somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বালকের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেক অনেকদিন
আগের কথা ।
এক দেশে ছিল এক
মিথ্যাবাদী রাজকন্যা ।
একদিন সেই রাজকন্যার
অপরূপ চেহারা দেখে
এক বালক তার প্রেমে
পড়ে গেল ।
ধীরে ধীরে বালকের
প্রেম আরো গভীর
হতে লাগলো ।
এক সময় বালক স্বপ্ন
দেখতে লাগলো ।
রাজকন্যাও বালকের
প্রেমে পড়ে গেল ।
কিন্তু ঐ যে বললাম-
রাজকন্যা ছিল ঠকবাজ
ও মিথ্যাবাদী ।
রাজকন্যা মনে মনে
অন্য একজনকে
ভালোবাসতো ।
এদিকে বালক তা
তো জানতো না ।
বালকের হৃদয় মন
জুড়ে শুধু রাজকন্যা
ছিল ।
একদিন রাজকন্যা
বালকের বুকে একটা
তীর বিদ্ধ করে বালকের
কানে কানে বলল-
"তার একজন প্রেমিক
আছে যার অনেক টাকা
ও সুন্দর চেহারা আছে ।
আর তুই তো একটা
বিশ্রী চেহারার ছোটলোক ।"
বালকের কিছু করার
ছিলনা ।
বালক অনেক কষ্ট পেল ।
একা একা কাঁদলো ।
কিন্তু তবু কিছু হল ।
কি জানি কি হল
রাজকন্যার মনে নতুন
কি ফন্দি এলো ।
বালককে সে ডেকে
পাঠালো এবং বালকের
কাছে নিষ্পাপ
বালিকার মতো বলতে
লাগলো-
হে বালক,
তোমার মনের যেখানটাতে
আমার স্থান সেখানে আর
কাউকে রেখোনা ।
আমি একদিন আসবোই...।
বালক কিন্তু কিছু একটা
আঁচ করতে পারলো
বাক্যের শেষে জোর
দেওয়াতে ।
কিন্তু বালকের কাছে
রাজকন্যা ছিল বিশ্বাসের
প্রাচীর ।
বালক রাজকন্যাকে
আবার পেল ।
কিন্তু সেদিনই রাজকন্যা
বালককে তাড়িয়ে দিলো ।
বালক আবারো মনে
কষ্ট পেয়ে চলে গেল এবং
মনে মনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো প্রতারক রাজকন্যার জন্য
সে আর কাঁদবেনা ।
সে স্বাভাবিক হতে
শুরু করলো ।
কিন্তু কিছুদিন পর
রাজকন্যা আবার
বালকের কাছে ফিরে আসলো ।
বালক তাহাকে পেয়ে সব
সংশয় বাতাসে উড়িয়ে
দিলো ।
রাজকন্যা বালককে
সারাজীবন কাছে রাখার
প্রত্যয় ব্যক্ত করলো ।
কিন্তু রাজকন্যার একটা
শর্ত ছিল,
তা হল-
রাজকন্যাকে পেতে হলে
বালককে যোগ্যতা অর্জন
করতে হবে ।
বালক রাজকন্যার
মনকে জয় করতে কঠোর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো ।
কিন্তু বালক এবারো
মিথ্যাবাদী বেহায়া
রাজকন্যার তীব্র
প্রতারণার স্বীকার হলো ।
রাজকন্যার কথামতো
বালক যোগ্যতা অর্জন
করার জন্য যেদিন চেষ্টা
শুরু করলো
সেদিন বালকের কানে
আসলো রাজকন্যার
বিয়ের খবর ।
রাজকন্যা নিজে তাকে
এ খবর জানিয়েছে !
এ সংবাদ শোনার পর
বালকের তিঁলে তিঁলে
গড়া ভালবাসা কাঁচের
টুকরোর মতো
ভেঙ্গে পড়লো ।
চোখ মেয়ে বন্যার তীব্র
জলের স্রোতের মতো
পানি আসতে লাগলো ।
বালকের চিন্তাশক্তি
কিয়ত্ক্ষণের জন্য
হারিয়ে গেল ।
বাকরুদ্ধ হয়ে গেল
কয়েক মিনিটের জন্য ।
এদিকে বালকের এ
করুণ অবস্থা জানতে
পেরে রাজকন্যা বিরাট
খুশি হলো ।
সে এই উপলক্ষে এক
বিরাট পার্টির আয়োজন
করলো ।
বালক অশ্রুসিক্ত নয়নে
শহরের সবচেয়ে উঁচু
ভবনের ছাদে উঠলো ।
বালকের কাছে বৃহত্
আকাশটাকে অনেক
ছোট মনে হল ।
বালকের মনে হল,
আকাশ যেনো তাকে
চেপে ধরতে চাচ্ছিলো ।
বালক ছাদের রেলিংয়ের
কাছে গিয়ে দাঁড়ালো ।
পৃথিবী ও পৃথিবীতে জন্ম
নেওয়া সমস্ত প্রেমিকাজাতীর
প্রতি তার তীব্র ঘৃণা
হতে লাগলো ।
বালকের কেন যেনো
মনে হতে লাগলো এ
পৃথিবী তার জন্য নয় ।
জগতের সব অভিশপ্ত
মিথ্যাবাদীরা এ জগতটাকে বসবাসের তীব্র অযোগ্য
করে তুলেছে ।
বালক নির্লিপ্ত চোখে
রেলিংয়ের উপর দাঁড়ালো ।
বালকের আকাশের দিকে
তাকিয়ে চোখ বুঝলো ।
বালকের মনে হতে
লাগলো সে অনন্ত যাত্রার
পথে পা বাড়িয়েছে ।
বালকের এ যাত্রা রাজকন্যার
মনে একটুও রেখা সৃষ্টি
করেনি ।
বরং মিথ্যাবাদী রাজকন্যা
তখন বিছানায় উগ্র সুখে
শিহরীত ।
ঠিক তখন নিশ্চুপ
নিরবতায় বালক
অনন্তযাত্রার
পথে পা বাড়াবে বলে
স্থির করলো ।
হঠাত্ বালকের মনে
হলো কে যেনো তার সামনে
দাঁড়িয়ে আছে ।
অস্পষ্ট মুখচ্ছবি ।
চেনা চেনা লাগে ।
বালক দেখলো এ তাঁর মা !
ছোটবেলায় যাকে সে
হারিয়েছে ।
মা যেনো তাকে বলছে-
"কি রে তোর বাবার
স্বপ্নটাকে এভাবে জলাঞ্জলি
দিবি !
তোকে না বলেছিলাম
ডাক্তার হতে ।
সে পথে তো গেলিনা ।
তোর বাবা তোকে
নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখে ।
সে স্বপ্ন তোকে পূরণ
করতে হবে ।
যা বাড়িতে যা ।
তোর বাবা টেবিলে
খাবার নিয়ে বসে আছে ।
তোর রুমা আপা খাবার
নিয়ে বসে আছে তোকে
খাইয়ে দিবে বলে ।
যা এখুনি বাসায় যা ।"
বালকের মনে হল মা
যেনো তার মাথায়
হাত রেখে দোয়া করছে ।
বালকের হুঁশ ফিরলো ।
বালক চিন্তা করলো-
রাজকন্যা যদি মিথ্যাবাদী
হয়ে পৃথিবীতে সুখী হতে
পারে তাহলে সে কেনো
পারবেনা ।
তাকে পারতে হবে ।
জীবনটা তো খেলনা
পুতুলের মস্তক নয় যে
ছিঁড়ে ফেলা এতো সহজ ।
বালক বাসায় চলে
আসলো ।
এসে দেখে বাবা এখনো
না খেয়ে আছে তার
আপা ভাত মাখিয়ে
বসে আছে ।
বালকের কেনো যেনো
মনে হল এটাইতো জীবন ।
পৃথিবীর সব ভালোবাসা
তো এখানেই লুকায়িত ।
বালকের তবু যেনো
কেনো মনে হল মিথ্যাবাদী
হলেও রাজকন্যাকে সে
ভুলতে পারবেনা ।
যুগ-যুগান্তর তার
রাজকন্যার কথা
মনে পড়বে...।।
এটাই বুঝি
"নিঃস্বার্থ ভালোবাসা" ।।
-
একটি তীব্র সত্য
ঘটনা অবলম্বনে ।।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×