somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২য়, ৩য় ও ৪র্থ মাত্রার জগতের তুলনামুলক বর্ণনা (বড়দের জন্য নয়)

২১ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


Georg Friedrich Bernhard Riemann
রেইমান। গণিত ও পদার্থবিদ্যায় যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছেন। যে ইউক্লিডিও জ্যামিতি (আমরা যে জ্যামিতি স্কুলে পড়ি) ২০০০ বছর ধরে বিকশিত ও চর্চিত হয়েছে, জার্মানির এক অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া এই গণিতবিদ তার ভীত নাড়িয়ে দিয়েছেন।
১৮৫৪ সালের ১০ জুন তিনি জার্মানির University of Gottingen এ একটি Lecture দেন; তিনের অধিক মাত্রার তত্ত্বের জন্ম হয়। ৬ দশকের মধ্যে Einstein চতুর্থ মাত্রার রেইমান জ্যামিতি ব্যবহার করেন মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং তা কিভাবে বিকশিত হয়েছে তা ব্যাখ্যা করতে। ১৩০ বছর পর পৃথিবীর পদারথবিজ্ঞানীরা ১০ মাত্রার জ্যামিতি ব্যবহার করবেন পদার্থবিজ্ঞানের সুত্রগুলোকে একিভুত করার জন্য।
৪র্থ মাত্রা সাধারনভাবে কল্পণা করা মুশকিল। তবে ২য় ও ৩য় মাত্রার মধ্যেকার পার্থক্য যদি আমরা বুঝতে পারি, তবে ৩য় ও ৪র্থ মাত্রার পার্থক্যটাও আমরা কিছুটা বুঝতে পারব। ব্যপারটা খুবই মজার।
মনে কর, তুমি কোন দেয়ালের মধ্যে দিয়ে চলে যেতে পার, বাইরে যাওয়ার জন্য তোমার দরজা খোলার দরকার নেই। তুমি যেকোনো কিছুর ভেতর দিয়েই দিব্যি হেঁটে চলে যেতে পার। বাবা-মা শোকেজের মধ্যে খেলনা তালা মেরে রেখে দিয়েছেন বা তোমার প্রিয় বইটা আলমারির ভেতর তালাবদ্ধ, ওগুলো নেবার জন্য তোমার তালা খোলার দরকার নেই! হাত দিয়ে খুব সহজেই তুমি তা নিতে পার। স্কুলে বা বন্ধুর বাসায় যাওয়ার জন্য তোমার হেঁটে বা গাড়িতে যাওয়ার দরকার নেই। ইচ্ছে করলেই তুমি হাওয়ায় মিলিয়ে সেখানে পৌঁছে যেতে পার। তোমার চোখ যদি হয় X-Ray মেশিনের মত, কেমন হবে ব্যাপারটা! সবকিছুর ভেতর দিয়েই তুমি দেখতে পাবে। সবকিছুর ভেতরটাও তুমি দেখতে পাবে। কারো গলায় কাঁটা আটকে গেছে বা দুষ্ট ভাইটা ব্যাটারি গিলে ফেলেছে, তুমি খুব সহজেই হাত দিয়ে বের করে নিয়ে আসতে পার, কোন ব্যাথাও লাগবে না- কিছু টেরও পাবে না। এই ক্ষমতাগুলোকে যদি তুমি ভালো কাজে লাগাও, সবাই তোমাকে Superman বলবে। সবাই বলবে, তোমার ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে। আর যদি খারাপ কাজে লাগাও, যেমন; চুরি করা, কারো কোন ক্ষতি করা, তাহলে সবাই তোমাকে শয়তান বলবে। পৃথিবীর কোন জেলখানায় তোমাকে আটকে রাখা যাবে না।


যাই হোক। এবার আসি ২য় ও ৩য় মাত্রার মধ্যে কি পার্থক্য সেই বিশ্লেষণে। ২য় মাত্রার জগত বলতে আমরা বুঝি, যে জগতে শুধু দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ আছে। যেমন; ১ টুকরো কাগজ। আর ৩য় মাত্রা হচ্ছে, যার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা আছে। যেমন; বাক্স বা কিউব। আমরা যে জগত আমাদের চোখের সামনে দেখতে পাই তা হচ্ছে ৩য় মাত্রার জগত। মনে করো, তুমি কথাও ২য় মাত্রার জগত দেখতে পেলে। ২য় মাত্রার জগত কেমন হবে?! আমরা যদি সাদা কাগজে মানুষ, বিল্ডিং, বৃত্ত ইত্যাদি আঁকি, তারপর সেগুলো কাঁচি দিয়ে কাঁটি, সেগুলো হবে ২য় মাত্রার জগতের মানুষ এবং স্থান বা স্থাপনা। এখন মনে করো, ২য় মাত্রার জগতে ১জন পুলিশ ১ জন দুষ্ট লোককে ধরলো। তারপর তাকে ১টি বৃত্তের মধ্যে আটকে রাখলো (বৃত্ত হচ্ছে ২য় মাত্রার জগতের জেলখানা)। তোমার মনে হলো, এই দুষ্ট লোকটিকে আরেকটা সুযোগ দেয়া উচিত। তাই, তুমি করলে কি, তাকে বৃত্তের ভেতর থেকে উঠিয়ে বৃত্তের বাইরে রেখে দিলে এবং সে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে গেল। পুলিশ এসে দেখলো যে বৃত্ত খালি। পুলিশটির যেহেতু ৩য় মাত্রা বা উচ্চতা সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই, সে কিছুতেই বুঝতে পারবে না যে, দুষ্ট লোকটি কিভাবে পালিয়ে গেলো। কারন, বৃত্তটি অক্ষত আছে, কোথাও ভাঙে নি। এখন ২য় মাত্রার জগতের কোনো মানুষের যদি এই ক্ষমতা হয় যে, সে “উচ্চতা” কি সেটা জানে এবং দৈর্ঘ্য, প্রস্থের সাথে সে উচ্চতায়-ও চলতে পারে, যেমনটা আমরা পারি, তাহলে, তার জগতের মানুষগুলো ভাববে, এই লোকের ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে।
তুমিও যদি ৩য় মাত্রার বাইরে কোনো ভিন্ন মাত্রায় প্রবেশ করতে পারো, তাহলে হয়তো সেই অস্বাভাবিক ক্ষমতাগুলো তোমারো হতে পারে আর তুমি হয়ে যাবে Superman-এর চেয়েও শক্তিশালী কেউ।

সূত্রঃ Michio Kaku- Hyperspace (কাকুর অনুমতি ছাড়া ভাবানুবাদ)
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

গাজার শিশুদের উদ্দেশ্যে - আমরা তোমাদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৫


তোমরা এসেছিলে মাথার উপর বোমা পড়ার ভয়ার্ত গল্প নিয়ে। যে বোমা তোমাদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে, লোকালয় ধ্বংস করেছে। আমরা কান বন্ধ করে উদাসীন হয়ে বসে ছিলাম। তোমরা এসেছিলে ছররা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবিতে গণতন্ত্রের নামে মবতন্ত্র

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১০



তথাকথিত গণতন্ত্রকামীদের পীর আল্লামা পিনাকী এবং ছোট হুজুর ইলিয়াস মোল্লার উস্কানীতে দেশজুড়ে চলছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে মবতন্ত্র। আল্লামা পিংকুর যুক্তি হচ্ছে- যে বা যারাই তাদের (গণতন্ত্রকামীদের) সূরে কথা না... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×