিক ইন্ড্রাষ্টি ছিল। বাংলাদেশে সৌর শক্তিতে রেভুলুশন ঘটিয়ে দেব। ওটা তো দেখতে হবে। তবে কারখানায় আমি ক্যামেরাম্যান এলাও করিনা। ওই ছেলে যাবে না।
ঠিক আছে স্যার, ও যাবে না। বলে অভাবিত সাফল্যে আনন্দিত তানিয়া ফারহানকে চোখে ইঙ্গিত করে।ফারহান কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠে ঘরের বাইরে চলে আসে। তারপর গেটের বাইরে এসে রিকশা নেয়। প্রফেসর আশরাফিকে কে ফোন করে। প্রফেসর বললেন, শোন ফারহান। শান্ত, এখনও গাজীপুর বাস স্টপেই আছে। এই মাত্র ফারহান- টু কে বাস স্টপে নামিয়ে দিল। ওকে আমি এখুনি ফোন করছি। ও তোমাকে তুলে নেবে।
ওকে স্যার । বলে ফারহান ফোন অফ করে দেয়।
রিকশার পাশ দিয়ে একটা সিলভার রঙের হ্যামার এইচ থ্রি হেলে দুলে চলে যায়। ফাইইম ফাইয়াজি নিজেই ড্রাইভ করছে। পাশে তানিয়া তাবাসসুম। চোখ কানা ফাত্তাহ এবং নাক বোচা টনি বসেছে পিছনে।
গাজীপুর বাস্টস্ট্যান্ড বেশ ভিড়। ফারহান দূর থেকে শান্তকে দেখল। ফারহান রিকশা থেকে নেমে টের পায় লাল গেঞ্জি পরা মাঝবয়েসি এক লোক ওকে অনুসরণ করছে। ও দ্রুত শান্তর বাইকে উঠে পড়ে। ভিড়ের মধ্যে লাল গেঞ্জি পরা মাঝবয়েসি অনুসরণ কারী ফারহান- টু কে অনুসরণ করতে থাকে। ফারহান- টু তেলিপাড়ার বাসে উঠল। দৃশ্যটা দেখে ফারহান মুচকি হাসল।
ওদিকে সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব কালো ভালুক ছানাটি ঢাকা ময়মনসিং সড়কে তেলিপাড়ার শাল জঙ্গলের পাশে গাড়ি থেকে ছুড়ে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। দেখতে দেখতে ভালুক ছানাটি বড় হয়ে বিশাল একটি রোমশ ভালুকে পরিনত হল। তারপর ওটা শাল জঙ্গলের ভিতর দিয়ে এগোতে লাগল ...
হ্যামারটা ঢাকা- ময়মনসিংহ রোডে ছুটছে । একটু পর বাঁ দিকে বাঁক নিল ফাইইম ফাইয়াজি । সরু পিচ রাস্তা। দু’পাশে শালবন । ফাইইম ফাইয়াজি অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে। তানিয়াকে একবার বলছে নাসরীন। একবার জেরিন। ফাইইম ফাইয়াজিরা নাকি ঢাকার আরমেনিয়দের বংশধর। পূর্বপুরুষ জোসেফ মার্টিন ছিলেন অত্যন্ত ধনী । ঢাকায় টমটমের প্রচলন তার হাত দিয়েই নাকি। উনিশ শতকের শেষ দিকে ফাইইম ফাইয়াজির দাদা ইসলাম ধর্মে কনভার্ট হয়েছিল। পিছনে কার মোবাইল ফোন বাজল । একটু পর চোখ কানা ফাত্তাহ বলল, বস, ডাক্তার ওরা ইটজিক ঢাকা এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেছেন। হেলাল আর রীতা তাকে রিসিভ করতে গেছে।
ওকে। ফাইন, ফাইন।
‘ওরা ইটজিক’ শব্দটা খট করে তানিয়ার কানে বিধঁঁল। নামটা ইহুদি । স্কটল্যান্ডে ইউনিভার্সিটি অভ অ্যাবারডিন- এ ওরা ইটজিক নামে এক ইহুদি প্রফেসর তানিয়াদের আর্থ সায়েন্স পড়াতেন । মহিলার বাড়ি তেল আবিব।
একটু পর দূর থেকে এফএফ গ্রুপ লেখা লাল রঙের একটি লোহার গেট দেখা যায়। দু’পাশে উঁচু আস্তরহীন ইটের দেয়াল। ওপরে কাঁটা তার। ইলেকট্রিফায়েড বলে মনে হল। দেওয়ালের ওপাশে ইউক্যালিপটাস গাছের সারি। দূরে ধোঁওয়া। কিসের? ইট ভাটা নয়তো? হর্ন দেবার পর গেটটা খুলে যাচ্ছে। হ্যামারটা ভিতরে ঢোকাতে ঢোকাতে ফাইইম ফাইয়াজি হে হে করে হেসে বলল, এই গেটের ওপাশে বাংলাদেশে প্রাইমিনিস্টারও একসেস পায় না।
নিরীহ কন্ঠে তানিয়া জিজ্ঞেস করল, কেন স্যার?
কেন? দেখবে। আগে ভিতরে চল। মূল আস্তানায় এসে লোকটার হাবভাব কেমন বদলে গেছে। জিন্সের পকেটে লেজার গানটা আছে।তানিয়া আলতো করে স্পর্শ করে। একজন গার্ডের হাতে চেইনে সাদা রঙের একটা আমেরিকান বুলডগ। কুকুরটা হিং¯্র আক্রমানত্মক ভঙ্গিতে লাফাচ্ছে । গার্ডদের ড্রেস কালো। গেটের একপাশে গার্ডরুম মনে হল। সামনে কনক্রিটের রাস্তা। দু’পাশে ঝাউগাছ। তারপর জায়গাটা ফাঁকা। সেখানে একটি ফোয়ারা । তারপর একতলা লাল সিরামিক ইটের বিল্ডিং। পোর্টিকোয় হ্যামার এইচ থ্রিটা থামালো ফাইইম ফাইয়াজি। তারপর দরজা খুলে একলাফ দিয়ে নামল। পোর্টিকোয় বেশ ক’টা গাড়ি। সব মনে রাখতে। পরে প্রফেসর জিজ্ঞেস করতে পারেন ... একটা কালো রঙের নিশান সাফারি, একটা সিলভার কালারের নিশান পেট্রোল, লাল রঙের মিতসুবিশি ল্যান্ড রোভার। অ্যাশ কালালের টয়োটা প্রাডোও আছে একটা। চোখ কানা ফাত্তাহ কে ফাইইম ফাইয়াজি বলল, এই ফাত্তাহ, তুমি এখন একবার আন্ডারগ্রাউন্ড প্ল্যান্টে যাও।
চোখ কানা ফাত্তাহ চলে যায়। কীসের প্ল্যান্টে? শাহীনূর কি এখানে বন্দি? ফাইয়াজি লোকজন অপহরণ করে ইট ভাটায় বেঁধে রেখে বিনে পয়সায় খাটায়। পিছনে ইটভাটা। ফাইয়াজির নয়তো।
কয়েক ধাপ সিঁড়ির পরই ছোট্ট একটি রিসিপসন রুম। ডান পাশে কাঁচের স্লাইডিং ডোর । ফাইইম ফাইয়াজি ভিতরে ঢুকল। পিছন পিছন তানিয়া। নাক বোচা টনি অবশ্য ভিতরে ঢুকল না। বেশ বেশ বড় একটা হলরুম। প্লাস্টিকের টেবিল ঘিরে স্টিলের চেয়ার। ওপাশে দরজা। ইংরেজিতে লেখা :‘কিচেন’ । ক্যান্টিন মনে হল। ওপাশের দেয়ালে কাঁচ । দূরে ফ্যাক্টরির শেড দেখা যায়। সবুজ রঙের শেডের ওপর লেখা: এফ এফ গ্রুপ । দু’পাশে আস্তর হীন ইটের দেয়াল। এ পাশে বাগান। সূর্যমুখি ফুলের ঝাড়। টেবিল টেনিস কোর্ট। সুইমিংপুল। লন। ডান পাশের বিল্ডিংটা ডরমিটরি মনে হল। হেলিপ্যাড। দেখে মনে হয় ট্যুরিস্ট রিজর্ট। ভূমিদস্যুটা ভালোই টাকা ইনভেস্ট করেছেন। কিন্তু, ইহুদি মহিলা ডক্টর ওরা ইটজিক-এর সঙ্গে এই ভূমিদস্যুর কী সম্পর্ক?
কাঁচের দেয়াল ঘেঁষে এক সেট সোফা। সামনে কাঁচের টেবিল। তার ওপর লাইটার, রিমোট ও হলুদ রঙের একটি কাঠের বক্স। বক্সের ওপর লেখা: আরোমা দ্য সান আনড্রেস। বাক্স থেকে একটা খয়েরি রঙের সিগার বের করে ফাইইম ফাইয়াজি সোফায় বসল। ঝুঁকে লাইটার তুলে নিয়ে ধীরে ধীরে সিগার ধরালো। তারপর তানিয়া কে বসতে ইঙ্গিত করল। কড়া ধোঁওয়া নাকে নিতে নিতে তানিয়া বসতে বসতে ওপাশে দেয়ালে বড় একটি স্ক্রিন দেখতে পেল। স্ক্রিন কেন?
ফাইইম ফাইয়াজি জিজ্ঞেস করল, কেমন লাগচে তোমার নতুন ওয়ার্ক প্লেস নাসরীন?
তানিয়া বলল, নতুন ওয়ার্ক প্লেস মানে?
আহা এই প্ল্যান্টে কত কাজ।বলে একমুখ নীল ধোঁওয়া ছাড়ল।
এই প্ল্যান্টে কত কাজ তো সো হোয়াট? চমৎকার অভিনয় করে তানিয়া বলল। স্যার নিশ্চয়ই সব শুনে হাসছেন।
ফাইইম ফাইয়াজি বলল, আহা জেরিন ! অত গিরবা দেখাও কেন? ফাইয়াজী তোমায় ভালো বেতন দিবে। ইক লাখ। মান্থলী।
এক লাখ! বলেন কী স্যার। তা আমাকে কী করতে হবে?
তোমাকে এই ক্যান্টিনে কাজ করতে হবে।
তানিয়া চারিদিকে তাকিয়ে বলল, ক্যান্টিনে বেশ পরিস্কার। ওকে স্যার ডান।
কিচেন কফি বানাবে রিচার্ড । তুমি সার্ভ করবে। এই যে দেখ এরা মাটির তলা থেকে উঠে এসে এখানে কফি খাবে। বলে টেবিলের ওপর থেকে রিমোট তুলে চাপল ফাইয়াজি। তানিয়া অবাক হয়ে দেখল- একটা বড় হলরুম। অনেক গুলি প্ল্যাটর্ফম। লোহার সিঁড়ি। মোটা মোটা পাইপ। ফিডওয়াটার পাম্প। হলরুমে একদল সাইনটিষ্ট কাজ করছে মনে হল। মাথায় হালকা নীল কাভার। পরনে সাদা অ্যাপ্রোন। মুখে মাস্ক। তানিয়া এরকম দৃশ্য মুভিতে দেখেছে। নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট? ও মাই গড। তানিয়া টের পায়, ওর শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে।ও জিজ্ঞেস করে, স্যার ওরা কি অষুধ বানাচ্ছে?
ফাইইম ফাইয়াজি হা হা হা করে হেসে উঠল।
তখনই সাইরেন বাজল।
কি ব্যাপার? বলে ফাইইম ফাইয়াজি চুরুট ফেলে কাঁচের স্লাইডিং ডোরের দিকে দৌড়ে গেল। তানিয়া দ্রুত পকেট থেকে ছোট ডিভাইসটা বের করে ঝুঁকে সোফার নীচে রাখল ।তারপর শার্টের কলারের কাছে ঝুঁকে ফিসফিস করে তানিয়া বলল, স্যার, মনে হচ্ছে মাটির তলায় অ্যাটমিক প্ল্যাট। এটমিক রিএকটর মনে হচ্ছে স্যার। ইউরেনিয়াম প্রসেস হচ্ছে কিনা বুঝতে পারছি না। আপনি স্যার এখুনি প্রাইমিনিষ্টারের সঙ্গে কথা বলুন।
একটু পর ফাইইম ফাইয়াজি কেন্টিনে এল। মুখ গনগনে লাল। তার পিছনে নাক বোচা টনি ফারহান টু-র চুল ধরে টানছে। ফাইইম ফাইয়াজি রেগে মেগে কাঁই হয়ে বলল, তখনই দেখে বুঝেছিলাম স্পাই।
তানিয়া উঠে দাঁড়াল। বলল, ও চ্যানেল ফোর্টি নাইন এ নতুন রিক্রট স্যার। স্পাই হবে পারে। স্যার, প্লিজ ওকে শুট করুন।
ফাইইম ফাইয়াজি হাত বাড়ায়। নাক বোচা টনি কোট পকেট থেকে একটি পিস্তল (সম্ভবত কোল্ট) বের করে দেয়।
ফাইইম ফাইয়াজি দেরি না করে ট্রিগার টিপল। ফারহান টু লুটিয়ে পড়ল। আশঙ্কা ছিল -অ্যান্টি ম্যাটারের রক্ত পড়বে না । রক্ত দেখে তানিয়া হাততালি দিল। আবার সাইরেন বাজল। কি ব্যাপার এসব হচ্ছে কি? ফাইইম ফাইয়াজি চিৎকার করে ওঠে।
ঐ যে স্যার দেখুন। নাক বোচা টনি বলে। ওরা কাঁচের দেয়ালের সামনে চলে আসে।দূরে বিশাল একটি কালো রোমশ ভালুক। আস্তর হীন ইটের দেয়াল ভেঙে ঢুকে পড়েছে। আশ্চর্য! কালো রঙের ভালুকছানা এত বড় হল কখন? মনে পড়ল -রোবোটিক্স আর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কম্বিনেশন ।এর গ্রেনেড ছুড়লেও কিছু হবে না। বিশেষ ফাইবার দিয়ে তৈরি।রোবাটটা এগোতে লাগল। ফাইইম ফাইয়াজি মোবাইল ফোনে কাকে যেন বলল, জামশেদ, কুইক। গার্ডদের বল গার্ডরুম থেকে এম সিক্সটিন রাইফেল আর গ্রেনেড লাঞ্চার বের করতে। বলেই ফাইইম ফাইয়াজি আর নাক বোচা টনি ছুটল স্লাইডিং ডোরের দিকে।
তানিয়া দৌড়ে একটা স্টিলের চেয়ার তুলে কাঁচের ওপর ছুড়ে মারল। ঝনঝন শব্দে ভেঙে পড়ল। কাঁচের ওপাশে কংক্রিট। তারপর লন । ডান পাশে ডরমিটরি আর হেলিপ্যাড। ওখানে চোখ কানা ফাত্তাহ কে গ্রেনেড লাঞ্চার হাতে ছুটতে দেখল তানিয়া। গ্রেনেড লাঞ্চার কোন্ ছবিতে দেখেছিলাম? মনে পড়ছে না। চোখ কানা ফাত্তাহ কালো রোমশ ভালুকটা তাক করে গ্রেনেড ছুড়ল। ভয়ানক বিস্ফোরণ হলেও রোবোটিক্স ভালুকটা ধাক্কা খেল কেবল। পরের গ্রেনেডটা মিস হয়ে দেয়ালে আরও বড় ফাটল তৈরি করল। সুইমিংপুলের পাশে তদক্ষণে দশ বারো জন গার্ড মিলিটারি কায়দায় পজিশন নিয়েছে। ফাইইম ফাইয়াজি -এর হাতে রাইফেল।
তানিয়া দৌড়ে ডান দিকে যায়। তারপর টার্ন নিতেই পোর্টিকো। এ দিকটায় লোকজন নেই। ও দ্রুত হ্যামার এইচ থ্রি তে উঠে পড়ে। তখনই খেয়াল করেছিল ইগনিশন কি। ফাইইম ফাইয়াজি এখানে ভীষণ কনফিডেন্ট। তানিয়া দরজা বন্ধ করে চাবি ঘুরায়। তখনই মনে পড়েছে, “এন্ড অভ ডেজ”ছবিতে আর্ন্ডল সোয়াজনাইজার গ্রেনেড লাঞ্চার ছুড়েছিল। হ্যামার দ্রুত পিছনে ব্যাক করে। তারপর মেন গেটের দিকে ছুটল। গার্ডদের কাউকে দেখা গেল না। লেজার গানটা পকেট থেকে বের করে ড্যাশ বোর্ডের ওপর রাখল। তারপর প্রচন্ড স্পিড। গেটের ওপর গেটটা দুমড়ে যায়। যদিও হ্যামারটা প্রচন্ড টাল খেল। এরপর সোজা রাস্তা। একটু পর রেয়ার ভিউ মিররে দেখে পিছনে লাল রঙের মিতসুবিশি ল্যান্ড রোভার। রাইফেল দিয়ে ফায়ার করছে। এই রে এখন টায়ার পাংচার হলেই গেছি। বাঁ হাতে লেজার গানটা তুলে পিছন দিকে আন্দাজে বাটন টিপল। ঘন হলদে রে বেরুলো মনে হল। লাগল কিনা কে জানে। একটু পর রেয়ার ভিউ মিররে দেখে তাকিয়ে দেখে মিতসুবিশি উল্টে পড়ে আছে। কমলা রঙের আগুন আর ধোঁওয়া।
আকাশে হেলিকপ্টার। সেনাবাহিনীর ? তাহলে স্যার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ...

প্রোফেসর আশরাফি তানিয়াকে বললেন, তুমি যখন বললে, স্যার, মনে হচ্ছে মাটির তলায় এটমিক রি-একটর। তখনই আমি ফোন করে সরসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলি। তিনি দ্রুত সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিলেন। ওরা আন্ডার গ্রাউন্ডে ইকিউজিএম বসাচ্ছিল।
কি বসাচ্ছিল স্যার? তানিয়া কফিতে চুমুক দিয়ে বলে।
ইকিউজিএম। মানে আর্থকোয়েক জেনারেটর মেশিন।
ওরা কারা স্যার ?
মোসাদ। ইজরাইলি ইন্টিলিজেন্স।
ওহ্ মাই গড। তখন নামটা জিউ বলে ‘ওরা ইটজিক’ শব্দটা খট করে কানে বিধেঁঁছিল। ।
প্রফেসর আশরাফি লেবুর শরবতে চুমুক দিয়ে বললেন, বাংলাদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে আগেই তথ্য ছিল। মরক্কো থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত ইজরাইল ‘লাইন অভ অ্যাটাক’ তৈরি করার জন্য আর্থকোয়েক জেনারেটর মেশিন বসাচ্ছে। উদ্দেশ্য- মুসলিম রাষ্ট্র ধ্বংস। প্রতিটি দেশেই এমন কিছু লোভী মানুষ আছে যাদের কেনা যায়। ফাইইম ফাইয়াজি তাদেরই একজন।
তানিয়া বলল, তার মানে, ফাইইম ফাইয়াজি মোসাদ এর এজেন্ট?
ডেফেনিটলি। ফাইইম ফাইয়াজি ধরা পড়েছে। উনডেড। ইন্টারোগেশন চলছে। তেলিপাড়ার আন্ডার গ্রাউন্ড প্ল্যান্টা বাংলাদেশ আর্মি টেক ওভার করেছে। বিজ্ঞানীরা প্ল্যান্টটা পরীক্ষা করছেন।
সাংবাদিক মোশতাক আন্দালিব হতাশ বললেন, বলল, ইস্ । শাহীনূরকে হারালাম।
প্রফেসর কী বলতে যাবেন-তানিয়ার মোবাইলের রিং টোন বাজল। তানিয়া কফির কাপ রেখে বলল, হ্যালো। কে? শাহীনূর? তুমি? কি ... কি ... একটু পরে ফোন অফ করে তানিয়া বলল, আসলে শাহীনূর কে ওরা কিডন্যাপ করতে পারেনি। শাহীনূর মাইক্রোতে অজ্ঞান হওয়ার ভান করে পড়ে ছিল। ওদের একজন জয়দেবপুর রোডে মাইক্রো থামিয়ে হিসি করতে নামে। দরজা খোলাই ছিল। শাহীনূর মাইক্রো থেকে পিছলে পড়ে দৌড় । জয়দেবপুরে ওর এক বোন থাকে। সেখানে চলে যায়। ও পায়ে চোট পেয়েছে। সেরে উঠলেই ও আবার স্পেস গার্ডেনে খাওয়া-দাওয়া শুরু করবে।
সবাই হেসে উঠল।
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×