অনেকদিন ধরে ব্লগকে দেখছি কাছ থেকে... সেই অভিজ্গতা থেকে ফিফার লেখা স্টিকি পোস্ট নিয়ে ২ টা পয়েন্ট মনে এলো।
১। ছোটকালে স্বাধীনতার সংজ্গা পড়াতে গিয়ে শিক্ষক বলেছিলেন, অন্যের অধিকার হরন না করে, অন্যের ক্ষতি না করে, কস্ট না দিয়ে- ইচ্ছেমত চলার অধিকার। ব্লগ করতে এসে সেই সংগা পাল্টে যেতে দেখলাম। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে কিছু শিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত বিকার গ্রস্হ দুর্বত্তদের ব্যক্তি আক্রমন, নাস্তিকতার নামে কুৎসিত ভাবে নবী রাসুল কে আক্রমন কম দেখিনি। ব্লগ টাকে যদি একটা সমাজ হিসাবে কল্পনা করি তবে এই সমাজে যারা ভদ্র শান্তিপ্রিয় তাদের রক্ষার জন্য , সুস্থ পরিবেশের স্বার্থে -আইন এবং তার প্রয়োগ থাকা প্রয়োজন। দুর্বল এবং পক্ষপাতমুলক মডারেশনের করে সামু সহ সব ব্লগই সেই ক্ষেত্রে ব্যার্থ। ব্লগে নাস্তিকতা অবশ্যই চলতে পারে, কিন্তু নবী রাসূলকে কুৎসিতভাবে আক্রমন নাস্তিকতার কোন শর্ত পূরন করে? আমরা নানা সময়ে এই ব্লগে চিৎকার করা বলার চেস্টা করেছি , আপনাদের ভালবাসার পিতা মাতাকে গালি দিলে আপনাদের যেমন কস্ট হয় প্রিয়ে নবী রাসুলকে গালিদিয়ে কুৎসিত বাজে কথা বললে একজন মুসলমানের তারচয়ে কম কস্ট হয় না, কারন আল্লাহ এবং রাসুলকে ভালবাসা একজন মুসলমানের ইমানের শর্ত। ব্লগ কর্তপক্ষের কানে পৌছায়নি সেই কথা, উল্টো এইসব কুৎসিত নাস্তিকদের পোস্ট স্টিকি করে নানা সময়ে তাদের প্রমোট করা হয়েছে। এখন আপনি ঠেলা খেয়ে হাস্যকর রিপোর্টের কথা বলছেন। সাধারন ব্লগাররা অনেকেই স্টার নাস্তিকব্লগারদের আক্রমনাত্মক লেখার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করে উল্টো মডারেশনের খড়গের নীচে পড়েছে প্রচুর। আসিফ মহিউদ্দীন, সন্যাসী, ওন্কার এদের আপত্তিকর লেখা স্টিকি করা হয়েছে সাধারন ব্লগারদের প্রবল প্রতিবাদের পরও।
মডারেশন বলে যদি কিছু থাকত তাহলে থাবা বাবার কুৎসিত লেখাগুলো তড়িঘড়ি করে ডিলিট করলো কেন সামু, আগেই কেন চোখে পড়েনি? অন্যান্য আপত্তিকর লেখা এখন কেন ডিলিট করতে হচ্ছে বিটিআরসির আপত্তিতে? বিটিআরসিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা (এইপোস্টগুলোর ক্ষেত্রে) কেন বলতে পারছেন না এখন? জানি বলবেন যে সব মডারেশন করা কঠিন, সময় নাই ইত্যাদি -হাস্যকর ভাংগা রেকর্ড। কিন্তু ব্লগের সাথে অনেকদিন ধরে সংশ্লিস্টরা জানে যে নবী রাসুলকে আক্রমন করা পোস্টগুলোর ব্লগাররা মডারেশনের স্নেহধন্য , মতপ্রকাশের স্বাধীনতার(!) বিশেষ উদাহরন হিসাবে দেখা হতো ওগুলোকে বলেই ধারনা আমাদের।
একটা বিষয়ে পরিস্কার বলার আছে,
আসিফ মহিউদ্দীনের ব্লগসহ আপত্তি তোলা ব্লগ এবং কন্টেন্ট বাতিল করে নিজের কোন চরিত্রটা তুলে ধরছে সামু কর্তৃপক্ষ?
ক. বিটিআরসির অভিযোগ সঠিক- আসিফমহিউদ্দীনের পোস্টগুলো আপত্তিকর ছিল : তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে কেন এই আপত্তিকর পোস্টগুলো এতোদিন বাতিল করেননি সাধারন ব্লগারদের নানা সময়ের করা অসংখ্য অভিযোগ সত্বেও? উল্টো কেন প্রমোট করেছেন এদের? ভন্ডামি হয়ে গেল না?
খ. বিটিআরসির করা অভিযোগ ঠিক না , কিন্তু চাপের কারনে বাধ্য হচ্ছি বাতিল করতে-- তাইলে তো সেই নতজানু আমজনতাই হয়ে গেলেন , অসংখ্য চেতনার বুলি আওড়িয়ে সেই আপোষকামী মেরুদন্ডহীন চরিত্র প্রকাশ পেয়ে গেল বাধভাংগার আওয়াজে।
ঠিক কোন জবাবটা হবে?
২. আমার দ্বিতীয় পয়েন্টটা লিখছি একজন পুরান ব্লগারের ভালবাসার জায়গা থেকে। অনেকদিন ধরে আছি তাই ভালবাসি ব্লগকে। একটা সুস্থ্য , অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মুক্তবুদ্ধি , অন্যায়ের প্রতিবাদকারী, স্বাধীন বাংলাদেশে বিশ্বাসী এবং গঠনমুলক সমালোচনাকারি চরিত্র হিসাবে দেখতে চাই ব্লগকে। এরজন্য যে রকম নৈতিক বোধসম্পন্ন মডারেশন দরকার সেটা নিশ্চিত করতে হবে গুরুত্ব দিয়ে। অন্যায়ভাবে ব্লগকে গলা চেপে ধরার প্রতিবাদ তখন সাধারন মানুষরাই করবে।
নিজের খুত থাকলে অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে হয়, খুত না থাকলে আপোষের প্রয়োজন হয়না।
শুভ কামনা। কমিউনিটি ভাল হলে কোন অন্যায়ই টেকে না শেষ পর্যন্ত।
সামু দীর্ঘজীবী হোক।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৩৩