অনেস্টলি স্পিকিং, “হোয়াট এ শো’ নিডস এ বেটার হোস্টিং স্টাইল !” বাংলাদেশ এইটিস থেকে বিভিন্ন জনপ্রিয় টিভি শো হয়ে এলেও, অ্যামেরিকান ফরম্যাটের গসিপ শো তেমন কখনো হয়নি । আগে ইত্যাদি বা আনন্দমেলার মত ম্যাগাজিন হতো। এছাড়া নাইট টক শো-তে গেস্ট ডেকে ফরমালি ইন্টারভিউ নিতো । কনটেন্ট প্রমোশন, গেম, রোস্টিং এগুলো কম হতো । ‘হোয়াট এ শো’ এই কজুয়াল জিনিসগুলো রাখার কারণে দর্শকের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু এই শো’য়ের হোস্টিং স্টাইলে বড়সড় ঝামেলা আছে।
‘হোয়াট এ শো’-এর সমস্যা কি?
সমস্যা একটাই, দ্য এংকর রাফসান সাবাব ইজ নট ফানি এট অল। নো অফেন্স, রাফসান সাহেব লোকটা এডুকেশনালি ট্যালেন্টেড। কিন্তু শো হোস্ট হিসেবে তার কিছু কমতি আছে। প্রাথমিক সমস্যাগুলা হচ্ছেঃ
• তার কথার স্টাইলে কেউ হাসে না, উল্টো গেস্টদের কথায় হাসে। কারণ সে স্ক্রিপ্টের বােইরে ইনস্ট্যান্ট রেসপন্স দিতে অপারগ।
• সে স্পষ্টভাবে কথা বলতে অপারগ, কিছুক্ষন পরপর তার একটাই কথা, “প্লিজ-হ্যাবে-রাউন্ডব-প্লজ” (Please have a round of applause)
• সে একটা কিছু শোনার পর পাঞ্চ লাইন দিতে অপারগ। অথচ গসিপ শো এর মেইন মোটিফ হলো যাই বলা হবে সেটাকে হাস্যকর বানানো। গেস্টরা কোনো ফানি ইনসিডেন্ট শেযার করলে মুখ হা করে হ্যাং হওয়া ছাড়া তার কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়না।
• দেশি শো হিসেবে আরেকটা ইমপারফেকশন হলো রাফসান সাবাব এনভাইরনমেন্ট কন্ট্রোল করতে পারে না ।
আমাদের বাঙালিদের অলরেডি হাউকাউ করা একটা স্বভাব আছে । যেকোনো কমপিটিশন হলেও স্লেজিং করতে একসাথে সবাই ঝগড়া ঝাটি লেগে যায় ! রাফসান সাবাবের গেস্ট রাও সেম কাজ করে, যেটা এবিএম সুমন বা কারিনা কায়সারদের এপিসোড দেখলে বুঝতে পারবেন! কিন্তু বিদেশী টিভি শো দেখুন। কেউ মাইকে থাকলে অন্য কেউ তার কথা শেষ হবার পর নিজের কাউন্টার দেয় ।
মাইক ও ক্যামেরার সামনে আপনাকে কিছুটা স্থির থাকতে হবে এবং অবজার্ভ করে ওপিনিওন দিতে হবে। নাহলে দেখতে ভাল লাগে না, রেসপন্স ও ভাল তৈরি হয়না। ‘হোয়াট এ শো’ কোনান ওব্রায়েন, ড্যাভিড লেটারম্যান, জিমি কিমেল-দের শো থেকে অণুপ্রাণিত, রাইট? তাদের শো গুলো দেখবেন কতটা গোছালো হয়। এখানে ডেস্কে হোস্ট কিছুটা উপরে বসেন, কারণ শোয়ের মূল চালিকাশক্তি থাকে সে। সে গেস্টদের কথা মন দিয়ে শোনে, তারপর নিজে প্রত্যেকটা কথার সাথে রিলেট করে একটা ফানি এজাম্পশন বলে!
রাফসান সাবাবের বিকল্প কি হতে পারে?
চ্যানেল আই হলো ‘হোয়াট এ শো’-এর প্রোডিউসার/ব্রডকাস্টার । চ্যানেলের চাংক বা ইউটিউব ভিউসের জন্য রাফসানের প্রতি তাদের ট্রাস্ট অনেক বেশি। এখন অন্য টিভি চ্যানেলের উচিত ভালো হোস্ট সিলেক্ট করে এরকম গসিপ শো করা । শো গুলোর মাধ্যমে দেশীয় সেলিব্রিটি দের সামনে আনা যায়, দর্শক ও জানতে পারবে কে রেড ফ্ল্যাগ আর কাকে এক্সেপ্ট করতে হবে ।
আপনারা ভারতের কপিল শর্মার শো দেখেছেন নিশ্চয়ই। দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে একজন কমেডিয়ান ছিল সে। এখন প্রতি এপিসোডে ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পায় শুধু তার ইনস্ট্যান্ট হিউমার সেন্সের জন্য, যা আর কারো থেকে পাচ্ছেনা টিভি ইনডাস্ট্রি। বাংলাদেশেও এরকম অনেক তরুণ আছে যারা শুধু স্টেজ পাচ্ছে না। টিভি ইনডাস্ট্রি বাচিয়ে রাখতে হলে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ভাল শোমেকারদের নিতে হবে।
আমি কেন সমালোচনা করছি?
আপনাদের মনে হবে পার্সোনাল অপছন্দ থাকতে পার, তাই বলে স্কিল নিয়ে কথা বলবো কেন? আমার নিজেরই এমন কি যোগ্যতা আছে যে অন্যের স্কিল নিয়ে সমালোচনা করবো? আসলে আপনি যখন একটা পাবলিক প্লাটফর্মে কাউকে পুশ দেবেন, তখন এমন কাউকে দেওয়া উচিৎ যে নেক্সট জেনারেশনের গাইডলাইন হিসেবে কাজ করবে। আজকাল মেরিল প্রথম আলোর মত বড় এওয়ার্ড শো নিয়ে মানুষ হাসাহাসি কেন করে? কারণ শো হোস্ট হিসেবে অযোগ্য মানুষেরা লেম কথা বলে উপস্থাপনা করে।
আপনি এটা মানতে বাধ্য হবেন যে রাফসান সাবাব এলিট কমুনিটিতে বিলং করে। যার কারণে কম ফলোয়ার নিয়েও ইউটিউব ক্রিয়েটর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। একসময় নিজের গায়ের রঙের জোকস দিয়ে স্ট্যান্ড আপ কমেডি করে মানুষের সিমপ্যাথি নেয়। সে সহজেই সালমান মুক্তাদিরদের মত লার্জ ক্রিয়েটরদের ক্লোজ পিপল হয়। তাই রাফসানের নেপোটিজম নিয়ে কথা বলাই আমার উদ্দেশ্য। এই পোস্টে আমি রাফসান সাবাবের ওয়াইফকে চিটিং করার মত ইসু গুলো ফোকাস করিনি। শুধু হোস্ট হিসেবে ওভাররেটেড হওয়া নিয়েই কথা বলছি।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৫