somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক উন্মাদ জাতীয়তাবাদী ব্যবসায়ীর কথা...(অনুবাদ)

২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১৯৮০
উপস্থাপিকা - আপনি কি ইউ এস এ-র প্রেসিডেন্ট হতে চান?
ট্রাম্প - আমি আসলে বিশ্বাস করি না যে, আমি কখনো প্রার্থী হতে পারব, কিন্তু আমি চাইব এমন কাউকে যিনি প্রেসিডেন্ট হয়ে তার দায়িত্ব পালন করবে এবং সে রকম যোগ্য লোক এই দেশে আছে।
উপস্থাপিকা - তাহলে আপনি কেন পাবলিক সার্ভিসে নিজেকে জড়িত করছেন না?
ট্রাম্প - কারণ, আমি মনে করি এটা খুব সাধারণ/গড়পড়তা জীবন, আমি চাই আমার জীবন উৎসর্গ করতে এই দেশের জন্য। কিন্তু আমি এভাবে দেখি, সাধারণ কেউ হয়তো দৃঢ় ও সঠিক মত নিয়ে আছে যদিও সেটা অজনপ্রিয়, সে হয়ত নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাবে না এমন কারো সাথে যার আসলে কোন যোগ্যতা নেই শুধু একটা বিশাল হাসি ছাড়া।

১৯৮৬
অপরা উইনফ্রে - আমি জানি, মানুষ আপনাকে নিয়ে কথা বলে, আপনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে লড়তে চান কিনা, আপনি কি কখনো ভেবেছেন?
ট্রাম্প - সম্ভবত না। কিন্তু আমি এ দেশের অবনতি দেখে ক্লান্ত।
অপরা উইনফ্রে - কেন আপনি নির্বাচনে দাঁড়াতে চান না?
ট্রাম্প - আমি মনে করি না যে, আমার সেরকম কিছু করার আগ্রহ আছে। এখন আমি যা করছি তাই আমি ভালবাসি। কিন্তু আমি এ দেশের সাথে যা হচ্ছে তা দেখে দেখে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। এবং এটা যদি আরো খারাপ হয় তাহলে আমি এ দায়িত্ব নিতে চাইব না। আমি হতাশ এটা দেখে, কীভাবে আমরা অন্যদের রাজার মত বাঁচতে দিচ্ছি, অথচ নিজেদের নয়।
অপরা উইনফ্রে - আপনি আগে বলেছিলেন, যদি আপনি দাঁড়ান তাহলে আপনি জয়ী হবেন।
ট্রাম্প - আমি জানি না। তবে আমার মনে হয় আমি জয়ী হব। কারণ, আমি আমার জীবনে কখনো হারিনি। আর আমি যদি সিদ্ধান্ত নেই তাহলে আমার জেতার খুব ভাল একটা সুযোগ আছে বলে মনে করি। আমি জানি না আমেরিকার জনগণ কী ভাবছে। আমি কোন প্রতিশ্রুতি দিতে পারব না। কিন্তু আমি একটা কথা বলতে পারি - এই দেশ অনেক গুণ বেশী উপার্জন করবে ঐ দেশগুলো থেকে যারা গত ২৫ বছর ধরে আমেরিকা থেকে সুবিধা নিচ্ছে। বিশ্বাস করুন...

১৯৮৮
সাংবাদিক - আপনি কী রকম রিপাবলিকান হিসেবে নিজেকে সংজ্ঞায়িত করবেন? ধনবান রকফেলার চেজ ম্যানহাটন রিপাবলিকান, নাকি রাজনীতিবিদ বুশ রিপাবলিকান?
ট্রাম্প - আমি আসলে মনে করি, সাধারণ জনগণের জন্য কাজ করি। ধনীরা আমাকে পছন্দ করে না। কারণ, আমি সব সময় তাদের পরাজিত করি। আর আমি জিততে চাই। আমাকে নিউ ইয়র্কের ট্যাক্সি ড্রাইভার, সাধারণ শ্রমজীবিরা পছন্দ করে।

১৯৮৮ (ট্রাম্পের প্রথম রিপাবলিকান কনভেনশন)
সাংবাদিক - আপনি আমেরিকার ফরেন পলিসি নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসে নিজস্ব মতামত তুলে ধরেছেন, তাহলে কি আপনি রাজনীতিতে আসার ক্ষেত্র তৈরি করছেন?
ট্রাম্প - আসলে আমি এই দেশকে গভীরভাবে অনূভব করি। আমি এই দেশকে ভালবাসি।

১৯৮৯
ট্রাম্প - আমার অর্থনীতির কমন সেন্সে বলছে, একটা বিস্ফোরণ হবে। এই দেশ প্রতি বছর যেখানে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার হারাচ্ছে, অথচ অন্য দেশ বিলিয়ন ডলার আয় করছে। একটা বিস্ফোরণ হতে হবে এবং এটা শুরু হবে এখান থেকে। আমি জানি, কিন্তু প্রশ্ন হল কখন?
সাংবাদিক - আপনি কি প্রেসিডেন্ট হিসাবে লড়তে চান এবং দেশ চালানোর সাহস আছে?
ট্রাম্প - আমি বেশী করে চাইব অন্য কেউ এই দেশ চালাক। কিন্তু আমি জানি না, সে রকম যোগ্য অন্য কেউ আছে কিনা। এই দেশের দরকার ব্যপক চিকিৎসা।
সাংবাদিক - তাহলে আপনিই কেন সেই চিকিৎসক হচ্ছেন না?
ট্রাম্প - আমি এখন যা করছি(ব্যবসা) তাই আমি ভাল ভাবে করছি। কিন্তু প্রেসিডেন্সি বোধহয় না করলেই ভাল হবে। তবে আমি আশা করি যোগ্য লোক আসবে কখনো যদিও আমি দেখছিনা...



১৯৯১ (ট্রাম্প অরগানাইজেশন)
* আমি বুঝলাম না, কেউ ইউ এস গর্ভমেন্টকে কেন আদালতে নিচ্ছে না। ১০ বছর ব্যবসা করার জন্য যে ট্যাক্স দেয়া হত তা স্বল্প মাত্রার ছিল। অনেক স্বল্প আয়ের লোকজন-এর সুবিধা হত। অথচ এখন নীতি বদলের কারণে ২ বছরের মধ্যে সেই ট্যাক্স দিতে হবে। যে কারণে, অনেকে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে।

২০০৬
* এখন আমেরিকাকে কেউ সম্মান করছে না। আমরা এমন এক যুদ্ধে(ইরাক) আছি যা দরকার ছিল না। সাদ্দাম হোসেন টুইন টাওয়ারে হামলা করেনি, তার কোন সংশ্লিষ্টতাও ছিল না এমনকি তার কাছে কোন মারণাস্ত্রও পাওয়া যায়নি।

২০০৭
* কেউ কথা বলে না আমেরিকার সৈন্যরা কেন হাত পা হারিয়ে দেশে ফেরত আসছে। তাদের পরিবারের সদস্যদের কান্না আমাকে ব্যথিত করে।

২০১১
* চায়না আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। কেউ এটা নিয়ে ভাবছে না। আমাদের পণ্য ওদের চেয়ে ভাল।

২০১৪
* কিছু দেশ তেলের মূল্য ইচ্ছাকৃত ভাবে কমিয়ে দেয় আবার বাড়িয়ে দেয়, অথচ এ দেশের কেউ এটা কমাতে বাধ্য করতে পারে না।

২০১৫ (প্রেসিডেন্সির জন্য প্রথম ঘোষণা)
* আমাদের দেশ ভয়ানক সমস্যার মধ্যে আছে। আমাদের ট্রিলিয়ন ডলার লস হচ্ছে। অথচ চায়না এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ, আমাদের নেতারা দুর্বল এবং অযোগ্য। চীনারা আমাদের চাকুরি নিয়ে নিচ্ছে। অন্য কোন দেশ আমাদের নেতাদের সম্মান করে না। অন্য কোন দেশ আমাদের দেশকে সম্মান করে না। এটা খুবই সহজভাবে সমাধান করা যায় যদি শক্তিশালী অর্থনীতি থাকে।
* আফগানিস্তানে আমাদের সৈন্যরা এখনও আছে। তারা সেখানে স্কুল বানায়, আর আফগানরা ধ্বংস করে। বার বার স্কুল তৈরি করে আর ধ্বংস হয়। অথচ আপনি ব্রুকলিন, আইওয়া তে স্কুল পাবেন না। কারণ, আমাদের অর্থ আমরা ব্যয় করছি অন্যদের জন্য।
* আমরা চায়নার সাথে ব্যবসায়িক ভাবে পারছি না। অথচ আমি সব সময় চায়নাকে হারিয়ে এসেছি। আমরা জাপানকে হারিয়েছিলাম। এখন তারা আমাদের অর্থনীতিতে হারাচ্ছে। কবে 'শেভরোলেট' দেখেছেন টোকিওতে কেউ মনে করতে পারবেন? আমরা যখন মেক্সিকোকে বর্ডারে হারিয়েছিলাম, তারা আমাদের দেখে হাসছিল। এখন তারা আমাদের অর্থনৈতিকভাবে হারাচ্ছে। বিশ্বাস করুন, তারা আমাদের বন্ধু নয়। আমেরিকা এখন অন্যদের সমস্যার 'আবর্জনার ভাগাড়ে' পরিণত হয়েছে।
* মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার কারণে আমাদের অনেক অর্থ ব্যয় হয়। তারা ক্রমেই ধনী হচ্ছে। আমরা তাদের কাছে হেরে যাচ্ছি।
* আমাদের বেকার সমস্যা এখন ১৮-২০% হয়ে গিয়েছে। আমাদের শত্রুরা ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে অথচ আমরা দুর্বল হচ্ছি। আমি রাজনীতিবিদদের দেখেছি আমার পুরো জীবনে। তারা কখনোই আমেরিকাকে গ্রেট বানাতে পারবে না। তাদের সে সুযোগ নেই। আমাদের সে রকম নেতা লাগবে যে আমাদের চাকুরি ফেরত আনবে, আমাদের পন্য ফেরত আনবে, আমাদের সৈন্য ফেরত আনবে। আমরা চাই এমন নেতা, যে আমেরিকাকে তার ব্র্যান্ড ফেরত আনবে। কাজেই, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে লড়তে চাই এবং আমার দেশকে আবার শ্রেষ্ঠ হিসেবে বানাতে চাই...
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১০
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×