বাসায় নতুন কাজের মেয়ে এসেছে। টাকা পয়সার সাথে তার একটা চাহিদা পেশ হলো স্টার জলসায় তার প্রিয় সিরিয়াল দেখতে দিতে হবে। বাসার বউ/বোন কে দেখি স্টার প্লাসের সিরিয়াল ভক্ত। ছোট ভাগ্নিটা বেড়াতে এসে সারাদিন ডুবে আছে ডোরিমনে। আমি এম্নিতে টিভি দেখার সময় পাইনা। ছুটির দিন খেলা দেখি আর বাংলাদেশী চ্যানেলের একপর্বের নাটকগুলো দেখি আর খুব বড়জোর কোন ইংলিশ মুভি ভাল লাগলে দেখি। ইদানিং রাত দশটার মীরাক্কেল দেখা শুরু করেছি। হটাৎ একদিন সকালে মনে হলো বাসার টিভিটা সবসময় দখল করে হছে ভারতীয় চ্যনেলে। অফিসে গিয়ে আলাপ করে দেখি সবার একই অবস্থা। বাচ্চা ডোরিমন দেখে, বউ/ মা স্টার প্লাসে সিরিয়াল দেখে , কাজের মেয়ে দেখে স্টার জলসা । কোথায় চলছি আমরা?
বাংলাদেশীদের বিদেশপ্রীতি নতুন কিছু নয়। ঐতিহ্যগতভাবেই নানাজাতির রক্ত বইছে আমাদের দেহে। সেই সংগে আড়াইশ বছরের দাসত্ব আমাদের মানসিকতা থেকে আত্মমর্যাদাকে কমিয়ে দিয়ে বিদেশ প্রীতি ঢুকিয়ে দিয়েছে। বিদেশের তৈরী হলেই হলো, একটা উন্নাসিক মানসিকতা ভর করে আমাদের উপর। দেশীয় বহু ভাল জিনিস হারিয়ে গেছে কদরের অভাবে। তবে সবচেয়ে বড় অগ্রাসন বোধহয় এই চ্যানেলগুলোর। ভারত কিন্তু ঠিকিই বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোকে তাদের দেশে আটকে রেখেছে। আর আমরা নির্লজ্জভাবে তাদের চ্যানেলগুলোতে ডুবে যাচ্ছি। মীরাক্কেলের মতো অনুস্ঠানগুলোতে বাংলাদেশীদের অংশগ্রহনের মাধ্যমে ধরার চেস্টা করছে মার্কেট।
আমাদের বুদ্ধিজীবীরা অনেক আগেই ব্যাক্তিস্বার্থে মাথা আর দেহ সবই বিক্রি করে বসে আছেন। কাজেই নিজেকেই সচেতন হতে হবে। এখন হয়ত আপনার ছোট্ট মেয়েটার মুখে হিন্দি শুনে চমকে ওঠেন, সাবধান না হলে একদিন হয়ত হিন্দি না জানার জন্য আফসোস করতে হবে।