somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবী ভালো নেই, ভালো নেই পৃথিবীতে বেঁচে থাকা জীবন্ত অস্তিত্বদের

১০ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পৃথিবী তার নিজ কক্ষপথে ঘুরে ঘুরে দিন শেষে রাত হয়, আবার রাত শেষে দিন। সবকিছু ঠিকঠাক চলতে পারলেও ঠিকমত চলছে মানব জীবন। এই করোনা মহামারী কারণে শেষ কবে মানুষ স্বস্থির নিঃশ্বাস ছেড়ে ছিলো তা হয়তো কারো মনে নেই। পৃথিবী ভালো নেই, ভালো নেই পৃথিবীতে বেঁচে থাকা জীবন্ত অস্তিত্বদের। চারপাশে যেনো হাহাকার ময়।

যে কোনো মহামারী যে মানুষের জীবনে এতটা প্রভাব ফেলতে পারে তা হয়তো এই করোনা না আসলে মানুষ কখনোই বুঝতে পারতো না। অদৃশ্য এক ভাইরাস মানুষের জীবনটা এলোমেলো করে দিয়েছে। মানুষের মাঝে দুরত্ব তৈরি হয়েছে। দুধের শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক লোকদের ও এই ভাইরাস থেকে রেহাই নেই।

আগে মানুষের মাঝে এক অন্যরকম আনন্দ ছিলো এখন আনন্দ নেই। এখন মানুষের চোখের দিকে তাকালে মনে হয় মানুষটা কষ্টে আছে। কোথাও কেউ ভালো নেই। সারা বিশ্বে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মরে যাচ্ছে এই করোনার জন্য। থেমে আছে প্রতিটা দেশের অর্থনৈতিক চাকাও। থেমে আছে মানুষের জীবনচক্র।

এই করোনার জন্য মায়ের কাছ থেকে সন্তান আলাদা হয়ে যাচ্ছে। স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রী আলাদা হয়ে যাচ্ছে। বোনের কাছ থেকে ভাই আলাদা হয়ে যাচ্ছে। অকালে হারিয়ে যাচ্ছে লাখো জীবন। এই কঠিন সময়ে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। যারা দিন আনে দিন খায় তারা করোনার কারণে মরে না গেলেও অনেকে খাবারের অভাবে ঠিকই মরে যাচ্ছে। পেটের দায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে তাদের জীবন।

কঠিন এই সময়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে অসংখ্য ডাক্তার এবং নার্স। তারা জীবনে ঝুঁকি নিয়ে আমাদের দিন রাত সেবা করে যাচ্ছে। পরিবার পরিজন ছেড়ে তারা আজ হাসপাতাল গুলোতে জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত। অনেকে আবার জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবনই দিয়ে দিতে হচ্ছে এই অদৃশ্য ভাইরাসের কারণে। পুরো পৃথিবী আজ অসুস্থ। কোথাও কেউ ভালো নেই। কঠিন সময়ে বিশ্বের সকল চিকিৎসক ও নার্সরাই হলো আমাদের পরম বন্ধু। কারণ তারা যদি আমাদের সেবা না দিতো তাহলে আমারা আরো কঠিন অবস্থায় পরে যেতাম। তাদের প্রতি অসংখ্য শ্রদ্ধা।

এই লকডাউন কিংবা শাটডাউনে যখন পুরো পৃথিবী দিশেহারা, যখন সবাই যার যার বাসাতেই অবস্থান করছে, ঠিক সে সময়টাতেই অনেকেই বেড়িয়ে পরছে জীবনের তাগিদে। অনেকের ব্যবস্যা লস গুনতে হচ্ছে, অনেকে হারিয়ে ফেলছে তার উপার্জনের মাধ্যম। কেউ কেউ আবার শহর ছেড়ে গ্রামে আশ্রয় নিচ্ছে তার আপন ঠিকানায়।

এই করোনা মহামারীর মধ্যে সব থেকে বেশি ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। দৈর্ঘ্য দিন ধরে তাদের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে তারাও মানসিক ভাবে ভেঙে পরছে। ছোট ছোট বাচ্চারা জীবনের শুরুর দিকেই পিছিয়ে পরে যাচ্ছে। পিছিয়ে পরছে শিক্ষা ব্যবস্থা। এতো প্রতিকুলতার মাঝে থেকেও অনেকে বাসায় বসে অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণ করছে। তবুও কেউ কেউ অনলাইন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রযুক্তির অভাবে। প্রতিটা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আজ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

শুধু শিক্ষাই নয়, পিছিয়ে যাচ্ছে প্রতিটা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও। কমে যাচ্ছে দেশের বাৎসরিক আয়, এবং কমে যাচ্ছে মানুষের মাথাপিছু আয়ও। দরিদ্র দেশগুলো উন্নত দেশগুলোর কাছে সহযোগীতার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনা আমাদেরকে হারে হারে বুঝিয়ে দিয়ে গেলো আমরা এখনো কোনো মহামারী মোকাবেলার জন্য নিজেদেরকে গঠন করতে পারিনি। উন্নত প্রযুক্তি অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে শুধু প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ আমাদের জন্য সব সময়ের জন্যই আতংকের নাম।

করোনা মোকাবেলা কখনো একার পক্ষে কিংবা একটি মাত্র দেশের পক্ষে সম্ভব নয়। আমাদের সবার এক হয়ে কাজ করতে হবে। প্রতিটা দেশের জনগণ সরকার থেকে শুরু করে উচ্চপর্যায় সকল নেতাদেরও এগিয়ে আসা উচিত। প্রতিটা দেশের সতর্ক হতে একযোগ হতে এগিয়ে যেতে হবে। যে যেখানেই থাকুক, যে অবস্থাতেই থাকুক সবার এক হয়ে যদি মোকাবেলা করতে না যাই তাহলে পরিস্থিতি আরো দিনের পর কঠিন হতে থাকবে। যা আমাদের জন্য আরো ভয়ংকর রুপ নিতে পারে।

সাধারণ জনগণের উচিত সরকারের নির্দেশ নীতিমালা মেনে চলা। আমরা সাধারণ জনগন যদি সরকারকে সাহায্য না করি তাহলে বিপদ আমাদের দিকেই এগিয়ে আসবে। সরকারের উচিত দরিদ্র মানুষদের পাশে এগিয়ে যাওয়া। যারা করোনার জন্য কর্ম হারিয়ে অসহায় হয়ে পরেছে। বিশেষ করে বিভিন্ন গ্রামে অনেক দরিদ্র পরিবার আছে যারা বাহিরে বের হতে না পারলে ইনকাম করতে পারে না, তাদের যদি সরকার থেকে কোনো উপকার না আসে তাহলে তাদের বেঁচে থাকাটাই মুশকিল হয়ে পরবে।

করোনায় এ পর্যন্ত যতগুলো মানুষ মারা গিয়েছে তার বেশিরভাগ কারণই হচ্ছে সতর্ক না থাকার জন্য। ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সব থেকে বেশি ঝুঁকি থাকে। ভারতে সহ বিশ্বের প্রতিটা দেশেই এখন এ ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পরেছে। অনেক দেশে এতই বেশি মৃত্যু হচ্ছে যে মানুষকে একসাথে গণকবর দেয়া হচ্ছে। আবার এই করোনার মাঝেও আরেক আতংকের নাম ফাঙ্গাস। নানা জাতের ফাঙ্গাস মানুষের দৃষ্টি শক্তি কেড়ে নেয়, যার কারণে আরো ভয়াবহ রুপ নিয়েছে এই করোনায়। অতিরিক্ত স্টোরেড জাতীয় ওষুধ সেবনের জন্য মানুষের রোগ প্রতিরোধ কমে যাওয়ার এই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

তবুও কোনো একদিন আমাদের পৃথিবী সুস্থ হয়ে উঠবে। উঠবে নতুন সূর্য। থাকবেনা কোনো মহামারী। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। মানুষ আবার আগের মত করে যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই চলাফেরা করতে পারবে। পৃথিবী ফিরে পাবে তার আপন ঠিকানা। ফিরে পাবে মুক্ত জীবন। প্রিয়জনদের হারিয়ে আর কারো কাঁদতে হবে না। স্কুল কলেজে আবারো ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে মুখরিত থাকবে। পুরো পৃথিবী এখন সেই দিনটার অপেক্ষায়। একদিন ঠিক সেই দিন ফিরে আসবেই। রাত যতই গভীর হোক প্রভাত ততই নিকটে আসে। তেমনিভাবে বিপদ যতই গভীর হোক, একদিন তা মুক্ত হবেই। এটাই সবার কাম্য।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১১
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×