দাস প্রথার নির্মমতা, আজো কাঁদায় প্রাণ!
ভয়ে কম্পিত হৃদয়ে মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে চলে,
পায়ে ভারী শেকল, পেছনে চাবুক ছেলে, মেয়ে, বুড়ো, যুবক . . .
ইতিহাস থেকে বর্তমান অদৃশ্য শেকল আর প্রয়োজনে আজো মিছিল দৃশ্যমান!
অফিস খুলেছে; বস বলেছে সময় মতো না এলে
চাকুরী থাকবে না!আহারে, মাকে কিভাবে অষুধ দেব?
বোনের লেখাপড়া বন্ধ হবে! পথে নেই কোন পরিবহন!
তা’বলে থামলে কি চলে? বুক ভরে দম নিয়ে হাটা দেয় দিদি. . .
হাটতেই থাকে হাটতেই থাকে, মাথার উপর গণগণে রোদ
কেউ কারো দিকে তাঁকায় না! বৃষ্টির ছাটে মিশে যায় চোখের জল
যেন সবাই সবার বিধিলিপি জানে-একই সুতোয় বাঁধা
এক অদৃশ্য মায়া আর শক্তি পায় যেন! পায়ে পায়ে হাটে সবাই...
গ্রাম পেরিয়ে, শহর পেরিয়ে মহা সড়কে বিশাল মিছিল
কিলবিল করে বাড়ছে মিছিল, দীর্ঘ হচ্ছে সকল জেলার মানুষ মহাসড়কে
দূরের ঐ ঢাকা শহরে পৌঁছাতেই হবে চাকুরী বাঁচাতে
মাকে বাঁচাতে, বোনের জন্য, দুটো অর্থের জন্য, অর্থহীন জীবনের জন্য
মৃত্যুর মিছিল কমেনি এখনো। দু’শর ঘরেই প্রতিদিনি
মিনিটে নাকি ৮ জন মরে যায়! তবু ছেড়েছে লক ডাউন
করোনায় মরলেও মরণ, না খেয়ে মরলেও মরণ
গরীবের কি ঘোড়ারোগ মানায়? তাই সবাই হাটে অনিশ্চিত গন্তব্যে।
স্বাস্থ্যবিধি! সে আবার কি? দাড়ানোর জায়গাটুকু শুধু চাই
ফেরিতে গাদাগাদি, প্রান হাতে নিয়ে লাফিয়ে ওঠা
একটা ফেরি মিস হলে তিন ঘন্টার ফের! রাতে পথে ভয়
ধর্ষন, রাহাজানি, গুম, খুন- তাই বেলা ডোবার আগেই নিরাপদ স্থান চাই!
সাংবাদিকেরা আসে। ছবি তোলে। কত রকমের ছবি
ভিডিও করে.... আগে পিছে, ডানে, বামে, উপরে নীচে
ভ্রুক্ষেপহীন এগিয়ে চলে ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত মিছিল,
ক্রীতদাস কিন্তা কুন্তে থেকে সেলাই দিদিমনি- যেন একই শেকলে বাঁধা জীবন!