somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুবতী বলল: আমীরুল মুমিনীন, আমার পেটে জন্ম নেয়া এ বাচ্চাটি আপনার।

১৬ ই জুন, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

★★★ নারী জাতির সম্মান ★★★
হযরত আব্বাস (রাযিআল্লাহু আনহু) ঘটনাটি বর্ণনা করলেন
এভাবেঃ
★আমি একদিন মসজিদে নববীতে বসে ছিলাম।
আরো বহুলোক ফারুকে আযমের কাছে বসা ছিল। তখন এক
যুবতী এসে আমীরুল মুমিনীনকে সালাম দিল। তিনি সালামের
জবাব দিয়ে জানতে চাইলেন তোমার কিছু বলার আছে?
সে বলল হ্যাঁ আমার পেটে জন্ম নেয়া এ বাচ্চাটি আপনার।
তিনি বললেন আমি তো তোমাকে চিনিই না।
যুবতীটি কেঁদে ফেলে বললো সন্তানটি আপনার নয়, আপনার
ছেলের। তিনি জানতে চাইলেন ,হালাল পথে না হারাম পথে?
সে বললো , আমার দিক হালাল কিন্তু তার দিক থেকে হারাম
ছিল। উমার (রাযিআল্লাহু আনহু) ঘটনাটি পরিষ্কার
করে বলতে বললেন। সে বললোঃ বেশ কিছু দিন
আগে আমি একদিন বনী নাজ্জারের এক বাগানের কাছ
দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন আপনার ছেলে আবু শামা মদ্যপ
অবস্থায় আমার কাছে এসে তার কামনা চরিতার্থ করার
প্রস্তাব দিল এবং আমাকে জোর করে বাগানের
দিকে টেনে নিয়ে বাসনা চরিতার্থ করলো। আমি বেহুশ
হয়ে পড়েছিলাম। আমি এ ঘটনাটি গোপন রেখেছিলাম। এক
সময় আমি পেটে বাচ্চার অস্তিত্ত্ব টের পেলাম।
ফলে আমি অন্যত্র চলে গেলাম। সেখানে আমার এ শিশু
জন্ম নিয়েছে। আপনি আমার ও তার ব্যাপারে আল্লাহর
নির্দেশিত বিধান প্রয়োগ করুন। খলিফা উমর (রাযিআল্লাহু
আনহু) সাথে সাথে ঘোষককে লোক জমায়েত হওয়ার
ঘোষনা দিতে বললেন। মসজিদে লোক সমবেত হল।
তিনি বললেন আপনারা কেউ কোথাও যাবেন
না,আমি এখনি আসছি। তারপর তিনি আমাকে বললেন
আপনি আমার সাথে আসুন। সেখান
থেকে তিনি ঘরে এসে হেঁকে বললেন , আবু
শাহমা কি ঘরে আছে? জবাবে বলা হল সে আহার
করতে বসেছে। তিনি ভেতরে প্রবেশ করে বললেন হে ,আমার
সন্তান! আহার সেরে নাও, এটাই হয়তো তোমার শেষ
আহার। আব্বাস (রাযিআল্লাহু আনহু) বলেন ,
আমি দেখতে পেলাম যে, সাথে সাথে ছেলের চেহারা বিবর্ণ
হয়ে গেল এবং কাঁদতে কাঁদতে হাতের লোকমা পড়ে গেল।
তিনি বললেন হে আমার সন-ান! বলতো আমি কে?
সে বললো আপনি আমার পিতা ও আমিরুল মুমিনীন।
তিনি বললেন আমার কি তোমার আনুগত্য লাভের অধিকার
আছে? সে বললো হ্যা দুভাবে আপনি আনুগত্য লাভের
অধিকারী। পিতা ও আমিরুল মুমিনীন হিসাবে। তখন
তিনি বললেন তোমার নবী ও তোমার পিতার দাবির
প্রেক্ষিতে বল , তুমি কি ইহুদিদের পাল্লায় পড়ে মদ পান
করেছিলে? সে বললো হ্যা তবে আমি তওবা করেছি।
তিনি বললেন আমার প্রিয় সন্তান! তুমি কি বনী নাজ্জারের
বাগানে গিয়েছিলে এবং সেখানে এক যুবতীর
সাথে পাপাচারে লিপ্ত হয়েছিলে? এ প্রশ্ন শুনে আবু
শাহমা চুপ হয়ে গেল ও কাঁদতে লাগল।
তিনি বললেনঃ বেটা লজ্জার কিছু নেই, সত্য বল। আল্লাহ
সত্যবাদীকে ভালোবাসেন। সে বললো, হ্যা তবে আমার
দ্বারা তা হয়েছে। তবে আমি সেজন্য অনুতপ্ত
হয়ে তওবা করেছি। হযরত ফারুকে আযম
সাথেসাথে তাকে গ্রেপ্তার করলেন এবং তার
জামা ধরে টেনে মসজিদে নিয়ে গেলেন। আবু শাহমা তখন
কেঁদে কেঁদে বলছিল, হে আমার পিতা!
তরবারী দিয়ে আমাকে কেটে টুকরা টুকরা করে ফেলুন, মানুষের
সামনে নিয়ে আমাকে লজ্জা দিবেননা। উমার (রাযিআল্লাহু
আনহু) তখন বলেন তুমি কি এ আয়াত পড়নি: “আর তাদের
দুজনের এ দন্ড দানের সময় মুমিনদের একদল লোক উপসি’ত
থেকে তা প্রত্যক্ষ করবে”।
অতঃপর উমার (রাযিআল্লাহু আনহু)
তাকে টেনে নিয়ে আসহাবে রাসুলের সামনে হাজির করলেন
এবং বললেন যুবতীটি সত্য বলেছে এবং আবু শাহমা তা স্বীকার
করেছে। তারপর তিনি তার দাস আফলাহকে বললেন একে শক্ত
হাতে ধর এবং দোররা মার। একাজে বিন্দুমাত্র শৈথিল্য
দেখাবেনা। আফলাহ কাঁদতে কাঁদতে বললো একাজ
আমি করতে পারবো না। তিনি বললেন আফলা!আমার
আনুগত্য মানে রাসুল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর আনুগত্য। তাই আমি যা নির্দেশ
দেই তাই কর। ইবনে আব্বাস বললেন , তিনি আবু
শাহমাকে দিয়ে তার জামা খোলালেন। তা দেখে সবাই
জোরে জোরে কান্না জুড়ে দিল। আবু
শাহমা সকাতরে বললো হে আমার পিতা !আমার
প্রতি দয়া করুন। উমারও কান্না জড়িত কন্ঠে বললেন তোমার
রব তোমার প্রতি দয়া করবেন। আমি তোমাকে এজন্য দন্ড
দিচ্ছি যেন আমাদের পরয়ারদিগার তোমার ও আমার উভয়ের
উপর দয়া করেন। তারপর তিনি আফলাহকে দোররা মারার
নির্দেশ দিলেন। সে মারা শুরু করলো। আবু শাহমা করুণ
স্বরে কাতরাতে লাগলেন। আফলাহ যখন সত্তর দোররায়
পৌছলেন তখন আবু শাহমা বললেনঃ হে আমার পিতা !
মাকে এক ঢোক পানি পান করান। তিনি বললেন হে আমার
পুত্র! যদি আমার রব তোমাকে কবুল করেন তাহলে মুহাম্মদ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তোমাকে হাওজে কাওসারের পানি পান করাবেন। তারপর আর
কখনো তোমার পানির পিপাসা লাগাবনা। তারপর
তিনি আফলাকে লক্ষ্য করে নির্দেশ দিলেন মারতে থাক। যখন
আশি দোররায় পৌছল তখন আবু শাহমা বললেন হে আমার
পিতা !আসসালামুয়ালায়কা। উমার (রাযিআল্লাহু আনহু)
বললেন ওয়ালাইকাস সালাম। যদি তোমার সাথে মুহাম্মদ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর দেখা হয়
তাহলে তাকে আমার সালাম
পৌছিয়ে বলবে,আমি তাকে কোরআন পড়তে তার উপর
আমল করতে এবং তার দন্ডবিধি বাস-বায়ন
করতে দেখে এসেছি। তারপর বললেন আফলাহ মারতে থাক।
যখন নব্বই দোরার মারা হল তখন আবু শাহমা নিশ্চুপ ও
নিস্তেজ হয়ে গেল। ইবনে আব্বাস (রাযিআল্লাহু আনহু)
বলেন: রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সাহাবীগণ বললেন ,যে কয়
দোররা বাকি রয়েছে তা পরে মারুন। উমার (রাযিআল্লাহু
আনহু)বললেন পাপের কাজে যখন দেরি করা হয়নি তখন
দন্ডদানে দেরি করা হবে কেন?
আফলাকে তিনি দোররা মারতে বললেন। শেষ দোররাটি যখন
মারা হল তখন আবু শাহমা চিৎকার
করে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। ফারুকে আযম তখন তার
মাথাটি নিজের কোলে তুলে নিয়ে কেঁদে কেঁদে বললেন: সত্যের
জন্য তোর মুত্যু হল। তুই শেষ দন্ডটিও নিয়ে মরেছিস।
তোর বন্ধু বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এমনকি তোর বাপও
তোকে বাচাতে পারলোনা।

-সংগ্রহ
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০১৫ সকাল ৯:৩৭
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×