somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রীক পুরানের উপাখ্যান- প্রথম থেকে ব্যবচ্ছেদ। (পর্ব-২)

০২ রা জুলাই, ২০১১ বিকাল ৫:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রথম পর্ব-গ্রীক পুরানের উপাখ্যান- প্রথম থেকে ব্যবচ্ছেদ। (পর্ব-১)

পৃথিবী যেভাবে সৃষ্টি হল

"আদিতে ছিলো বিশৃঙ্খলা(chaos),বিশাল অপরিমেয় খাদ,সমুদ্রের মত নিষ্ঠুর,অন্ধকার অপচয়ী বন্যা।"-মিল্টন।

কথাগুলো মিল্টনের হলেও গ্রীকরা সৃষ্টির আদিতম পর্ব সম্পর্কে কি ভাবত তার একটা যথাযথ প্রকাশ পাওয়া যাবে। দেবতারা আবির্ভুত হয়েছিল অগণিত কোটি বছর আগে, অতীতের আবছায়ার মধ্যে। কিন্ত তারো আগে ছিলো নিরাকার বিশৃঙ্খলা। অবশেষে কেউ জানেনা কিভাবে জন্ম হলো দুটি শিশুর। এক সন্তানের নাম রাত্রি,অপরজন হলো এরেবুস বা গভিরতা। সমস্ত বিশ্বে তখন আর কিছু ছিলনা; সব কিছু ছিলো ঘোরকালো, শূন্য, নিশব্দ এবং অন্তহীন।

তারপর অন্ধকার মৃত্যু থেকে জন্ম হলো প্রেমের,এবং তার জন্মের সাথে সাথে বিশৃঙ্খলা কেটে গিয়ে উদ্ভাসিত হতে থাকে সৌন্দর্য। প্রেম এরপর সৃজন করলো আলো,রৌদ্রময় দিন।

এ কাহিনীগুলো যারা বানাতো তারা ছিলেন ব্যক্তি-মানুষ, সুতরাং তাদের চারপাশে যার মধ্যে কিছুটা প্রানশক্তি দেখেছে সেটাতেই ব্যক্তিত্বারোপ ( personification)করেছে। যা কিছু পরিবর্তনশীল ও সঞ্চারনশীল তাই তাদের কাছে ব্যক্তিস্বরুপ। শীত গ্রীষ্মের পৃথিবী,পরিবর্তনশীল নক্ষত্র ইত্যাদি। কিন্ত সৃষ্টিকাহিনীতে যখন প্রেম আর আলোর আগমন ঘটলো তখন বস্তত মানুষের আগমনের জন্য মঞ্চ প্রস্তত। কাহিনীকারেরা ব্যক্তিত্বারোপের উপর তখন আরো সুক্ষতার পরিচয় দিলো। প্রাকৃতিক শক্তিগুলোকে দেয়া হল আরো স্পষ্টতর চেহারা। তারা ভাবলো এই শক্তিগুলোই মানুষের পুর্বসুরি।

প্রথম সৃষ্টি

যাদের মাঝে প্রথম প্রানের প্রকাশ ঘটেছিল তারা হলো-মাতা ধরিত্রী(gaea) ও পিতা স্বর্গ(ouranos) এর সন্তান। এরা ছিলো দৈত্য। পাঠকগণ সাইক্লপ্স(cyclops) নামটা নিশ্চই শুনেছেন। এদের ছিলো ৫০টি মাথা আর ১০০ হাত। কপালের মধ্যস্থলে ছিলো বিশাল চোখ। তাদের ধংস খমতাও ছিলো অনেক।

ছুবি-সাইক্লপস।
তার পর এলো টাইটানরা (আগের পর্বে কিছুটা বলেছি এদের কথা)। শক্তির দিক থেকে তারাও কারো চেয়ে কম ছিলনা। তবে তারা সাইক্লপসদের মত অতটা ধংসাত্মক ছিলোনা। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিলো উপকারী। বস্তত,তাদের একজন মানুষ সৃষ্টির পর তাদের ধংসের হাত থেকেও বাচিয়েছে। সে গল্প যথাসময়ে করা হবে।

যুদ্ধ আর যুদ্ধ



ইতিমধ্যে মাতা পৃথিবীর সাথে পিতা স্বর্গের মন মালিন্য হয়ায় এবং স্বর্গের খারাপ ব্যবহারের প্রতিবাদে মাতা পৃথিবী সাহায্য চাইলো তার সন্তান সাইক্লপ্স ও টাইটানদের কাছে। কেবল মাত্র একজন টাইটান সাহস করে এগিয়ে এলেন।তার নাম ক্রোনাস(cronus)। ক্রোনাস পিতা স্বর্গের পথে ওত পেতে থাকেন এবং তাকে আঘাত করলেন। তার রক্ত থেকে সৃষ্টি হলো আরেকটি জাতি। যার নাম এরিনাই(erinyes)। এদের কাজ হলো পাপীদের শাস্তি দেয়া। অন্যদিকে এই ঘটনার পর ক্রোনাস পৃথিবী রাজত্ব করেন দীর্ঘ সময়ের জন্য। এই ক্রোনাস কেই রোমানরা বলে সাট্যার্ন।সাথে তার রানী এবং ভগ্নী রীয়া(rhea)। লাতিন ভাষায় যার নাম অপস(ops)। অবশেষে তাদের উতখাত করে স্বর্গ-মর্তের অধিশ্বর হন দেবরাজ জিউস।

ছবি-ক্রোনাস ও রীয়া।

এরপরি স্বর্গে ঘটলো এক ভয়াবহ যুদ্ধ। একদিকে ক্রোনাস এবং তার টাইটান ভাত্ত্রিবৃন্দ, আরেকদিকে জিউস ও তার পাচ ভাইবোন। যুদ্ধে যদিও টাইটানদের পরাজয় ঘটে, তবে পৃথিবীর অবস্থা হয়ে যায় প্রায় ধংসপ্রাপ্ত। পরে আস্তে আস্তে দেবতাদের সাহায্যে পৃথিবী আবার সুন্দর রুপ ফিরে পায়।

এখন পর্যন্ত আমরা মানুষের আবির্ভাব দেখলাম না। আসলে মানুষের জন্য পৃথিবী মঞ্চ তৈরি করা একটু কষ্টসাধ্য বৈকি। সব গল্প একদিনে শেষ করে ফেললে হবে ? বাকিটুকু নাহয় পরের পর্বের জন্য থাক।

সবাই ভালো থাকবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:২৪
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×