somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আশিক সরকার শুভ (আবীর)
আমি আশিক। প্রচন্ড স্বপ্নবাজ একজন মানুষ। একাধারে অনেক কিছু হবার ইচ্ছে।খুব আত্মকেন্দ্রিক একজন । অনেক কথা কারো সাথে তাই বলা হয়ে ওঠেনা। তাই এখানে আসা। যা কিছু মনে আসে, তার মধ্য থেকেই সবার সাথে শেয়ার করা.. এইতো.. আর কিছু বলার নেই...

ভাবনা-৯

১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক লোক একটা বাঁশের সাকো দিয়ে নদী পাড় হচ্ছেন। লোকটি এর আগে বাঁশের সকোয় কখনো চড়েন নি। আজই প্রথম। সাঁকোর মাঝামাঝি আসার পর লক্ষ্য করলেন সাকোর অপর পাশ থেকে একটি পাগল সাকোয় উঠেছে। সাকোর উপড় দিয়ে তার হাটার ভঙ্গি দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে সাকো পাড়ি দিতে সে ভাল এক্সপার্ট...

পাগলটি লোকটির কাছাকাছি এসে কি মনে করে দাঁড়িয়ে গেল। লোকটির মনে ভয়। মাঝনদীতে সাকোর মাঝখানে একটি পাগলের সাথে দাঁড়িয়ে আছে ভাবলেই গা শিউরে উঠছে। লোকটি একটু সাহস নিয়ে পাগলে উদ্দেশ্যে বলল "ভাই, আর যাই করিস না কেন, সাকোটা বেশী নাড়াচাড়া করিস না" ।

এ কথা শুনে পাগলটি সবগুলো হলুদ দাত বের করে হাসি দিয়ে বলল, "ভাল কথা মনে করেছিস তো ! !" ।

যখন আপনি সূর্যাস্তের আলোয় দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির ছবি মন থেকে মুছে ফেলতে চান, তখন আপনার মন আরো বেশী করে মনে করিয়ে দেয় যে সে কিভাবে বারান্দার গ্রিল ধরে বিকেলে দাঁড়িয়ে থাকতো। একের পর এক বিভিন্ন ব্রান্ডের সিগারেটের ফিল্টারে দিনের পর ঠোট বসালেও আপনার ঠোট সে চিরচেনা ঠোটের স্পর্শ পাবার জন্যে আরো বেশী তৃষ্ণার্ত হয়ে ওঠে।

কেন হয় এমন? কারন আপনার মন বাঁশের সাকোর উপড় দাঁড়িয়ে থাকা ওই পাগলটির মতই। সে মানুষটিকে আপনি যতই ভুলতে চাইবেন,সে ততই আপনার চোখের সামনে সূর্যাস্তের ওই আলোটা এনে ফেলবে। দুঃখের স্মৃতির চাইতে আপনাকে সুখের স্মৃতিগুলোর কথা সে বেশী করে দেখাবে সে আলোয়। জীবনানন্দের কোন কবিতা পড়তে গেলেও একেক লাইনে তাকে একেক জামায় এনে হাজির করবে।

কারন মানুষ এই সময়টিতে কষ্টের স্মৃতি মনে করে যতটা না কষ্ট পায়, তার চাইতে বেশী পায় সুখের স্মৃতি মনে করে। সিনেপ্লেক্সে একসাথে সিনেমা দেখার সময় কিভাবে সে হাত জড়িয়ে ধরে থাকতো, আপনি যখন জ্বরে ভুগতেন তখন কিভাবে আপনার গলায় জড়িয়ে ধরে থাকতো, আপনি যখন বৃষ্টিতে ভিজে যেতেন তখন কিভাবে মাথা মুছে দিত, এসবকিছু আপনার চোখের সামনে আরো বেশী করে নিয়ে দাড় করাবে।

আর এজন্যই এখন আপনার মুঠোফোন থেকে তার কোন নম্বর এখনো ডিলিট হয়নি। মেমরী কার্ড থেকে আপনাদের দুজনের সবগুলো ছবি ডিলিট করে ফেললেও কোন এক ফোল্ডারে তার কোন না কোন ছবি ঠিকই রয়ে যায়। বহু আগে তার পাঠানো কোন ম্যাসেজও আপনি অন্য একটি সিম কার্ডের মেমরীতে রেখে দেন হারিয়ে যাবার ভয়ে। এখনো তার কথা মনে হলে আপনার হৃদপিন্ডের কম্পন কিছুটা হলেও বেড়ে যায়।

এই হৃদপিন্ডের কম্পন বেড়ে যাবার ব্যাপারটি দুটো সময়ে ঘটে। যখন প্রথম কেউ আপনার জীবনে আসে। আর যখন সে মানুষটি চলে যায় ।

যাবার সময় ওই স্মৃতিগুলো সে আপনার জন্যে রেখে যায়। আপনার ব্রেন সেগুলো ধারন করে রাখে।

সৃষ্টিকর্তা স্মৃতি ধরে রাখার জন্যে প্রায় দেড় কেজি ওজনের একটি ব্রেন দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু কোন স্মৃতি মুছে ফেলার কোন অপশন দেননি। তাই মুছে ফেলার চেষ্টাটিও আপনার মস্তিষ্ককেই আরো বেশী মাতাল করে তুলবে।হিতে বীপরিত হয়ে আপনার ব্রেনের প্রতিটি নিউরোনে তার নামটি খোদাই করে দেবে। সে মুছবে না কখনোই।

যতই সিগারেটের ফিল্টার বদলান, কিংবা গীটারের তারে হাত পেচিয়ে হাত রক্তাক্ত করুন না কেন, লাভ নেই...
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৪৪
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×