অতঃপর লেখালেখি,
হে কলম, কি জিনিস তুমি বলতো /!/
রূপকথার কোন মায়াপূরীর রূপোর কাঠিতে গড়া,
কি এক বিরল ধাতুতে গড়া;
যেন এক অনুন্মোচনীয় রহস্যের আবর্তে তুমি ঘেরা
সৃষ্টি বিধাতার; সৃষ্টি হয়ে এসেছ মূর্খ-পাপী এই নশ্বর ধারার পরে /
ধরেছ বক্ষে জ্ঞান তাপসের ঝান্ডা, নিরীখের দোলাচলে
যেন জ্ঞান অলিন্দের দুয়ার খুলে
প্রস্ফুটিত কমল ন্যায় এনে তুমি মেলে ধর মহিমায়-
জ্ঞান পিপাসু নবিশের অধরযুগলে ;
ইলম সায়রের সফেন উর্মীমালার চূড়ো ধরে-
রাঙিয়ে আকাশ জ্ঞান সায়রে আপন মন-মাধুরীতে; রং তুলির আঁচড়ে /
পিপাসা মেটাও জ্ঞান পিপাসুর, প্রেমিকারে দাও গোলাপ
কি অসীম ঐশ্বর্য তোমার, পলকে ভাঙ দোর্দন্ডের প্রতাপ /
কি অপার শৈল্পিক মহিমা-সবই যে ধাতার দেয়া,
মাঝি হয়ে তুমি বৈঠা চালাও, পাষান হয়ে তরবারী
পার কর উত্তাল-বিদ্যা সাগর ; যেন অথৈ জ্ঞান-সাগরের খেয়া /
লিখে যাও অনর্গল নিবিষ্টমনে ,
স্বপনে-জাগরণে কিংবা অবচেতন মনে-শুধুই -মনিবের শানে
চেয়ে থাক আড়ে আড়ে জিজ্ঞাসু ওই মুখপানে-
যেন নিবিড় নিরীক্ষনে, কিংবা আপনমনে
সময়ে অসময়ে কিংবা মাহেন্দ্র কোন ক্ষনে
শুধুই মনিবের মনোরঞ্জনে /
কি চমক, কি পুলক; কি অবাক করা সুধা দিয়াছেন ধাতা তোমায়
যাহার বিরুদ্ধে দাঁড়াও একবার, পলকে সে দিশা হারায়,
প্রতাপশালী জালিম শাসকের জুলুম নিপীড়ন-
স্বেচ্ছাচারীর স্বেচ্ছাচার আর নীতির সংবরন
অনিয়মের হলুদ পতাকা কিংবা কামনার কাল হাত,
রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ার আর দালাল হস্তি বাহিনীর হম্বি-তম্বি, তর্জন-গর্জন ;
একবার খালি মুখ খুলিলে তুমি হয় সব ভূলুন্ঠন
ধুলায় লুটায় দাম্ভিকেরা যদি দাওগো প্রজ্ঞালন-
সাধে বলিয়াছেন দার্শনিক, "অসি হতে মসি বড় দেখে নিও বাপধন"
দূরকে করেছ প্রাণের সুহৃদ, পরকে করেছ ভাই,
প্রানে প্রানে প্রেমডোরে বাঁধিতে তোমার জুড়ি নাই /
ওই সমীকরনের উভয় পার্শ করতে সমান,
সেখানেও দেখি যেন তুমি রাখ সুবিষেশ অবদান
কষ্ট হয় করতে স্বীকার তবু বলি তোমার ছলনারই দান;
কত আপন কাছের মানুষ, প্রিয় প্রিয় কতক মুখ
চাতক পাখির মত করত যে ভিড় দিতনা হতে স্থির, কিংবা দুদন্ড পানসুখ
তুমি এসে দিলে তাড়িয়ে তাদের, হারালাম চেনা মুখ
কেউ হয়ে গেল ইর্ষাকাতর, কেউবা নিন্দুক /
কিবা এসে যায় বল/?/ যে যাবার সেতো যাবেই -এ আর কিবা এমন ক্ষত,
তারে নিয়ে আছে কি সময় ভাবার উথাল পাথাল কিংবা থেকে কালবিলম্বে রত /?/
যেমনি গেছে তেমনি জুটবে, দুধের মাছিরা শত
যাবেনা শুধু প্রাণ সারথিরা মোর আসুক সে আঁধার যত;
জনম মোহনার কষ্টি পাথরে ঘষে নিয়েছি তাদের কত /
আর রইবে তুমি যে মোর জনম-আজনম ছায়ার মত,
নয়কো হয়ে কভু তপস্যার ব্রত /
ভালবাসি তোরে, শত ভালবাসি হে মোর জনম সাথি
মোর জনমের উপমা যে তুই, ডান হাতে বাঁধা "রাখি";
যবে এসেছিনু নিঠুর এ ভবেতে একাকিনী অসহায়-
সেদিন যে তুই নিয়েছিলি চিনে আপন করুনায়
আঁধার ভুবন আলো করে এলি মোর হস্তের কড়ে,
ওইদিন হতে মূর্খ-একাকী এ আমি, আর একাকী ছিলাম নারে;
এঁকে দেয়া মধু চুম্বন তরে ভুলিনিকো প্রিয়া তোরে-
শত বেদনা, ছলনা আর জুলুমের আঁচড়ে
রয়েছিস তুই, থাকবি যে তুই হয়ে মোর বিষন্নতার দায়
রইবে ছবি তোর মোর মন অলিন্দের রুপালী জানালায় /
কে বুঝিবে হায় , কিভাবে কেটে যায়
কত রাত, কত শত রাত জাগা ক্লান্তিমাখা ভোর
তোর সঙ্গপানে, ওরে শুধুই যে তোর প্রেমরস পানে
ক্ষয়ে ক্ষয়ে কাটে কত অমিয় তৃপ্তি আর একাকী ভালোলাগার প্রহর
কেবা দেবে দাম, না জানি পরিণাম;
শুধু জানি তোর সুনীল প্রেম নদের সীমা
তোর প্রেম সায়রের ওই উষ্ণ স্রোতে ভেসে ভেসে মোর মধু-চন্দ্রিমা /
না জানি কতকাল কত মহাকাল গুনিব অপেক্ষার প্রহর
আরো কত রাত কাটবে নির্ঘুম, দেখব কত নয়া ভোর ;
ভয় করি না, কেউ না থাকুক তুইতো আছিস সাথে
প্রেরণা দিবি, আদর বুলাবি-
জ্বলবি নিশাচর প্রদীপ সম নির্জলা আঁধার রাতে... /
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৩২