somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গঃ মেরিনারদের চাকরির বাজারের বর্তমান দুরাবস্থা ও প্রাইভেট একডেমী ।।

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই বলে রাখছি, কোন বিভেদ অথবা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা এই পোস্টের উদ্দেশ্য নয়। সরকারি মেরিন একাডেমীর একজন ক্যাডেট তার দুঃখ প্রকাশ করতে গিয়ে কিছু কথা বলেছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কথা বলা দরকার মনে হলো। তার অনূভুতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাকে আর তার সমমনা অন্যদের প্রতি এই লেখা। আর যেকোন প্রকার আক্রমণাত্মক কমেন্ট ব্যান করার জন্যে এডমিন প্যানেলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

বেশ কিছুদিন থেকেই বিভিন্ন ব্লগ আর ফেসবুকের বিভিন্ন পেজে মেরিনারদের চাকরির বাজারের বর্তমান অবস্থা নিয়ে নানা পোস্ট দেখছি। যেখানে আলোচনায় উঠে এসেছে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা প্রাইভেট মেরিন একাডেমী, তাদের রংচটা বিজ্ঞাপন ও নানা প্রলোভন, এজেন্টদের মিথ্যাচার, শিপিং অফিসের দূর্নীতি, নৌবাহিনীতে ঢালাওভাবে সিডিসি প্রদান, অর্থ বানিজ্য, ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা, দেশী কোম্পানীগুলোর অতিমুনাফার লোভ ইত্যাদি। বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি মেরিন একাডেমী থেকে বের হওয়া ক্যাডেটদের অনেকাংশ মনে করেন তাদের চাকরির বাজার ধ্বংসের পেছনে রয়েছে প্রাইভেট মেরিন একাডেমী। আপনারা মেধায় আমাদের পেছনে ফেলে একাডেমীর দুই বছরের কষ্টের সময় পার করে তারপর যখন চাকরি খুজতে হয় হন্যে হয়ে তখন খারাপ লাগাটা স্বাভাবিক। আর যখন দেখতে পান টাকা দিয়ে প্রাইভেট একাডেমীর ক্যাডেট জাহাজে জয়েন করছে তখন খারাপ লাগার সাথেও জন্ম নেয় ক্ষোভ। আর জাহাজে যাওয়ার পরে সেই ক্ষোভ অনায়াসে ঝেড়ে ফেলেন। অনেকের এ ব্যাপারে অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে (যদিও সবাই এক নন)। আর একজন ধনী বাবার আদরের দুলাল কি করেন? সেটা সহ্য করতে না পেরে কি করেন? চাকুরী ছেড়ে দিয়ে চলে আসেন? গল্পটি এরকম নয়। খুব কম ধনীর দুলাল আছেন যারা আয়েশী লাইফ ছেড়ে শিপিং সেক্টরে আসেন। বেশিরভাগই মেরিন একাডেমীতে চান্স না পেয়ে অথবা একাডেমীর ragging নামক ট্রেডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে না পেরে অথবা সর্বস্ব হাতের মুঠোয় নিয়ে ভর্তি হয় প্রাইভেট একাডেমীতে। এমনও অনেকে আছেন যারা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হন। তাদের সম্বল বলতে বাবার জমি অথবা লোন করা টাকা, নাহয় মায়ের গয়না। তার মানে এই নয় তারা গোঁয়ার মূর্খ। এক সময় ছিল, যখন কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কোন একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড ছাড়াই নিয়োগ দেয়া হতো। এখন সেরকম চিন্তা করার কোন অবকাশ নেই। একটু ভালো করে খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন একজন প্রাইভেট একাডেমীর ক্যাডেট কত প্রকার হয়রানির শিকার হয়ে সিডিসি পান। আরো জেনে নিবেন পূর্বনির্ধারিত টাকার সাথে আরো কত টাকা যোগ করতে হয়, কেন করতে হয় আর আর সেটি ম্যানেজ করতে মধ্যবিত্ত বাবার কতখানি কষ্ট করতে হয়। আরো জেনে নিবেন যখন বাংলাদেশী পতাকাবাহী জাহাজে আপনাদের নীতিনির্ধারকদের দেয়া অনুপাত বৈষম্যের ক্ষমতায় প্রাইভেট একাডেমীর ম্যানেজমেন্টের জাহাজে তাদের টপকে জাহাজে যোগ দিয়ে তাদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন তখন তাদের কেমন লাগে। কেন ভাই আপনি সরকারি জাহাজে যোগ দিচ্ছেন না? কেন সরকার আপনাদের চাকুরী সুনিশ্চিত না করে নতুন করে ভর্তি করছে? কেন নতুন নতুন একাডেমি খোলা হচ্ছে? কারা করছেন এসব? প্রাইভেট একাডেমীর কাওকে তো সরকারি নীতিনির্ধারক পর্যায়ে যেতে দেয়া হয়না।

ঘুরেফিরে একটি কথা বারবার উঠে আসছে। সেটি হল প্রাইভেট আর সরকারি। তর্ক করে এটা কখনোই শেষ করা যাবেনা। বর্তমানে চাকরির বাজারের এই দুরাবস্থায় তর্ক চলে না। টাকার লোভে প্রাইভেট একাডেমী নিয়মিত ভর্তি চালিয়ে যাচ্ছে, সেই সাথে মেরিন একাডমীতেও ভর্তি চালু রয়েছে এবং সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আমাদের এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার একটাই রাস্তা। সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সরকারি নীতিনির্ধারক অথবা রক্তচোষা একাডেমীর কারো বিরুদ্ধে আমাদের করার কিছুই নেই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট সবারই জানা আছে। অনেক কষ্টের চাকরিটা আজীবনের জন্যে হারানোর ইচ্ছে কারো নেই। আসুন, পরবর্তীতে যারা এই পেশায় আসতে আগ্রহী, তাদের মাঝে এই মেসেজ পৌঁছে দেই। সচেতনতা গড়ে তুলি।

পুনশ্চঃ যারা এখনো চাকরি পাননি অথবা অনেকদিন থেকে বসে আছেন, তাদের জন্যে দোয়া আর শুভ কামনা রইল।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:২৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×