ঢাকার পত্তন
শহর হিসেবে ঢাকার বয়স ৪০০ হলেও সেই ৭ম শতাব্দি মানে প্রায় ১৩০০ বছর আগেও কিন্তু এই বর্ধিঞ্চু জনপদটির অস্তিত্ব ছিল। সেই সময় এটি ছিল কামরূপ নামের বৌদ্ধ রাজ্যের অধীন। এই রাজ্যটি সেই সময় বিস্তৃত ছিল আসাম, উত্তরবঙ্গ, ঢাকা ও ময়মনসিংহ নিয়ে। রাজ্যটি পরিচালিত হতো আসামের গৌহাটি এবং তেজপূর থেকে। এরপর আসে পাল রাজবংশ। বৌদ্ধ এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গোপাল, যিনি একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে গৌর এর ক্ষমতায় এসেছিলেন। সেই সময় এটি ছিল এক অভূতপূর্ব ঘটনা। পূর্ববর্তী শাসক কোন উত্তরাধিকারী রেখে না যাওয়ায় এমনটি হয়েছিল বলে জানা যায়। পাল রাজবংশের সময় পূরো বাংলাই চলে আসে এদের নিয়ন্ত্রণে।
৯ম শতাব্দিতে ঢাকা চলে যায় হিন্দু সেন রাজবংশের অধীনে। এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা হেমন্ত সেন পাল রাজবংশেরই অংশ ছিলেন। পাল রাজাদের দূর্বলতার সূযোগে তিনি ধীরে ধীরে ক্ষমতা দখল করেন। রাজা বল্লাল সেন ঢাকায় ১২০০ শতাব্দিতে প্রতিষ্ঠা করেন ঐতিহাসিক ঢাকেশ্বরী মন্দির, যা বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় মন্দির হিসেবে সুপরিচিত। কথিত আছে যে রাজা লক্ষণ সেনের সময়ই হিন্দুদের বর্ণ প্রথা চালু করা হয়।
সেন রাজবংশের সময় ঢাকা এবং সন্নিহিত অঞ্চল বাঙালা নামে পরিচিত ছিল। এই সময়কালেই ঢাকায় হিন্দুদের বর্ণ প্রথা ভিত্তিক বেশ কিছু বাজার / অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হয়। যেমন লক্ষীবাজার, শাখারী বাজার, তাতী বাজার, পাটুয়াটুলি, কুমারটুলি, বানিয়ানগর এবং গোয়ালনগর।
সেন রাজবংশের পর ঢাকা চলে যায় মুসলমান শাসকদের হাতে। মূঘল রাজবংশ ঢাকা করায়ত্ব করার আগে পর্যন্ত দিল্লির সুলতানরা ঢাকাকে শাসন করেন বিভিন্ন তুর্কি আর আফগান প্রশাসক দিয়ে।
১৬০৮ সালে মূঘল রাজবংশ সুবা বাংলার রাজধাণী হিসেবে ঢাকাকে ঘোষনা করে। শুরু হয় ঢাকা শহরের ৪০০ বছরের নতুন ইতিহাস।
(ক্রমশ....)
ছবি : ঢাকেশ্বরী মন্দির কমপ্লেক্সের মধ্যে অবস্থিত ৪টি শিব মন্দির। ১৮৯০ সালে তোলা। উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


