কিছুদিন আগে আমাদের ল্যাবে এসেছিলেন ইউসি সান দিয়েগো'র প্রফেসর ড. জুলিয়ান স্রোয়েডার, যিনি এই মুহুর্তে পৃথিবীর অন্যতম সেরা একজন প্লান্ট সায়েন্টিস্ট, একই সাথে এমেরিকান সোসাইটি ফর প্লান্ট বায়োলজির প্রেসিডেন্ট।
পরিচিত হতে গিয়ে বিনয়ের সুরে বললাম -আমি একজন সামান্য গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট এই ডিপার্টমেন্টে। সাথে সাথে আমাকে অবাক করে দিয়ে বললেন-
– ভুল। তুমি সামান্য কেউ নও। আমি প্রমাদ গুনলাম, মনে মনে শুধালাম বলে কী? !
একটু থেমে বললেন, তুমি নিশ্চই জানো এখন পৃথিবীর সেরা ইনভেনশন গুলো আসে এই গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টদেরই হাত ধরে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমরা শুধু মেন্টরের ভূমিকা পালন করে থাকি।
এরপরে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন- আমি কোন দেশ থেকে এসেছি। বললাম- আমি এসেছি বাংলাদেশ থেকে।
শুনেই বললেন ওহ, তুমি জেবা ইসলাম কে নিশ্চই চেনো। বললাম অবশ্যই, উনি আমার আন্ডারগ্র্যাড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
-ও তাই! আমি জানি ও খুব ভালো কাজ করে সল্ট টলারেন্স রাইস নিয়ে। আমি প্রাউড ভঙ্গিতে মাথা নাড়লাম।
-তোমাদের কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়েও অনেক ভালো গবেষনা হয়, তাইনা? আমি বললাম জ্বী, একারনেই আমরা এখন নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে অন্যদেশে রাইস রপ্তানি করে থাকি।
-তোমাদের গভর্নমেণ্টের উচিত এই খাতে আরো ইনভেষ্ট করা, এইবারও আমি মাথা নাড়লাম, তবে মন খারাপ করে।। কে শোনে কার কথা… মনে মনে ভাবলাম ভুল ভাবছেন মি. শ্রোয়েডার—আমাদের শিক্ষকরা গবেষনা করেন নিজের গাটের পয়সা দিয়ে, ইউজ করা পাইপেট টিপস, ফ্যালকন টিউব রিসাইকেল করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের ৯০ ভাগ শুধু বেতন-ভাতার জন্য…।
বিদায়বেলায় বললাম তোমার কাজের প্রায় সবগুলোই তো ন্যাচার, সায়েন্স কিংবা সেল এ পাব্লিস করা, কীভাবে করো এটা? এবারের উত্তরটিও বেশ চমকপ্রদ। বললেন— আমার গ্রাডস্টুডেন্টরা করে এটা। তবে আমাদের ল্যাবের (ইউসি সান দিয়েগো) অনেক ভালো কাজগুলো কিন্তূ ন্যাচার বা সায়েন্স এ যায়নি—আমরা অন্য জায়গায় পাব্লিশ করেছি।।
সবশেষে বাংলাদেশে যাবার আমন্ত্রন জানালাম—বললেন অবশ্যই যাবো।। আমার এক কলিগ ছিলো বাংলাদেশি বাট আই লষ্ট হিস কন্টাক।।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৩৩