মানুষ তো পৃথিবীতে আসে বেঁচে থাকার জন্য। কিন্তু কয়জনের ভাগ্যেজুটে ভালোভাবে বেঁচে থাকার সুযোগটুকু? সম্পদের মূল্যটুকু যেখানে মানুষের চেয়ে বড় হয়ে দাঁড়ায় সেইখানে মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসাটুকু যে নিঃশেষ হয়ে যাবে সেটাই গ্রহণযোগ্য ব্যপার! দিনকে দিন মানুষ যেখানে উন্নতির দিকে পা বাড়াচ্ছে সেখানে কিছু মানুষ এমনও আছে যারা দু’বেলা দু’মোটো ভাতও খেতে পারে না ঠিক মত। ফুটপাতে তারা বেড়ে ওঠে। কেউবা ঝরে পরে অকালে।
কে তাদের খুঁজ রাখে? রাখার সময়টুকু কার আছে?
একটি ঘটনা আমার মনোজগতে একদিন খুব ধাক্কা দিয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল ২৩.৩.২০১১ তারিখে ।
ঘটনাটি হচ্ছে-
যখন আমি কলেজ থেকে ফিরছিলাম তখন দেখলাম রাস্তা পার হওয়ার সময় আমাদের কলেজের এক ছেলের সাইকেলের সাথে ধাক্কা খেয়ে একটি শিশু পরে যায়। কলেজের ছেলেটি ফিরেও তাকায়নি শিশুটির দিকে। সে তার পথে চলে যায়। সেই শিশুটির সাথের অন্য পথশিশুরা তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে যায়। আমিও তার কাছে গেলাম। ওর মুখ দিয়ে কলকল করে রক্ত বের হচ্ছিল আর তার সে কি কান্না। তাকে তাড়াতাড়ি পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে দেয় তার সাথের শিশুগুলো। তার কান্না কমে না। তাকে যখন বললাম কান্না থামানোর কথা সে আরও কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগল, ‘আমার খাবার পড়ে গেছে।এখন আমি কি খাব?’ তখন রাস্তায় আবার তাকিয়ে বুঝতে পারলাম সে তার পরে যাওয়া খাবারের জন্য এত কাদতেছে। অথচ ব্যথার কথা সে বলতেছে না। ওখানে বসে পরলাম আমি। নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হচ্ছিল তখন। চোখের কোণায় পানি ছলছল করছিল। তাকে তার মা এসে নিয়ে যাচ্ছিল। সে তার মার আঁচলে ধরে বার বার বলছিল আমার ভাতগুলো পরে গেছে মা,আমি কি খাব এখন..................।।
তার সাথের শিশুগুলো বলতেছিল, আজ অনেক দিন পর আমরা খাবার পেয়েছি। পাশের বাড়িতে বিয়ে হচ্ছিল। তাদের ফেলে দেওয়া খাবারগুলো আমাদের আজ ভাগ্যে জুটেছিল।
সেই ছোট ছেলেটি ব্যথার জন্য নয় বরং ভাতের জন্য কাঁদছিল। একমুঠো ভাতের জন্য কাউকে এর আগে আমার চোখের সামনে কাঁদতে দেখিনি।
বাকহারা হয়ে যেতে হয়েছিল সেদিন। এমন কত ঘটনা আমাদের আশেপাশে ঘটে যাচ্ছে। তারা যেন জীবিত থেকেও মৃত্যুর কাছাকাছি রয়েছে। বেঁচে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
তাদেরকে জীবিত সমাধি দিয়ে দেওয়া হয়েছে যেন
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৯