আজ ছোট বোনকে নিয়ে "হালদা" সিনেমাটা দেখলাম। "হালদা" শুধু মাত্র সিনেমা বলে মনে হয় নি। মনে হয়েছে হালদা একটি আন্দোলন, হালদা একটি প্রতিবাদ। নদী ও নারীর অপূর্ব সমন্বয় সাধন হয়েছে সিনেমাতে। জীবনের উৎস যদি বলি তাহলে একটি হলো নদী অরেকটি নারী। এই দুটোই আমাদের মা। এই বিষয়টা চমৎকার ভাবে ফুটে উঠেছে। হালদা বিনোদনমূলক চলচিত্র তবে সবাইকে বিনোদন দিতে পারবে বলে মনে হয় নি। হালদার বিনোদন হালকা বা চটুল বিনোদন নয়। হালদায় আপনি জোর করে হাসানোর কোন চেষ্টা দেখবেন না। কিন্তু হাসির দৃশ্য এখানে আছে ,আছে একশন দৃশ্যও।
একটা দৃশ্য আমাকে নাড়া দিয়েছে সেই দৃশ্যের কথা শেয়ার করি। দিলারা জামান দূর্ঘটনায় পা ভেঙে বিছানায় শুয়ে পুত্রবধূ তিশাকে ডেকে বলেন "মাইয়া মানুষের নাম হারাইয়া যায়। বিয়ের পর সে হয় বউ অথবা বউমা। কয়দিন পর হয় মা তারপর দাদী। আমারও একটা নাম আছে হাসু (তিশা) ,আমার নাম সুরুতবানু। খুব আকুতি নিয়ে তিনি তার পুত্রবধূকে বলেন 'আমাকে সুরুত কইয়া ডাক দেও হাসু।'' কি নির্মম সে দৃশ্য।
সিনামাতে সবার অভিনয়, কস্টিউম, লোকেশন, ভাষা নির্বাচন ও দৃশ্য ধারণ আসাধারন হয়েছে। বৃষ্টি, বিদ্যুৎ চমকানোর আলোছায়া ও গুলিয়াখালি সমুদ্রসৈকত এর দৃশ্য মুগ্ধ করেছে। মাঝে মাঝে ভাষা বুঝতে একটু সমস্যা হয়েছে, জাহিদ হাসানের কথায় চাটগাঁইয়া ভাষার প্রভাব কম ছিল বলে মনে হয়েছে। এমন চমৎকার একটা মুভি উপহার দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা তৌকির আহমেদ।
সবচেয়ে বড় কথা আমাদের চলচ্চিত্রের একটা নতুন ধারা তৈরি হচ্ছে। যেখানে অন্য দেশের বা অন্য ভাষার চলচ্চিত্রের কোন প্রভাব নেই।