somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামান্থা (প্রথম পর্ব )

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামান্থার সাথে পরিচয় হল অফিসে । মাস্টার্স পাশের পর একটা চাকুরীর ভিষন দরকার হয়ে পড়ল । পড়ার সময় বিভিন্ন পিজার দোকানে পিজা বাননোর কাজ করে দিনগুজরান করছিলাম । ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবার পর একটা ২০০৬ মডেলের পুরাতন টয়োটা কিনলাম । এরপর পিজা বানানোর কাজ ছেড়ে দিয়ে ফুড ডেলিভারী শুরু করলাম । এই দেশে যার নাই কোন গতি সে করে ফুড ডেলিভারী । এমন আরও কিছু গতিহীনের চাকুরীর মধ্যে আছে ওয়ালমার্ট, ফাষ্টফুড , বার, ইত্যাদি । আট ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে কাজ । কোন ড্রেস কোড নাই । জিন্স টিশার্ট কেডস পড়ে কাজ । কাজ কি মালটানা । ক্যাশ নেয়া সহ যাবতীয় কাজ । সব দুই ঠাংয়ের উপর দাড়িয়ে ।

ছাত্রবস্থায় এসবি করেছি । এখন করছি ফুড ডেলিভারী । মোটামুটি স্বাধীন কাজ । কোন বস নাই । সপ্তাহে চার পাচশো ডলার কামাই করা যায় । মাস শেষে নিজের খরচ বাচিয়ে মায়ের জন্য কিছু হাত খরচ পাঠানো যায় । ফুড ডেলিভারীর আর একটা মজা গভীর রাতে গাড়ী চালানো । বরফ পড়তেছে । হু হু করে বাতাস ছুটছে এরমাঝে গাড়ী চালাচ্ছি । চারিদিকে শুনশান নীরবতা অনেকটা দেশে গভীর রাতে দুরপাল্লার বাসে করে জার্নি করার মত ।

মাঝে মাঝে হরিনের দৌড়ানো দেখা যায় । হরিন গুলো দৌড়ে রাস্তা পার হয়ে বোকার মত তাকিয়ে থাকে । হেডলাইটের আলোর দিকে তাকিয়ে কিভাবে কে জানে । ক্লাশ এইটে পড়বার সময় মজিদ স্যার একদিন ক্লাসে জিগ্গেস করেছিল বলত হরিনের শত্রু কে ? আমরা ক্লাসের সবাই হাত উঠিয়ে বলতাম বাঘ ছাড় । স্যার বলত নারে হলনা । হরিনের শত্রু বাঘ না । হরিনের শত্রু হরিন নিজেই । বিষয়টার গভীরতা সেদিন বুঝিনি এখন বুঝি ।

এখানে গাজা লিগ্যাল করার পর গভীর রাতে খাবারের মানুষ বেড়ে গেছে । গাজা খেয়ে খিদা লাগে খাবার অর্ডার দেয় । আমাদের মত ড্রাইভারদের দুটো ডলার পকেটে আসে । সেদিন জুম্মার নামাজের খুৎবার আগে গাজার অপকারীতা নিয়ে বয়ান দিচ্ছিল । মনে হল একবার উঠে দাড়িয়ে বলি হুযুর গাজা খেয়ে খুদা লাগে । খুধা লাগলে খাবারের অর্ডার দেয় আমাদের পকেটে পয়সা আসে এটা মন্দ না ।
সব কথা সব খানে বলা যায়না ।

আট ঘন্টা দাড়িয়ে কাজের জব গুলো ছেড়ে দিয়ে শুধু ফুড ডেলিভারীর কাজই করছিলাম । এখানে সবাই দুতিনটা জব করে অতিরিক্ত রোজগারের আশায় । আমারো তাই দরকার হয়ে পড়ল আর একটা জবের ।

প্রতি সপ্তাহে চাকুরীর জন্য আবেদন করছিলাম । ইন্টারভিউয়ের জন্য দু একটা ডাকও পাচ্ছিলাম । ফোনে কেউ কেউ ইন্টারভিউ নিচ্ছিল । আবার অফিসে গিয়েও ইন্টারভিউ দিচ্ছিলাম । চোস্ত ইংরেজী বলতে না পারা হয়তো বড় একটা কারন । উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পড়ে এসে চোস্ত ইংরেজীর ধোপে টেকা একটু মুশকিল ।

ইন্ডিয়ান বেশ্যারা একসেনটেড চোস্ত ইংরেজী বলে আমরা পারিনা । বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ে আসা হেডমরা তারাও পারেনা । এরিমাঝে একটা রেন্টাল কারের অফিসের কাস্টমার কেয়ার থেকে ফোন এল । তারপর মেইল পাঠাল ইন্টারভিউতে যাবার জন্য । মনে মনে ভাবছিলাম ইন্টারভিউ তো দেব কিন্তু চাকুরী হবেনা ।

কোন রকম একটা জিন্সের প্যান্ট কেডস পড়ে গেলাম । ইন্টারভিউ নিল একজন সাদা । তার প্রশ্নের পর নিজেই আগ বাড়িয়ে জিগ্গেস করলাম তোমরা আওয়ারলি কত পে করবা ? ভদ্রলোক উওর দিলেন । এরপর ভদ্রলোক বললেন তুমি যার সাথে কাজ করবা আমি তাকে পাঠাই । যিনি এলেন একজন সাদা মধ্যবয়স্ক ভদ্রমহিলা । মহিলা কথা বলতেই সিগারেটের গন্ধ পেলাম । মনে মনে বল্লাম কলিগ হলে খারাপ হবেনা অন্তত সিগারেটটা একসাথে খাওয়া যাবে । ভদ্রমহিলা জানতে চাইলেন অভদ্র কাস্টমার কে কিভাবে হ্যান্ডেল করবা ?
উওরে বল্লাম দেখ, দিনে যদি তুমি একশো কাস্টমারের সাথে কাজ কর তাহলে অন্তত পাচজন পাবে অভদ্র কাস্টমার । নিজের মনে হল ভালই ইন্টারভিউ দিলাম । আবার পরে মনে হল আগেও তো দিলাম কেউ তো নেয়না ।

বাসায় ফিরে কাজের চাপে ভুলেই গিয়েছিলাম । হঠাত একদিন ফোন এল তুমি কি তোমার ওমুক ওমুক পারমিশনের কাগজ আনতে পারবা ? সেগুলো গিয়ে দিয়ে এলাম । কাগজ দিতে গেলে জানাল তোমার মেইল চেক করো ? তোমার ব্যাকগ্রাউন্ড ভেরিফিকেশনের মেইল যাবে । মেইল এল লিংকে গিয়ে তথ্য দিলাম । আবার ভুলে গেলাম । প্রায় মাস খানেক পর কল এল তুমি কি এত তারিখ থেকে জয়েন্ড করতে পারবা ? সেই শুরু ।

প্রতিদিন নুতন নুতন বিষয় শিখি কমপিউটারে । সব কাজ সফটওয়ারে । কিভাবে ক্রেডিট কার্ডে পেমেন্ট নেব, কিরে রিফান্ড করবো । কি করে ফোন ফোন আনছার করবো । কি করে ক্যাশ নেব । দিন শেষে কি করে ক্যাশ মেলাবো,তারপর সব পেমেন্টের হিসেব প্রিন্ট আউট দেব । এই ডিপামেন্টে সব মহিলা । আমি একমাত্র সবেধন নীলমনি পুরুষ । সবার সাথে পরিচয় হল । সুপারভাইজার মহিলা সময়মত ঠিকি আমাকে সিগারেট খেতে ডাকে । দুজন অফিসের বা্ইরে গিয়ে সিগারেট খাই ।

প্রায় এক সপ্তাহ পর পরিচয় হল সামান্থার সাথে । হাত এগিয়ে হ্যান্ডশেক করে বল্ল আমি সামান্থা । আমি বল্লাম আমি শাওন । শাওন উচ্চারন করতে ওর দাত ভাংগার অবস্থা । আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে হাসছিলাম । এই তাকানো হাসি চোখের ভেতর দিয়ে মনে মধ্যে ধাক্কা দেয় । প্রথম দেখাতেই আমি যেন সামান্থার প্রেমে পড়লাম । সামান্থা আমাকে শেখাবে কি করে সফটওয়ারে প্রতিদিনের একাউন্ট মেইন করতে হবে । সামান্থার পাশে বসে যখন কাজ করতাম তখন ওর শরীরের একটা কাচা গন্ধ আমার নাকে আসত । প্রায় চল্লিশ ছুই ছুই আমি কি করে তেইশ বছরের সামান্থার প্রেমে পড়লাম ।

সারা পৃথিবীর মেয়েদের অনুভূতি শক্তি প্রখর । যেদিন করে সামান্থার শিফট থাকে আমি মুখিয়ে থাকি ওকে দেখবার জন্য । সোনালী চুল । চোখে কালো চশমা । হাইট প্রায় আমার কাছাকাছি । সামান্থা স্যান্ডো গেন্জি টাইপের গেন্জি পড়ত তার উপর কার্ডিগেইন । নীচে জিনস বা লেগীনস । পায়ে কখনো বুট বা কেডস । সামান্য ক্লিভেজ বোঝা যেত । নীচু হলে বুকের অনেকখানী দেখা যেত । কখনো সামান্থা চেয়ারে বসে আমাকে নুতন কিছু দেখার জন্য ডাকলে আমি মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ক্লিভেজের গভীরে চোখ দিতাম । আবার দৃষ্টি সরিয়ে মনিটরে নিবন্ধ করতাম ।

চলবে ....




সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৩:৫২
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×