somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

BM Khalid Hasan
আমি? প্রচুর মুভি দেখি, পজিটিভ ক্যারেক্টারকে সাপোর্ট করি, ভূল করলে স্বীকার করি, তথ্য জানতে ভালবাসি, সবকিছুতেই ইন্টারেস্ট আছে, নিউট্রাল ওপিনিওন দেই। কিন্তু ৯৯% চান্স আপনি আমার লজিকে অফেন্ডেড হবেন!

প্রথম ফিল্মে যেভাবে সেট নিয়ন্ত্রণ করবেনঃ (বেগিনার ইন্ডি-মেকার দের জন্য)

১৭ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ফিচার ফিল্মে প্রত্যেকটা কাজের জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্টের লোকজন কাজ করে। ক্যারেক্টার ও, সীন কেমন হবে তা ডিরেক্টর বোঝানোর পর সিনেমাটোগ্রাফার, মেক আপ আর্টিস্ট, আর্ট ডিজাইনার, লাইট ম্যান, ও এডিরা যার যার গ্রুপ নিয়ে কাজ শুরু করে । ডিরেক্টর ঠান্ডামাথায় সীন বুঝিয়ে শট নেয় এবং মনিটরে স্ক্রিপ্ট, অভিনয় ও লুক পারফেক্ট হয়েছে কিনা অবজার্ভ করে। সবাই অভিজ্ঞ হওয়াতে তাকে সব কিছু নিয়ে ভাবতে হয়না ।

কিন্তু ইনডিপেন্ডেন্ট শর্ট ফিল্ম করার সময় টিমে কম লোক থাকবে । এসময় কেউ ই অভিজ্ঞ থাকেনা । তাই সেটে শ্যুট শুরু করার পর একটা কনফিউজিং অবস্থার তৈরি হয় । ডিরেক্টরকে ছোটাছুটি করতে হয়, আর্টিস্টরা ডিসকমফোর্ট ফিল করে, ক্যামেরাতে শট মিলে না । মোট কথা কাজে একেবারেই প্রফেশনালিজম থাকে না ।

তাই, আমি নিজের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কিভাবে ঠান্ডা মাথায় সব ম্যানেজ করে সেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন সেটা বলবো। ইনডিপেন্ডেন্ট ফিল্মে নিচের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবেঃ

১. স্ক্রিপ্টঃ

ফিল্ম মেকিংয়ের প্রথম শর্ত হলো একেবারে বাই দ্য বুক কাজ হতে হবে। হলিউড মুভিগুলোর ব্রেক ডাউনে দেখবেন একটা লাইন ও স্ক্রিপ্টের বাইরে থাকে না ।

প্রথমেই সব প্রি প্ল্যানড রাখতে হবে যেন লোকেশনে গিয়ে সময় নষ্ট না হয় । স্ক্রিপ্ট শেষ করার পর ই সিনেমাটোগ্রাফারকে নিয়ে লোকেশন দেখতে হবে । আপনি শট বলার পর সিকোয়েন্স কোনদিক থেকে কোনদিকে হবে সে আপনাকে বলবে ।

তখন আপনি প্রতিটা ডায়লগের শট ডিভাইড করে রাখতে পারবেন । এতে আপনার মাথায় ভিজুয়ালি ছবিটা তৈরি হয়ে যাবে । একেকটা শট পড়ে শ্যুট করলে অভিনয়ে পুরো ফোকাস দিতে পারবেন ।

২. লীডারশিপঃ

ফিল্ম প্রোডাকশনে সবার ভূমিকা থাকলেও অরগ্যানাইজ করার দায়িত্ব ডিরেক্টর এর । প্রফেশনাল কাজে ডিরেক্টরের কথা অনুযায়ী সব প্ল্যান করা হয় । অন্যরা অনেক সাজেশন দিতে পারে, কিন্তু ডিরেক্টর মেইন কনসেপ্ট এপ্রুভ করলেই সেটা কাজে লাগে । যেমনঃ অ্যান্থনি রুশো ও জন ফ্যাভ্রু দুজনেই ফেমাস ডিরেক্টর । কিন্তু রুশোর মুভিতে ফ্যাভ্রু তার প্ল্যান শুনে তার কথামত অভিনয় করে । এটাই প্রফেশনালিজম ।

আমাদের সমস্যা হয় কারণ আমরা তরুণ বন্ধুদের নিয়ে আমরা কাজ করি । তখন সবাই যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে আইডিয়া দিতেই থাকে, দিতেই থাকে । এতে ডিরেক্টরের মোটিভেশন ও কনফিডেন্স চলে যায় । আবার মন খারাপ হয় কিনা এটা ভেবে বন্ধুর কথা রাখা হয় । নেভার ডু ইট ।

মুভিতে ইমপ্রোভাইজ করা যায় অনেক কিছু । কিন্তু সেটা সবার কথা মেনে করতে হয়না । সবাই আপনার মত মুভি মেকিং নিয়ে ভাবেনি, স্টাডি করেনি, তারা শুধু দেখেই অভ্যস্থ । এদিকে আপনি শুট ও এডিটিং দুটোই ভেবে রেখেছেন । সবার কথা মানলে মিসম্যাচের ফলে মুভি খিচুড়ি হয়ে যাবে । তাই, আপনাকে একইসাথে সবাইকে কনভিন্স করে বাজে আইডিয়া এড়িয়ে চলতে হবে ।

৩. অ্যাসিস্ট ও ক্রুঃ

আপনার কথা শুনে হেল্প করবে এমন বন্ধুদের সাথে রাখবেন । তবে কখনোই সেটে অতিরিক্ত মানুষ রাখবেন না । প্রথমতঃ বন্ধুর কাজ বলে প্রফেশনাল সেটের মত সবাই সাইলেন্ট থাকবে না । কেউ অসময়ে বেশি দুষ্টুমি করে ফোকাস নষ্ট করে দেবে । পাবলিকআবার পাবলিক প্লেসে এত মানুষের বিশৃঙ্খলায় ঝামেলা হবে।

এজন্য ব্যাকগ্রাউন্ডে বিভিন্ন জিনিস রাখা, এক্টরকে সাজানো ও কোনো খারাপ পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য জন্য যে কয়জন দরকার ঠিক সেই কয়জনই রাখবেন । খুব দুষ্টুমি ও প্রাংক করে এমন কাউকে রাখবেন না, কারণ সে শুধু ঝামেলা করে সময় ও ফোকাস নষ্ট করবে ।

যারা অ্যাসিস্ট করবে তাদেরকে আপ্যায়ন করুন । যাতায়াতের খরচের বিষয়টা খেয়াল রাখুন । এরা আপনার দুঃসময়ের সাথী, তাই কৃতজ্ঞ থাকতে হবে ।

৪. অভিনয়ঃ

মেইন শ্যুটের আগে অ্যাক্টর কে নিয়ে একবার শট রিহার্সাল করবেন । ওইসময় সিনেমাটোগ্রাফার ফ্রেমিং চেক করবে । এক্টরকে বলবেন কোন শট থেকে কোন শট টুকু ক্যামেরাতে যাবে, কখন সে কি করবে ইনস্ট্রাকশন দিতে থাকবেন । তারা সেই টাইমিং অনুযায়ী পারফর্ম করবে।

এভাবে আগে থেকে লেখা শট বাই শট নিবেন । যেহেতু সবাই নতুন তাই সিকোয়েন্সে সিরিয়াল মেইন টেইন করবেন । প্রফেশনাল সেটে সুবিধা মত অংশ আগে শুট নেয়া যায় । কিন্তু বেগিনারদের কাজে এক্টর ও ডিরেক্টর দুজনেই গুলিয়ে ফেলবে বা অনেক অংশ ভূলে যাবে । তাই স্ক্রিপ্টের ধারাবাহিকতা মেনে কাজ করতে হবে ।

এক্টর একটু ভূল করলে সাথে সাথেই কাট করবেন না না । এতে সে থতমত খেয়ে যাবে । পুরো টেক ফিনিশ করবেন । দেখা যাবে যেটুকু খারাপ হয়েছে অন্য এংগেল থেকে নিতে পারবেন, এতে সময় বাঁচবে । সেম শট আবার নিলে এক্টর তার কোন পার্ট ভাল ও খারাপ হয়েছে আইডেন্টিফাই করে ভালো ফ্লো পাবে ।

মূল কথা অ্যাক্টরদের এনকারেজ করবেন । খারাপ করলেও বলবেন যে গুড শট, কিন্তু আরেকবার নিব আমরা, এই জায়গা টুকু আরেকটু এভাবে করতে হবে । সবসময় এক্সপ্রেসন কম দিতে বলবেন । বর্তমান ফিল্মের ভাষা ও টেকনোলজিতে বেশি এক্সপ্রেশন দিলে ওভার এক্টিং মনে হয় । যত হালকা ও বাস্তবিক অভিনয় হবে তত বেটার ।

৫. আর্ট ডিজাইনঃ

একটা বন্ধু বা বান্ধবীকে রাখবেন যে ক্যামেরা টেস্ট করার সময় ইনটেরিয়রে কি কি থাকবে ভাল বুঝে । বিলিভ মি, আপনি সব ম্যানেজ করার ফলে প্রতিটা মোমেন্টে অনেক ছোটখাট জিনিস ভূলে যাবেন । প্রফেশনাল কাজে এই ঝামেলা এড়াতে সব কাজে মেইন পার্সনের সাথে গ্রুপে অ্যাসিস্ট্যান্ট বা সুপারভাইজর থাকে ।

আরো অনেক ব্যাপার আছে । তবে আজ এই কয়টার বেশি বলব না । এগুলো শুটিংয়ের গতি অনেক এগিয়ে দেবে। ফিল্মে সুন্দর মুভিং ক্যামেরা ওয়র্ক বেশি করলে ছোটখাট ফল্ট ঢাকা পড়ে যায়। কিন্তু সিনেমাটোগ্রাফার পাকা না হলে কম শট নেবেন, ট্রাইপড ইউজ করবেন । পাঁচ টা খারাপ শটের চেয়ে দুই টা ভালো শট থাকলে আপনার ফিল্ম দৃষ্টিনন্দন হবে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:২৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×