কলা। সবার পরিচিত এবং প্রিয় একটা ফল। কলা পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুজে পাওয়া দুষ্কর। আমরা সবাই কলা খাই কিন্তু, কলার মধ্যে যে কি আছে, এটা খেলে কি হয় তা কেউ জানিনা।
আমাদের সবার মনে একটা ধারণা আছে যে স্বাস্থ্যকর খাবার সবমসময় মজার হয়না। কিন্তু কলার ক্ষেত্রে বিষয়টা সম্পূর্ণ ভিন্ন। কলা খেলে তা শুধু স্বাদকুঁড়িতে সন্তুষ্টিই দিবে না, বরং তা স্বাস্থ্যের জন্যেও অনেক উপকারী।
চলুন দেখে নেই, একদিনে দুইটি কলা খেলে কিভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে পারে।
প্রথমত, কলা আপনার রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করবে। কলার মধ্যে থাকা ৪২০ মি.গ্রা. পটাশিয়াম কে এজন্য ধন্যবাদ দিতেই হয়।
দ্বিতীয়ত, অধিক ওজন কমায়। কলা তে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে, যা আপনার খাওয়ার চাহিদা কমিয়ে দিবে।
কলাতে একধরণের স্টার্চ থাকে যা ক্ষুধা কমিয়ে দেয় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটা রক্তে সুগার লেভেল কমায় এবং দেহের ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ায়।
তৃতীয়ত, রক্তশূন্যতার ঝুকি কমায়। দেহে রক্তে হিমোগ্লোবিন এবং লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। কলাতে প্রচুর পরিমাণে লৌহ থাকে, যা লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
কলাতে থাকা ভিটামিন বি-৬ ব্লাড গ্লুকোজ লেভেল নিয়ন্ত্রণ করেও রক্তশূন্যতা থেকে রক্ষা করে।
চতুর্থত, কলা খুব সহজেই পরিপাক হয় এবং গ্যাস্ট্রো-ইন্টেস্টিনাল ট্র্যাক্ট কে খুব একটা বিরক্ত করেনা। যাদের গ্যাস্ট্রাইটিস কিংবা বুকজ্বলা হয়, তাদের জন্য কলা একটি উপাদেয় খাদ্য। ডায়রিয়া রুগীর জন্যও কলা বেশ উপকারী, কারণ এটি মিনারেল রিস্টোর করতে সাহায্য করে।
পঞ্চমত, স্ট্রেস লেভেল কমিয়ে দিবে। আমাদের দেহের হ্যাপিনেস হরমোন বলা হয় সেরাটোনিন কে। যা আমাদেরকে হাশিখুশি রাখে। দেহের সেরাটোনিন রিসিভ করার জন্য ট্রিপ্টোফ্যান দরকার। কলাতে প্রচুর পরিমাণে ট্রিপ্টোফ্যান থাকে।
তাছাড়া, কলাতে ২৭ মি.গ্রা. ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা ভালো মুড এবং সুখকর ঘুমের জন্য দায়ী।
ষষ্টত, ভিটামিন ডেফিসিয়েন্সি পূর্ণ করে। আমাদের দেহের ভিটামিন বি-৬ এর ডেইলি রিকোয়ারমেন্ট এর ২০% কলাতে থাকে। এটা ইনসুলিন, হিমোগ্লোবিন, এমিনো এসিড তৈরীতে সাহায্য করে, যা দেহের সুস্থ কোষ তৈরীর জন্য প্রয়োজন।
যদিও আমরা মনে করি কমলা এবং ষ্ট্রবেরী তে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, কলাতে আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনের ১৫% ভিটামিন সি উপস্থিত। ভিটামিন সি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এন্টি-অক্সিডেন্ট, যা দেহের ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেল গুলোকে নিউট্রিলাইজ করে। এটা ব্লাড ভেসেল গুলোকে ভালো রাখতে এবং কোলাজেন তৈরীতেও সাহায্য করে।
সপ্তমত, এনার্জি লেভেল বৃদ্ধি করে। কলাতে উপস্থিত পটাশিয়াম দেহের মাসল গুলোকে প্রতিরক্ষা দেয়। আর কার্বোহাইড্রেট প্রচুর শক্তি যোগায় এবং লম্বা সময় ধরে ভারী কাজ করতে সহযোগীতা করে।
তাহলে বুঝতেই পারছেন, কলা খাওয়ার কতোইনা উপকারিতা। সুতরাং, একদিনে দুইটা কলা, মোটেও যাবেনা ভুলা...
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:০২