somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লেখক বনাম প্রকাশক : বইমেলা ২০১৮

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রকাশক লেখকদের দ্বন্দ্ব তুমুল পর্যায়ে। লেখা লেখির এই জগতে না ঢুকলে বুজতে পারতাম না এটাও অন্য সব জগতের মতো। কোন প্রকাশক লেখকের লগ্নির টাকায় বই ছাপেন কেউবা ফেসবুক ফলোয়ার এর সংখ্যার উপর টাকা লগ্নি করেন। এক্ষেত্রে শেষমেশ মাশুল গুনতে হয় লেখকদের। নিজের লগ্নি করা টাকা আর সম্মান বাঁচানোর জন্য লেখকদের একটু করে হলেও কটলার জ্ঞান প্রয়োজন এই যুগে।

যারা নতুন বই বের করবেন বা যাদের ফেসবুক ফলোয়ার বেশ তলানিতে তাদের বেশ সতর্ক ভাবে এগুনো প্রয়োজন। ১৬ পাতার ১ ফর্মার জ্ঞান না থাকলে জামেলায় পড়বেন। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই হোম ওয়ার্ক করে ফেলা যায়। এরপর প্রচ্ছদ আর ছাপা খানার ঠিকানা জোগাড়। দেশের অনেক প্রচ্ছদ শিল্পী আছেন যাদের ঠিকানা অনলাইনে পাওয়া যায়। আর প্রিন্টিং প্রেস তো খুঁজলেই অহরহ। বই ছাপার পুরু বিষয়টা যদি লেখক নিজে দেখেন তাতে দোষের কিছু না। এটা হতেই পারে। প্রকাশকদের প্রধান কাজ ছাপানো বইয়ের ডিস্ট্রিবিউশন বা মার্কেটিং করা। বই বিক্রির মতো কঠিন বিষয়টা তাদের হাতেই। সেটাই যদি নাহ হয় তবে লেখকের প্রকাশক হতে দোষ কি ?

নিজের বই এর বিক্রির জন্য আমিও বেশ মরিয়া। বইয়ের সাথে টি-শার্ট ফ্রি বা এই রকম নানা ধরণের কটলারীও মার্কেটিং কপচালাম। কিন্তু যে বই প্রকাশকের হাতে তা আমি হাজার চাইলেও বিক্রি বাট্টায় যাবে না। এক্ষেত্রে লেখকরা নিজে থেকে নিজের বইয়ের মার্কেটিং করতেই পারেন। তবে তা যদি হয় নিজের পরিবার পরিজনের কাছে তবে সে বই প্রকাশ না করাই ভালো।

আমাদের দেশে বই এর বাজার বেশ সীমিত। বছরে একবার একুশে বই মেলায় আর কিইবা বই বিক্রি হবে। সুতরাং লেখকদের আরো বেশি বইয়ের ডিস্ট্রিবিউশন পয়েন্ট এর দিকে নজর দেয়া উচিত। রকমারি ডট কম বা এই জাতীয় অনলাইনে বই বিক্রির সাইট গুলুতে লেখক চাইলে নিজেই নিজের বই আপলোড দিতে পারেন। এক্ষেত্রে সাইট এ গিয়ে এদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করলে এরাই আপনাকে পুরু পক্রিয়া বলে দেবে। আর বেশির ভাগ বই এর স্বত্ব যেহেতু লেখকের , লেখক এটি চাইলেই করতে পারেন।

যাদের সামথ আছে তারা ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়াতে অনলাইনে প্রচার করতে পারেন। এক্ষেত্রে লেখককে নিজে বই এর কেনা বেচার দায়িত্ব টুকু নিতে হবে। দেশে অনেক ই -কুরিয়ার সার্ভিস আছে যাদের সাথে কথা বলে নিলে ওরাই আপনার হয়ে পাঠকের কাছে বইগুলো পৌঁছে দিবেন।

অনেক লেখক নিজের বই কলকাতা থেকে প্রকাশ করার ইচ্ছে পোষণ করতেই পারেন। এক্ষেত্রে কলকাতার অনলাইনে অনেক বুক পাবলিশার্স কোম্পানি আছে যারা ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ৩০০ কপি বই ছাপিয়ে থাকে। আর প্রচলিত সকল আইন আর নিয়মের মধ্যে থেকেই আপনার বইয়ের অনলাইনে মার্কেটিং ওরা করে দিবে। আমাজন থেকে শুরু করে ওপর বাংলার বেশ কয়েকটি অনলাইন সাইটে আপনার প্রকাশিত বই এর বিপণনও ওরা করে দিবে।

যেসব লেখকরা এখনো ভাবছেন শুধু ভালো লিখলেই লেখক হয় যায় তাদের জন্য হতাশা বেশ কঠিন আকার ধারণ করে। কারণ বই প্রকাশের পর শুধু প্রকাশকের কাছে ধর্ণা দিলেই এখন আর খুব ভালো লেখক হয় যায়না। এর জন্য প্রয়োজন বইয়ের রিচ বা ডিস্ট্রিবিউশন প্ল্যান। খুব ভালো ডিস্ট্রিবিউশন প্ল্যান নাহ থাকেল যে কোনো লেখন অতি অল্পতেই খসে পড়তে পারে।

আমার ক্ষেত্রে আমি এই মুহূর্তে নিজের বইয়ের জন্য একটা কন্টিনজেনসি প্ল্যান করে রেখেছি। কারণ আমার ধারণা মেলা শেষে আমার প্রকাশক প্রায় সব গুলু বইই আমাকে ফেরত দিবেন। এটা একজন লেখকের জন্য বেশ বাজে রকমের অবস্থা। তাই আমি নিজে উবার আর পাঠাও এর মতো রাইড শেয়ার প্রতিষ্টান গুলোকে ফোন দিয়ে ওদের প্রতিটা গাড়িতে আমার বইটা নিশ্চিত করতে বললাম। ছোটখাটো একটা এপপ্স এর ধারণা দিলাম। রিড ওন রাইড। মানে যাত্রীরা যখন গাড়িতে থাকবেন ওই সময়টা আমার বইয়ের কিছু পাতা উল্টে দেখবেন। আর বইটা থাকবে গাড়ির সামনের সিটের পেছনের কভারে। এক্ষেত্রে যাত্রী চাইলে পড়তেও পারে আবার নাও পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে অন্তত আমার বইয়ের অবিকৃত অংশ টুকুন চলে যাবে ঢাকা শহরের গাড়িতে গাড়িতে। এটাকে বলা যায় বাল্ক সেল।

জানি না কতটুকুন শুদ্ধ এই রিড ওন রাইড ধারণা। তবে এই মুহূর্তে এতো গুলু বই যদি বাসায় ফিরে আসে তবে আমি নিশ্চিত পরের বইটা লেখার সাহস পাবো না।

লেখকদের নিজের লেখা নিয়ে মার্কেটিং চিন্তা দোষের কিছু না। যদিও এটা প্রকাশকের দায়িত্ত্ব। তবে সব কিছু প্রকাশকের উপর ছেড়ে দিলে লেখকের লেখক সত্তার কি মূল্যায়ন ? আমাদের সবার উচিত বই বের করার আগে নিজেদের বই এর মার্কেটিং প্ল্যান . ডিস্ট্রিবিউশন প্ল্যান আর প্রকাশকদের সাথে চুক্তি নিয়ে কথা বলা। দিন শেষে পাঠক একজন ক্রেতা আর আমরা লেখক এক্ষেত্রে বিক্রেতা।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২৯
১০টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×