প্রফেসর ম্যাক ধর্মে বিশ্বাস করেন, তবে দাড়ি রাখা পর্যায়ের ধার্মিক নন। তিনি চিরকুমার, মানে অবিবাহিত। তাই বলে ভাবার কোন কারণ নাই যে, অতীতে তার কোন প্রকার সমস্যা ছিল বা আছে। সারাটার জীবন গবেষণা আর কাজের মাঝে নিজেকে যেভাবে নিমগ্ন রেখেছেন, বিয়ে করার কথা বা চিন্তা তার মাথাতেই আসেনি। খুব ভোরে সাড়ে চারটায় ঘড়ি ধরে উঠেন, নামায পড়ে চলে যান তার সেই পুরোনো একাডেমিক ভবনের নির্ভৃত কক্ষে। সকালে একটা সমুচা, সিঙ্গাড়া খেয়ে নাস্তা সারেন। বিকাল পাচটা পর্যন্ত ডিপার্টমেন্টের কাজ সেরে চলে আসেন সেই নিভৃত ক েক্ষ তথায় থাকেন অনেক রাত অবধি।
সবার পরিচিত এইচ এস বি সি ব্যাঙ্কের ইন্টারন্যাশনাল টেকনিক্যাল কনসাল্ট্যান্ট তিনি। কাজ করার পর তাকে পয়সা দিতে চাইলে তিনি বলেন,
" টাকা নিয়ে আমি কী করবো কিছু যদি দিতে চান বুয়েটকে দিয়ে আসেন।" তার অর্থে বুয়েট পেয়েছে অর্ধ কোটি টাকার শতাধিক ব্র্যান্ড কম্পিউটার। ও এ বির ইলেক্ট্রনীয় পরীাগারের সিমুলেশন ল্যাবের ত্রিশটি পিসি তারই পকেটের টাকা দিয়ে। এডভান্স মেশিন ল্যাবের কোটি টাকার যন্ত্রপাতির অনেকটাই তার খরচে এসেছে কানাডা হতে। যন্ত্রপাতি আসার পর তার স্থাপনা ছিল ভয়াবহ দুরূহ ও ব্যায়বহুল কাজ। বিকাল পাচটা পর্যন্ত একাডেমিক কাজ সেওে মধ্যরাত অবধি তিনি নিজেই সেসব সংস্থাপনের কাজ করেছেন কোন পারিশ্রমিক ছাড়াই কয়েকজন হেল্পার নিয়ে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সে ল্যাবের ফোরের ম্যাটাও স্যারের নিজের পয়সার। পাওয়ার ইল্ট্রেনিকস ল্যাবের ওসসিলোসকোপ মেশিন গুলো আর প্রয়োজনীয় ডিভাইস ক্রয়ে অকাতরে টাকা দিয়েছেন তিনি।
কিছুদিন আগে মালেশিয়ায় গিয়ে লাখ দশেক টাকা পেয়েছিলেন তিনি। টাকাগুলো নিয়ে দিয়ে আসেন তার পরিচিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের, বলে আসেন,
"বাংলাদেশের যেসব লোক এখানে জেল খাটছে এ টাকায় তাদের ছাড়িয়ে নেয়ার ব্যাবস্থা করেন।" শূণ্য হাতে ফিরে আসেন তিনি দেশে। কার জন্য টাকা আনবেন তিনি? আর লক্ষটা পুরুষের মত বউ বাচ্চার স্বার্থপর সংসার চিন্তার উধের্্ব তিনি। নিজের খাওয়া ও চলার জন্য কটা টাকাই বা লাগে? (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০