somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আশিক সরকার শুভ (আবীর)
আমি আশিক। প্রচন্ড স্বপ্নবাজ একজন মানুষ। একাধারে অনেক কিছু হবার ইচ্ছে।খুব আত্মকেন্দ্রিক একজন । অনেক কথা কারো সাথে তাই বলা হয়ে ওঠেনা। তাই এখানে আসা। যা কিছু মনে আসে, তার মধ্য থেকেই সবার সাথে শেয়ার করা.. এইতো.. আর কিছু বলার নেই...

ভাবনা-৭

৩০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্রিমিনাল সাইকোলজিতে একটি কথা রয়েছে। কোন একজন খুনী যখন কোন খুন করে, তখন সে খুন করার পর সারা জীবনের জন্যে সে খুন করার স্থান থেকে হারিয়ে যায় না। বাকী জীবনের সবগুলো দিনের একটি দিনের জন্যে হলেও সে খুন করার স্থানটিতে ফিরে আসে.... এ ফিরে আসার পেছনে তেমন কোন উপলক্ষ নেই... তারা সে স্থানে ফেরে শুধুমাত্র নস্টালজিক হবার জন্যে...

আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৫ বছর আগের কথা। কুড়িল বিশ্বরোডের ফ্লাইওভারটি তখনও সচল হয়নি। নির্মানাধীন অবস্থায় রয়েছে। দিনের আলোতে অনেকেই সেখানে আড্ডা দিতে উঠলেও রাত ৯ টার পর থেকেই সেখানে লোকসংখ্যা কমে যেত। কোন এক রাতে ঠিক এমনই একটা সময়ে সে ফ্লাইওভারের রেলিংয়ে পা ঝুলিয়ে বসেছিলাম। কিছুক্ষণ পরপর নির্মানাধীন ফ্লাইওভারটির নিচ দিয়ে ট্রেন যাচ্ছে তীব্র আলো নিয়ে। যখনই একটি ট্রেন আসতে দেখা যাচ্ছিলো, ট্রেনের সামনের আলোটা ততবার চোখের উপড় চোখ ধাধিয়ে যাবার মত করে পড়ছিল। আর প্রতিবারই মনে হচ্ছিলো "এই ট্রেনের আলোটাই হয়তো আমার জীবনের দেখা শেষ আলো"।

সুইসাইডটা শেষমেষ সেদিন আর করা হয়ে ওঠেনি। বাসায় ফিরে সেদিন অন্য আর দশটা দিনের মতই স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই ভাত খেয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছি। পরিবারের একটা সদস্য সেদিন ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি, যে সেদিন আমার বাসায় ফিরে ভাত খেয়ে ঘুমুনোর কথা ছিল না... একটা দূর্ঘটনা ঘটানোর কথা ছিল...

শেষমেষ এই দূর্ঘটনাটি ঘটানো থেকে ফিরে আসাটি সাহসের অভাবের জন্যে যে হয়েছে তা নয়। একটি বেশ সাদামাটা বাক্য আমাকে বেশ শক্তভাবেই সেখান থেকে ফিরিয়ে এনেছে। ভাবনায় আসা সে বাক্যটি হচ্ছে "বাকী জীবনে এমন কোন না কোন দিন আমার জীবনে আসবে, যেদিন আমি আজকের দিনের করতে চাওয়া বোকামীর জন্য হাসবো"।

গতকাল তিনজন স্টুডেন্টকে হোটেল রেডিসনের সামনে বাসে চাপা দিয়ে পিষে মেরে ফেলা হয়েছে। আজকে মিরপুর থেকে শুরু করে টঙ্গী রোডের গাড়ি চলাচল দুপুর থেকে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরোপুরি বন্ধ ছিল। গতদিন কয়েকজন ছাত্রকে বাস চাপা দিয়ে পিষে মারার ক্ষোভে স্কুল ছাত্ররা মিলে
বলতে গেলে পুরো ঢাকা শহরকে আজ স্থবির করে দিয়েছে। বিকেলের দিকে অফিস ছুটির পর বের হবার পর রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলোর অবস্থা দেখে বুঝতে সমস্যা হলো না যে আজ হেটে বাড়ি ফেরা ছাড়া গতি নেই।


তাই হেটে রওনা দিয়েছি। বাসের ভেঙ্গে যাওয়া কাঁচের টুকরোয় ছড়ানো রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে একটা সময়ে সেই কুড়িল ফ্লাইওভারের উপড় চলে এলাম। আরো কিছুদূর আগানোর পর ফ্লাইওভারের রেলিং এর সেই অংশটা চোখে পড়লো, যেখানে আর থেকে প্রায় সাড়ে ৫ বছর আগে বসেছিলাম...

আজকের সেই সময়টা সেই সাড়ে ৫ বছর আগের রাতের মত নির্জন ছিল না।সে জায়গা আজ বাস প্রাইভেটকার আর মানুষের ভীড়ে প্রচন্ড পরিমানে ব্যস্ত। এরকম সীমাহিন বিরক্তিকর পরিস্থিতির মাঝেও প্রায় মিনিট দশেকের মত আমি রেলিংটার কাছে দাঁড়িয়ে থেকেছি।

রেলিং এর পাশে দাঁড়িয়ে দেখা যাচ্ছে,দূর থেকে ট্রেন আসছে....

ক্রিমিনাল সাইকোলজির সে বাক্যটিতে হয়তো কিছুটা সংযোজন করা উচিৎ। শুধু অন্যকে খুন করা মানুষগুলোই শুধু নয়, নিজেকে খুন করতে চাওয়া মানুষগুলোও কখনো কখনো নস্টালজিক হতে খুন করার সেই স্থানটিতে জীবনের কোননা কোন সময়ে চলে আসে...

কখনো সেটি নিজ ইচ্ছায়... আবার কখনও বা ভাগ্যের ফেরে...
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:২৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×