somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গুড়পুকুরের মেলা

২৩ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মোগলাই পরোটার কথা এলে আমার শুধু গুড়পুকুরের বাজারের কথা মনে পড়ে। তখন আমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ি। আবছা মনে আছে সেইসব স্মৃতি। বছরে সম্ভবত বৈশাখ মাসে সাতক্ষীরা শহরে গুড় পুকুরের মেলা হতো। আমরা বলতাম গুলপুকুরের বাজার। সেখানে গেলে মোগলাই পরেটা খাওয়া যেত যার এক একটার দাম ৫ টাকা করে। ঐ মেলায় কাচের রকেট পাওয়া যেত, কাচের চোঙের ভেতর রঙিন জরির পানি আর একটি রকেট, কাত করলেই সাঁ করে উপরে উঠে যেত।

কাঠের একরকম ময়ুর বা মোরগের শব্দ করা খেলনা হতো, লাঠির মতো ধরে চালালেই ক্যাচ ক্যাচ করে শব্দ হতো। মাঠির সাদা গোফ দাড়ির ( এখন মনে হয় তা ছিল সান্টাক্রজ) পাওয়া যেত, তার মাথা ঝাকি দিলে ঘাড়ের স্প্রীং এ মাথা দোল খেত। আড় বাশি পাওয়া যেত, কত রকম সস্তার খেলনা সব…
কিন্তু আমার সেই শৈশবের স্বপ্নময় সময়গুলো যেন পুরোটা টিনের বাক্সের ভেতর এসব সাদামাটা খেলনা আর মোগলাই পরোটার সাথে নেপথালিনের ভাজে শীত পোহাচ্ছে!

তখন সাতক্ষীরায় আসার একমাত্র বাহন ছিল বড় বড় যশোরের বাস। ভাড়া আমার ভুল না হলে ৪ টাকা করে ছিল। বাসে সামনে লেখা থাকতো সাবধান হাওয়া ব্রেক। ঝাউডাংগা বাস স্ট্যান্ড আর চেক পোষ্টে বাস থামতো। কন্ট্রাকটারের গলায় ঝুলতো চামড়ার ছোট ব্যাগ, হাতের আঙুলের ফাকে টাকা কায়দা করে ভাজ করা, টিকিটের দারুন ব্যান্ডিলটির প্রতি আমার খুব লোভ হতো, যদি সবগুলো টিকিট আমি পেতাম!

সাতক্ষীরার গুড়পুকুরের মেলায় আমি ছোটবেলায় কয়েকবার গিয়েছি, লাবনী সিনেমা হলের সামনের রাস্তার পাশের লাল নীল আলো আর মানুষের জমজমাট কোলাহলের ছবি শুধু মনে আছে। আর সব কালের ধুলোয় ঝাপসা হয়ে গিয়েছে।

তবে এর পাশাপাশি ঝাউডাংগার মন্দিরের পাশে যে মেলা বসতো তার কথা বেশ মনে আছে। পাপড় ভাজা, গরম গরম পেয়াজু আর আলুর চপ, মাটির হাড়িকুড়ি, পুতুল এসবের জন্য বিখ্যাত ছিল এই মেলাটি। আমরা কাঠের পুল পার হলেই ভাঙা মন্দির চত্বরে এই মেলা দেখতাম।

সময় বদলে গিয়েছে। জীবন যাপন এখন অন্যরকম। মানুষের রুচিবোধ সময়ের সাথে সাথে জীবনধারণের প্রয়োজনে পাল্টাচ্ছে। আর আমরা যত বয়স্ক হচ্ছি ততই তীব্র হচ্ছে আমার স্মৃতির ঝাঝালো নষ্টালজিক দহন। বারবার মন শৈশব কৈশোরে হাতড়ে খুজে ফিরছে ভাবনাহীন সেই মাটির গরুর গাড়ী, মোগলাই পরোটা কিংবা তল্লা বাঁশের আড়বাশী……

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৮
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×