somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষার বর্তমান অবস্থা নিয়ে কিছু কথা

০৬ ই নভেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র। আমার বয়সের অন্যান্য ছাত্রদের মত আমিও টিউশনি করি। আমি নবম - দশম ও একাদশ - দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র - ছাত্রীদের ইংরেজি ও গণিত পড়াই। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষার্থীদের অবস্থা খুবই দুঃখজনক। ওরা ইংরেজি ও গণিতে এতটাই দুর্বল যে ওদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমিই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে ইংরেজি ছাড়া চলা একেবারেই অসম্ভব। আর গণিতের জ্ঞান ছাড়া কোনো কিছুতেই উন্নতি করা যায় না। আমি একটা জিনিস বুঝতে পারিনা, ইংরেজি ও গণিতে এত দুর্বলতা নিয়ে একজন শিক্ষার্থী কিভাবে পরবর্তি শ্রেণীতে উঠতে পারে? আবার এসএসসিতে ভাল ফলাফল থাকার পরও অনেক শিক্ষার্থী ইংরেজি ও গণিতে দুর্বল। বলতে গেলে কিছুই পারে না। কিন্তু কেন? এর প্রধান কারণ বলে আমি যা মনে করি শিক্ষার্থীদের না বুঝে পড়া মুখস্ত করার প্রবনতা। কিন্তু একজন শিক্ষার্থী কেন না বুঝে পড়া মুখস্ত করে? এর অন্যতম কারণ শিক্ষকরা আজকাল অতিমাত্রায় বাণিজ্যিক হয়ে গেছেন। আমি জানি অনেকেই আমার কথার বিরোধিতা করবেন। কিন্তু একথা ধ্রুবসত্য তা যে যাই বলুক। ক্লাসে শিক্ষকরা শুধু নিয়মরক্ষার জন্যই আসেন এবং তারা বলতে গেলে কিছুই পড়ান না (অবশ্য প্রাইভেট পড়ানোর ক্ষেত্রে আবার অন্য কথা)। ফলে পড়া বোঝানোর মত কেউ না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে পড়া মুখস্ত করে। কিন্তু দোষ শুধু শিক্ষকদেরই নয়। শিক্ষার্থীরাও ক্লাসে মনোযোগী থাকে না। কিন্তু কেন মনোযোগী থাকে না? আমিও একজন ছাত্র বিধায় আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি যা বুঝেছি তা হল আমাদের মান্ধাতার আমলের লেখাপড়ার ব্যবস্থা। শিক্ষকরা গতানুগতিক যে পদ্ধতিতে পড়ান তাতে শিক্ষার্থীরা বিরক্ত হয়ে পড়ে এবং মনোযোগ হারিয়ে ফেলে। বিশ্বের অনেক দেশেই এমনকি আমাদের দেশেরই অনেক ভাল স্কুলে অডিও ভিজ্যুয়াল পদ্ধতিতে পড়ানো হয় যা সাধারণ পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশী কার্যকর এবং ফলদায়ী। যেমন আমাদের উদাহরণই দেই। প্রথম বর্ষে আমাদের পরিসংখ্যানের দুটো কোর্স পড়তে হয়েছে। প্রথম কোর্সে ম্যাডাম আমাদের প্রেজেন্টেশন এর মাধ্যমে পড়াতেন এবং অন্য কোর্সে স্যার আমাদের গতানুগতিক পদ্ধতিতে পড়াতেন। ফাইনাল পরীক্ষার পর দেখা গেল ম্যাডামের কোর্সে সবাই ভাল করেছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় ম্যাডাম ছিলেন সদ্য পাশকৃত এবং তিনিও ছিলেন স্যারের ছাত্রী। সাধারণত যা হয় ক্লাসে শিক্ষক অডিও প্লেয়ারের মত বাজেন এবং শিক্ষার্থীরা তাকে ভিজ্যুয়ালাইজ করে। এতে কিছুই হয় না। এই পদ্ধতির পরিবর্তন হওয়া আবশ্যিক। আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। এরা যদি ঠিকমত গড়ে না ওঠে তাহলে ভবিষ্যৎ সম্পূর্ন অন্ধকার। তাই এখনই সময় শিক্ষাখাতে সংস্কারের। সরকার যাই করুক না কেন তা যেন হয় এসব দিক মাথায় রেখেই। যার শরীর থেকেও তা অক্ষম তাকে শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে, যার মন থাকার পরও তা অক্ষম তাকে মানসিক প্রতিবন্ধী বলে কিন্তু যার জ্ঞান থাকার পরও তা অচল তাকে আমরা কি বলব? জ্ঞান প্রতিবন্ধী? শারীরিক প্রতিবন্ধী বা মানসিক প্রতিবন্ধী নিয়েও একটা দেশ চলতে পারে কিন্তু জ্ঞান প্রতিবন্ধী নিয়ে কিছুই হবে না।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×