একটা গ্লাসের অর্ধেকটা পানিতে ভরা। ছাগুর পোস্টঃ "গ্লাসের অর্ধেকটা পানিতে ভড়া,এটারে অর্ধেক খালি কওয়া নিষেধ"। নাস্তিকঃ "গ্লাসের অর্ধেকটা খালি, কোন পানি নাই, তাও কি মমিন বান্দারা বুঝবো না"।
শুরু হইল প্যাচাল। যে যার মত চিল্লানি। আর আমরা আমজনতাঃ "হুম গ্লাসের অর্ধেকটা পানি, বাকিটুকু খালি তবে বাতাস থাকলেও থাকতে পারে"। এই লিখলামতো ছাগু আইসা কয় আপনে নাস্তিক, নাস্তিক আইসা কয় আপনে আবাল আস্তিক।
এই পহেলা বৈশাখ আসলেই শুরু হয় ক্যাচাল। আমাদের দেশিয় সংস্কৃতির অংশ এই পহেলা বৈশাখ। এটা আমাদের বাংগালির জন্য একটি বিশেষ দিন। অস্বীকার করতে উপায় নাই যেহেতু এটা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি তাই এটি উদযাপনের সাথে ইসলামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সাথে কোন মিল নেই, এমনকি এর কিছু কিছু অংশ ইসলাম ধর্মের সাথে কন্ট্রাডিক্টরি বিশেষ করে এর কিছু উদযাপন অন্য ধর্মের রিচুয়ালগুলোর সাথে মিলে। আর এর সুযোগে কিছু ছাগু এসে পুরো পহেলা বৈশাখটাকে বর্জনের ডাক দেয়। তাদের যুক্তি
১।এটি নন মুসলিম বিশেষ করে হিন্দুয়ানি কালচার,
২। অশেষ বেলাল্লাপনা বিশেষ করে নারী পুরুষের সমবেত মেলামেশা, গান বাজনার মাধ্যমে এই দিনটি উদযাপন করা হয়।সারাদিন ধরে চরম অনৈসলামিক কাজ হয়।
এই কথা অস্বীকার করার উপায় নাই শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিমের দেশে আমাদের বেশিরভাগ মুসলমান এই দিন উদযাপন করতে গিয়ে সারাদিন এক ওয়াক্ত নামযও পড়ে না, ইসলামে নারী পুরুষের পারস্পরিক মেলামেশার মধ্যে যে বিধি নিষেধ আছে তা আমরা বেশিরভাগ মানি না, নাচ গানের উপর ইসলামের বিধি নিষেধ আছে তাও আমরা মানি না। অর্থাৎ পুরো উদযাপন প্রকৃয়ার সাথে ইসলামিক টিচিং এর সংস্পর্শ প্রায় নাই বললেই চলে।
এখন কথা হচ্ছে দোষটা কার? পহেলা বৈশাখের দিন যে নিয়মগুলো পালন করা হয়, যদি ইসলামের সাথে তা কন্ট্রাডিক্ট করে তা করতে হবে এমন বাধ্য বাধকতা কোথায়? যদি এতে আমার ইমান আকিদার ক্ষতি হয় তাহলে সবাইকে সচেতন কর এসব নিয়ম না মানতে, তা না করে পুরো দিনটাকেই কেন বাতিল করে দিতে হবে? আমি সকালে সূর্য বরন না করে বরং ফজরের নামায পরে সবার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি, পরিবারের সবাইকে নিয়ে বিশেষ খাবার খাই, এই দিনটিকে নিজেদের নববর্ষ হিসেবে পালন করার জন্য একত্রে পরিবার বা আত্নীয়স্বজন নিয়ে আনন্দ করি তাহলে অসুবিধা কই? এখন অনেকে বলবে এই দিনে আমাদের আচরন অমুসলিমদের মত হয়। হতে পারে, কিন্তু একই আচরনতো ঈদের দিনেও দেখি? ঈদের সময় আমাদের দেশের নারী পুরুষ কি সব মোমিন বান্দা হয়ে যায়? যদি না হয় তাহলে ঈদের আনন্দ আমি যেমন একজন প্রকৃত মুসলিমের মত উপদাযপন করতে পারি, পহেলা বৈশাখের আনন্দ কেন একই ভাবে একজন প্রকৃত মুসলমান হিসেবে নিজের মত পালন করতে পারবো না? আমি কেন মুসলমান হতে গিয়ে এরাবিয়ান হয়ে যাব?
এবার নাস্তিকদের ঘেউ ঘেউ নিয়ে কিছু বলি। পহেলা বৈশাখ আমার দেশিয় সংস্কৃতি।এ সংস্কৃতিতে যদি আমি আমার ধর্মের সাথে কন্ট্রাডিক্টরি কোন কিছু পাই আমি তা অবশ্যই বর্জন করব, শুধু তাই না আমার মত যারা মুসলমান আছে তাদেরকেও সতর্ক করব তারা যেন ভুল না করে। কিন্তু এতে নাস্তিকদের পাছায় আগুন লাগে কেন? তাদের যদি ইচ্ছা হয় সকালে যেয়ে সারাদিন সূর্যকে বরন করে সারাদিন সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকুক আমার কোন আপত্তি নেই, কিন্তু তারা যেমন অন্যকে আহবান করতে পারে একইভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে, তেমন আমিও পারি আমার মুসলিম ভাইদের সতর্ক করতে যেন তারা এমন কোন স্টাইলে বর্ষবরন করতে না যায় যা আমাদের ধর্মের সাথে কন্ট্রাডিক্টরি।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ছাগুরা যেমন আমাদের মুসলমান বানানোর চাইতে এরবিয়ান বানাতে চায়, তেমনি নাস্তিকেরাও আমাকে মুসলমান হতে না দিয়ে জোড় করে বাংগালি বানাতে চায়। আরে বেটা নাস্তিক আমি যদি কালকে বর্ষবরন না করি তাহলে কি আমি বাঙালি হব না? এদেশে জন্মে, বাংলায় কথা বলেও না? আর ছাগু ভাইয়েরা হায় হোসেন হায় হোসেন করে তাজিয়া মিছিল নিয়ে কারো কোন কথা নাই, আমার নবী নিজে তার জন্মদিন পালন না করলেও তার জন্মদিন নিয়ে ভন্ডপীরদের যে উতসব হয় তখন তোমরা তা নিয়ে কথা বলনা, আর পহেলা বৈশাখ নিজের মত পালন করলেই ইসলাম থেকে নাম কাটা?
আসলে দুই দলই একট্রিমিস্ট, দুই দলই সত্য মিথ্যার ধার ধারে না, তারা শুধু চায় নিজের মতাদর্শ অন্যের ওপর চাপাতে। একদল চায় আমি যেন আমার জাতি সত্ত্বা ভুল যাই, একদল চায় আমি যেন আমার ধর্ম ভুলে যাই! কিন্তু কেন?
কারন এতে ভাল হোক মন্দ হোক নিজেকে একটু জাহির করা, সমাজে সবার মাঝে নিজেকে একটু আলাদা পজিশনে পাওয়ার উদ্দেশ্যটাই থাকে আসল। সমাজে নিজের মতাদর্শের লোক তৈরি করে তাদের মাথার উপর নিজের পছন্দ অনুযায়ি ছড়ি ঘোরানই হল আসল উদ্দেশ্য। মাঝখান দিয়ে পহেলা বৈশাখ আর ইসলাম শব্দটির বানানটাই হয়তো তারা ভুলে বসে আছে সেই কথাতো তারা কাউকে জানায় না।
সবাইকে শুভ নববর্ষ। আশা করি নতুন বছর আমরা সবাই মিলে সুখে শান্তিতে কাটাতে পারবো। আল্লাহর কাছে সেই দোয়াই করি।
(উল্লেখ্য ছাগু= বকধার্মিক, অতিধার্মিক নামক একপ্রকার জীব যারা ইসলামের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করে)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ৮:৫১