একটু আগেই আমার বড় আপা মেডিকেল থেকে এসে আমারে তার মোবাইলের একটা ভিডিও দেখাইল । পোস্ট মর্টেমের ভিডিও।দেখলাম একজন ডোম কিভাবে একটা লাশেরে কাঁটা ছেড়া করতেসে ।ঠিক মত বুঝা যাচ্ছিল না কারণ একটু দূর থেকে ভিডিও টা করা ।তারপরেও বাকিটা কল্পনা করে নিচ্ছিলাম।দেহটা কাটছে,হার্ট লাংস বের করতেসে ।মাথার চামড়া ছিলে ফেলতেসে ।তারপর হাতুড়ি দিয়ে খটাশ খটাশ বাড়ি মেরে মাথাটা ফাটায় ফেলতেসে । কি আশ্চর্যই না একটা মানুষের জীবন । একটু আগেই হয়ত রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। জীবন নিয়ে কতই না স্বপ্ন দেখতেসিলো ।তারপরই হঠাৎ করেই হয়ত বা কোন বাস বা দ্রুত যান এসে মেরে দিয়ে গেল । শুধু তাকে তো মারল না,মেরে গেল তার সব স্বপ্ন আকাঙ্খাকে। মেরে গেল তার পুরা পরিবারটাকে ।কি অদ্ভুত!
খুব খারাপ লাগে এসব মৃত্যুর খবর শুনতে । কি আশ্চর্য মানুষের জীবন ।এসব দেখে কিছুক্ষণ হয়ত দুঃখ টুক্ষ করি। তারপর আমরা আবার আগের মত হয়ে যাই ।
কখনো কখনো চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে পত্রিকায় অগ্নিদগ্ধ মানুষের খবর পড়ি । কখনো বা সোফায় গা হেলিয়ে টিভির চ্যানেল ঘুরাতে ঘুরাতে লাশের খবর দেখি ।হিসেব কষতে থাকি,রানা প্লাজায় দেড় হাজার,নীমতলিতে দেড়শ ,বিডি আর ট্র্যাজেডি তে ১৪৯ ইত্যাদি ইত্যাদি ।তারপর প্রস্তুতি নেই সিনেপ্লেক্সে গিয়ে সিনেমা দেখে আসার।
পৃথিবীটাই তো এমন ।খবর দেখতে দেখতে কোন সময় নিজেই যে খবরের পাতায় চলে আসব না তার গ্যারান্টি কি?তারপরেও আমরা খাই দাই ঘুমাই। খবর দেখি ।
এর মাঝখানেই তৈরি হয়ে যায় আরো কত কত খবর। কত কত ডোম আরো কত কত লাশ কাটাছেড়া করে ।
সেই ডোমের কোন মা নেই বাবা নেই ভাই নেই । কেউ নেই। লাশকাটা ঘরে সে একা। তারপাশে যারা আছে তারা না পারে কথা বলতে না পারে তার হাতের বিড়িটা মুখে নিয়ে দুটো টান দিতে।এ ত সেই ডোম যে না পারে কারো সাথে থাকতে,না কেউ পারে তার সাথে থাকতে।
এসব লিখতে লিখতেই নিজেকে ডোমের মতই মনে হয়। আশে পাশে লাশ দেখে দুর্গন্ধে নাক চাপা দেয়ার প্রয়োজন বোধ করে না সেই ডোম ।যার পাশের সবকিছুকেই প্রাণহীন মনে হয়,সেই ডোম।
ক্লান্ত হয়ে গেলাম,সত্যই ক্লান্ত।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৫