somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বটের ফলের মনের ভেতর বয়ে যাওয়া আবোল তাবোল কল্পনা

১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চলুন ঘুরে আসা যাক কল্পনার এক রাজ্য থেকে, যে রাজ্যের নায়ক/নায়িকা হিসেবে কল্পনা করি নিজেকে------

কল্পনা করুন নিজেকে কোন এক মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন হিসেবে যার অনেক কিছুই করার সাধ আছে কিন্তু সাধ্য নেই। বাস করেন আপনি রাজশাহীতে। কোন একটি কাজে আপনি এসেছেন ঢাকাতে। কাজ শেষ। এখন ফিরে যাবার পালা। রাতের ট্রেনে ফিরবেন আপনি রাজশাহীতে। নির্ধারিত সময়ের একটু আগেই আপনি পৌছালেন কমলাপুর রেলষ্টেশনে। ট্রেন ছাড়তে এখনো অনেক দেরি। সময় কাটানোর জন্য ঘোরাফেরা করছেন এদিক, ওদিক, এ প্লাটফর্ম, ও প্লাটফর্ম। ষ্টেশনে অবস্থিত বইয়ের স্টল গুলোতে ঘুরছেন আপনি, চোখ বুলাচ্ছেন এ বইয়ে ও বইয়ে। পুরো ষ্টেশন জনে লোকারন্য। কাউন্টারে টিকেট প্রত্যাশিদের ভিড়। আশে পাশে বেশ কিছু খাবারের দোকান যেখানে ভীড় জমিয়েছে অপেক্ষারতরা।

প্লাটফর্মে ঢোকার মুখেই একটি কফিশপ, তার বামে একটি বুকস্টল, তার বামে খানিকটা ফাঁকা জায়গা, তারপরেই আরো একটি বুকস্টল। মাঝের ফাঁকা জায়গাটাতে সাময়িক ভাবে বসেছে নতুন একটি কফিশপ, যার পাবলিসিটি বাড়ানোর জন্য দাঁড়িয়ে আছে একটি অল্পবয়স্ক মেয়ে কিনা অত্যন্ত টাইট জিন্স , টাইট টি-শার্ট পরিধান করে বিভিন্ন রকম ছলাকলা করে মানুষজনকে তাঁর দিকে , তাঁর দোকানের দিকে আকৃষ্ট করতে সদা তৎপর। আপনি হাটছেন আর দেখছেন। দেখছেন মানুশের ব্যস্ততা, হাটার ভঙ্গি, কথা বলা, মুখের চাহনি, আকর্ষনীয় মেয়ে অথবা হ্যান্ডসাম ছেলে। ট্রেন আসতে এখনো অনেক বাকি। আপনি ঘড়ি দেখছেন আর দেখছেন চারপাশের মানুষ। কফিশপ দুটোতে ভালোই ভিড় জমেছে। মাঝের কফিশপ টাতে অতি স্মার্টদের ভিড় লক্ষনীয়।
হঠাৎ করে আপনার খুব কফি খেতে ইচ্ছা করল। এতক্ষন ধরে যে ইচ্ছাটাকে দমিয়ে রেখেছিলেন তাকে আর চেপে না রাখতে পেরে গুটি গুটি পায়ে হেটে চললেন কোনার কফিশপটার দিকে। বিভিন্ন রকম কফি। আপনি দাম দেখছেন আর চিন্তা করছেন পকেটের অবস্থা। হঠাৎ আপনার নজর গেল দুটি অর্ধনগ্ন বাচ্চার দিকে যারা প্রচন্ড আগ্রহ নিয়ে কিছু একটা ধরে রেখেছে। আপনার কৌতুহল হল। এগিয়ে গেলেন কিছুটা। মনের ভাবটা এমন যে, "দেখে আসি একটু, কফি একটু পড়েই খাওয়া যাবে।" তারপর আপনি যা দেখলেন , তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেননা আপনি। আপনি দেখলেন , বাচ্চা দুটি একটি চটের ব্যাগ থেকে বের করলো একটি পলিথিন যার ভেতর আধা হলুদ রঙের ভেজা ভেজা কিছুর অস্তিত্ব বোঝা যাচ্ছিল বেশ। তারা গিয়ে বসলো এক কোণায়। তারপর পলিথিনের মুখ খুললো। একটি ছেলে তার নোংড়া হাতটি ঢুকিয়ে দিল ব্যাগের ভেতর। তাঁর চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে আছে।

হাতটা সে বের করলো এবং মুখে পুরলো। আপনি এতক্ষনে বুঝলেন সেটা কি!!!!!!!!!!! ব্যাগের ভেতরের বস্তুগুলো আসলে মানুষের ফেলে দেওয়া ঝোল মিশ্রিত খাবারের অংশ। বাচ্চাদুটি সেগুলোকেই সংগ্রহ করেছে তাদের উদর পূর্তি করার জন্য। খুব আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছে ছেলে দুটি। একজন ব্যাগের ভেতর থেকে হাত বের করলে আরেকজন হাত দেয়। এভাবেই পরম তৃপ্তির সাথে চলছে তাদের রাতের খাওয়া। হঠাৎ কোথাথেকে ছুটে এল আরেকটি ছোট্ট বাচ্চা। সে গভীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে অন্য দুজনের দিকে, তাদের খাবারের ব্যাগের দিকে। ছেলেদুটি তাকে একবার নিতে দিল। সেও পরম আগ্রহে মুখে তুলে নিল এক গ্রাস। খাবার শেষের দিকে। আর মাত্র দু-তিন বার নিলেই শেষ। তৃতীয় ছেলেটি ব্যাথাতুর নয়নে তাকিয়ে আছে সেদিকে। তাই দেখে ছেলে দুটি ব্যাগটি ফেলে রেখে নোংড়া প্যান্টে হাত মুছতে লাগলো। তাদের চোখে উদর পূর্তির তৃপ্তি খেলা করছে। আর তৃতীয় ছেলেটি ঝাপিয়ে পড়েছে সেই ব্যাগের উপর। অবশিষ্ট যা কিছু ছিল তা সে চেটেপুটে শেষ করে হাত মুছতে মুছতে চলে গেল।
আপনার এতক্ষনে সংবিৎ ফিরলো। মনের ভেতর চলছে এক ধরনের উথাল-পাথাল ভাব। আনমনে হেটে চলছেন আপনি কফিশপের দিকে। ...................................................................................................................................................................................

আচ্ছা , আপনি কি সেদিন কফি খেয়েছিলেন? জিজ্ঞাসা আপনার প্রতি। নিজের প্রতি সৎ থেকে নিজের উত্তরটা না হয় নিজেই খুঁজে নিন।

ভালো থাকুন সবাই। সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক। শুভময় হয়ে উঠুক প্রতিটি মুহূর্ত।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×