somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিমানবন্দরে বিচিত্র অভিজ্ঞতা- ২ (সুওর্নাপুম/ব্যাংকক এয়ারপোর্ট)

০২ রা মে, ২০২০ রাত ১২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিমানবন্দর আমার প্রিয় জায়গা, তা সেইটা যেই বিমানবন্দরই হোক না কেন! শত শত মানুষ, শত শত কাহিনি। যে দিকেই তাকাই মনে হয় প্রত্যেকটা মানুষ একটা গল্প নিয়ে হাঁটতেছে; ভালোবাসার গল্প, উত্তেজনার গল্প, বেদনার গল্প, মিলনের গল্প বা আলাদা হয়ে যাওয়ার গল্প। তবে কেন জানি প্রত্যেকবার আমি বিমানবন্দরে বিশেষ করে ইমিগ্রেশনে গেলেই তাদেরকে আমার কোন না কোন একটা গল্প বলাই লাগে। এই বিচিত্র অভিজ্ঞতাগুলো জন্যই এই সিরিজ। তবে ব্যাংককে আমাকে কোন গল্প বলা লাগে নাই, শুধু দেখতে দেখতে ইমিগ্রেশন পার হয়ে গেছি

সুওর্নাপুম এয়ারপোর্ট

এয়ারবাস এ৩৮০-৮০০ এর গলায় পা দিয়ে সুওর্নাপুম এয়ারপোর্টে কিছুক্ষণ হাঁটার পর বুঝলাম, ঠিক দেশেই এসেছি। সিউল থেকে প্লেনে উঠার সময় বোর্ডিং এরিয়াতে কুটি কুটি চাইনিজ/কোরিয়ান দেখার পরে সিউর ছিলাম না এই প্লেন আসলে ব্যাংকক যাবে নাকি বেইজিং যাবে। বেইজিং যাবার আমার নূন্যতম ইচ্ছা নাই তবে অনেকের লাল বই দেখে বুঝলাম এরা চাইনিজ; আমি সিউর চাইনিজদের প্রিয় রং হল লাল আর প্রিয় সবজি হল রেড স্পিনাচ ওরফে আমাগো লাল শাক। আমার সমস্যা হল চাইনিজ/কোরিয়ান/জাপানিজদের ভাষা না শুনলে আমি এখনও তাদেরকে ডিফারেন্সিয়েইট করতে পারি না। কোরিয়ানদের মনে করি চাইনিজ এন্ড ভাইস-ভার্সা; অনেকটা আমাকে দেখলে যেমন অনেকে ইন্ডিয়ান বা মেক্সিকান মনে করে। তবে কেউ যে আমাকে এলিয়েন ভাবে না, সেইটা ভেবে মনে শান্তি লাগে।



কিছুক্ষণ হাটার পরে মনের শান্তি চোখে চলে গেছে। এত সৌন্দর্য! আহ! এক এয়ারপোর্টে এত বিদেশি!!! ঢাকা এয়ারপোর্টে নামলে বিদেশীর চেয়ে মশা বেশি দেখি, মশাদের দেখতে না চাইলেও গাঁয়ে হুল ফুটিয়ে মশারা জানিয়ে দেয় - তারা এয়ারপোর্টে সংখাগরিষ্ট। এইজন্য মশাদের সাথে ঠিক মত পুরোপুরি শরীর ঢাকা পোশাক পড়ে ব্যাবহার করতে হয়। সুওর্নাপুম এর কনকোর্স ই থেকে মেইন টার্মিনালে যাওয়ার সময় সৌন্দর্য দেখতে দেখতে এত শান্তি পেয়েছি যে চোখে ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে। ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়ানোর কয়েকমিনিট পরেই বুঝলাম - ওমা কাগু, আমিতো ভুল লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এই লাইনতো অন-এরাইভ্যাল ভিসার জন্য। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ঠিক লাইনে দাঁড়িয়ে বুঝলাম কেন কুবি ঠাকুর বলছেন - আমার এই ইমিগ্রেশন লাইনে দাঁড়ানোতেই আনন্দ। কারণ এই লাইন কোনদিন শেষ হবে না। মরার উপর চাইনিজদের ঘাঁ হল - এদের অধিকাংশই পারসোন্যাল স্পেইস বলে যে একটা ব্যাপার আছে, সেটা তারা জানে না বা জানলেও মানতে রাজি না। এরা মনে হয়ে গ্রামীণ ফোনের বিজ্ঞাপন দেখে নিজের দেশ থেকে প্রতিজ্ঞা করে এসেছে - "দূরে গেলেও আমরা কাছে থাকব"। লাইনে সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে ছিলাম কখন না আবার আমার পিছনের জন গায়ের উপর এসে আমার গলাটাই টিপে দেয়!!

সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়লাম যখন ইমিগ্রেশন অফিসারের সামনে গেলাম। পাসপোর্ট দেওয়ার পরে মহিলা হাই-হ্যালো কিছু না বলে হাতের ইশারায় কি যেন দেখায়। আমি ডরে ডরে চিন্তা করলাম যে অফিসার আবার নাস্তা-পানির জন্য কিছু চাচ্ছে নাকি? আমি সাধারণত ক্যাশ টাকা ক্যারি করি না তবে ইমিগ্রেশন অফিসার বলে কথা! এয়ারপোর্টের চিপায় নিয়ে গিয়ে দুই-চার ধাক্কা দিলে আমার প্যান্টের চিপা-টিপা থেকে সিউর ১০/২০ ডলার বের হইলেও বের হতে পারে! আমার ভোতা মাথা অবশ্য কিছুক্ষণ পরেই বুঝল যে - অফিসার আমাকে ইশারায় আঙ্গুলের ছাপের মেশিন দেখাইতেছে। আঙ্গুলের ছাপ নেয়ার পরে কী-বোর্ডে খুট-খুট করে কি জানি টাইপ করার পরক্ষনেই খাঠাশ করে পাসপোর্টের উপড়ে সিল দিয়ে আমকে বিকাট এক চোখ-রাঙ্গানি দিল যার কাছাকাছি বাংলা হবে মনে হয় - তুই দূর হ, খবিশ!

দুনিয়ার কোন দেশের ইমিগ্রেশন একটা শব্দও ব্যাবহার না করে গীবনে পার হয়েছি বলে মনে পড়ে না কিন্তু এই অফিসার কোন কথা না বলে আমাকে এইভাবে চলে যেতে দিল!!! কেনু? কেনু? আমি এলিয়েন না হলেও মানুষতো! :(

ছবিঃ ,

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০২০ রাত ৩:৪৯
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×