জীবন যদি একটা স্কেল হয়, ক্ষয়ে ক্ষয়ে তা প্রায় শেষের পথে। ফুরিয়ে যাওয়ার এই ক্রান্তি লগ্নে পলাতক হতে ইচ্ছে হয়। জিপসী সময়কে ফাকি দিয়ে আর কতকাল !
বুড়িয়ে যাচ্ছি। আমার বন্ধু আমাকে মনে করিয়ে দিল। সে পথে হাটত। সে বলত পথ কখনও বুড়ো হয় না রে ! বাক পেরুলেই নতুন পথ। নতুন যৌবন। যৌবনের বুকপকেট লুট করে তার হাটার বড় লোভ ছিল। বুকপকেটে কাশফুল আর জোনাকী ছিল। মেঘ ছিল বাতাসে ভর করে। শ্রাবণের কালে মৃত্তিকার ভালবাসায় বৃষ্টি ঝড়েছিল উজাড় হয়ে। আমার বন্ধু কাদাজলেই বারংবার ফিরে যেত। সেখানে তার শৈশব ছিল। দোআশ হৃদয়ে অন্তহীন সবুজ ছিল। তারপর নবান্ন পেরিয়ে চৈত্রসংক্রান্তি।
চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। ডাক্তার বলে দিয়েছে চশমটা বদলে নিতে। ইদনিং সামান্য ঠান্ডায় শরীর জড় হয়ে বসে। গলায় ব্যাথা জমে। ওম এবং আশ্রয় নিয়ে বড্ড বেশি চিন্তা হয়। আমার বন্ধু বলত, ব্যাস্ততা কমে গেলে যাপিত জীবনের শ্রান্তিগুলো পেচিয়ে উঠে পরগাছার মত। একবার পেচিয়ে গ্যালে আর কিছুই যে জোটে না। ক্রমাগত দুর্বল হাত এবং পা অবশ হয়ে আসে। মাথাটাও বিগড়ে যায়।শত্রু এবং বন্ধু উভয়কেই অসহ্য হয়।
সিগারেট টেনে টেনে হৃদপিন্ডটা কালো। অথচ একসময় কি সবুজই না ছিল ! আমার বন্ধু একবার চিঠিতে আমার হৃদপিন্ডটা চেয়েছিল। দিইনি। খুব অহংকার ছিল। এখন মনে হয় দিয়ে দিলেই বরং ভাল ছিল। ছুড়ি কাচিঁর ভয় ছিল না। দেখা যাক তোমাদের ফিল্টার কতটা কালো নিংড়ে নিতে পারে আমার ফুসফুস থেকে। চোখের উপরে ঝলসে উঠে হাজার আলো। আমার চোখের পাতা আরও কুচকে যায়। কেমন যেন এক শূন্যতায় আমি ভাসতে থাকি! আমার বন্ধুও শূন্যতার কথা বলত। সে বাচেনি। হারিয়ে গিয়েছিল।
এখানে এবং জানলা ওপাশে কতটুকুই বা দূরত্ব! এপাশের গল্পে সবাই চরিত্র। ওপাশে গল্প পুরোটাই অজানা এক আদি অন্ধকারে ঢাকা। তবুও সকল সাধনাই যে ওপাশের জন্যই এবং ঐখানেই মিলায়! জানি ভাল আছ, ওপাশের বন্ধুরা। আসছি আমি তোমাদের কাছেই। শ্রীঘ্রই।


অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



