somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর সমস্ত আর্য শ্লোকের থেকেও অজর ও পবিত্র বাঙলা বর্ণমালার অ আ চিৎকার ।

১১ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৪:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাঙলা আমার মাতৃভাষা; আমাদের মাতৃভাষা। হুমায়ুন আজাদ, শহীদুল্লাহ, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, আহমদ শরীফ পৃথিবীর অসংখ্য ভাষার কোন কোনটির সৌন্দর্যে অন্ধ হয়ে যান, আবার কোনটির ঐশ্বর্য্যের কাছে তাঁদের মাথা নুয়ে আসে। তারপরও উঁনাদের কাছে বাঙলার মতো আর কোন ভাষা নেই। উঁনাদের আনন্দ বাঙলা ভাষায় নেচে ওঠে ময়ূরের মতো। আর আমি একরকমের অন্ধ ও বধির তাই অন্যকোনো ভাষার সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ বা পাগল করে না। বাঙলা আমার কাছে আমার মায়ের মুখের মতোই কোমল এবং শান্ত, যা-আমার অন্তরে একরকমের শীতল ঝরণাধারা বইয়ে দেয়। বাঙলা আমার হৃদয়েরও গভীরে হৃদপিন্ডের মতো হৃদস্পন্দন দিয়ে আমার বেঁচে থাকাকে অর্থপূর্ণ করে তোলে।

হাজার বছর আগে প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা মানুষের মুখে মুখে রূপান্তরিত হয়ে বঙ্গীয় অঞ্চলে জন্ম নিয়েছিল এক মধুর কোমল বিদ্রোহী প্রাকৃত যার নাম বাঙলা। কখনো 'প্রাকৃত', কখনো 'গোড়ীয় ভাষা', কখনো 'বাঙ্গালা', কখনো 'বাঙ্গলা', আর এখন আমরা বলি 'বাঙলা' / 'বাংলা'।

জন্মউত্তর সময়ে এটি সমাজ প্রভুদের স্নেহ পায়নি কিংবা কোন পয়গম্বর বা আর্য ঋষিদের মাধ্যমে লেখা হয়নি নির্বোধদের ঐশ্বরিক বাণী। তারপর শতাব্দীর পর শতাব্দী কাটে শেকলে বাঁধা পড়ে এবং শাঁইশাঁই চাবুকের আঘাতে আঘাতে। হঠাৎ স্বপ্নজয়ী কিছু মানুষ নিজেদেরকে ইতিহাস করে অমর করে রেখে গেছেন বাঙলা ভাষাকে। তাঁরা যখন শাঁইশাঁই চাবুকের শব্দকে সঙ্গীতে এবং শেকলকে উর্ধ্বমুখী হাতে শিল্পে পরিণত করে তখন সভ্যতার সমস্ত শিল্পকলার থেকে সুন্দর ও অজর মনে হয় বাঙলাকে। শেকলের পর শেকল চুরমার করে শৃঙ্খলহীন (?) আজকের বাঙলা। আজকের শৃঙ্খলহীন (?) ও সবচেয়ে বেশি অবহেলিত বাঙলার কয়েকটি রূপ দেখা যাক।

এখন সাধারণত কেউই সঠিক বাঙলা বলতে পারে না। সবাই এখন ইচ্ছা ও অনিইচ্ছাকৃত (?) ভাবে বাঙলার সাথে ইংরেজির মিশ্রিত রূপে কথা বলে। এখন বাঙলা হয়ে উঠছে চাষাভূষাদের ভাষা। কৃষক দিনমজুর ছাড়া এখন কারো কাছ থেকে বাঙলার কথ্য শুদ্ধরূপ আশা করা নিতান্তই বোকামি। কথা বলার সময় প্রায় প্রতিটি বাক্যের মধ্যে দু-একটি ইংরেজি শব্দ গুজে না দিলে নিজেকে বুদ্ধিমান, জ্ঞানী বা প্রতিভূ (স্মর্ট) বলে মনে হয়না।

যে ছেলে/মেয়েটি একবুক স্বপ্ন নিয়ে মহাবিদ্যালয় পার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এক পৃষ্ঠা পড়তে গিয়ে একশ' বার অভিধানের পাতা উল্টাতে উল্টাতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে তার বুকের বিদগ্ধ যন্ত্রণা আমাদের মূর্খ কপট রাষ্ট্রযন্ত্র কখনো বুঝবে না।

ভাষিক সাম্রাজ্য বাঙলাদেশে এতই প্রবল যে মা-বাবার মত কোমল মৌলিক শব্দ আম্মা-আব্বা বা মঅম-ডেড দ্বারা হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আরবি-ইংরেজি শেখানোর জন্য হুজুর-শিক্ষক রাখা হয় কিন্তু বাঙলা শেখানোর প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করা হয় না . . . . .

এই হচ্ছে অবহেলিত বাঙলার চরম রূপ। ইচ্ছা করলেই আরো অনেক উদাহরণ দিতে পারতাম , কিন্তু দিলাম না। অবহেলিত বাঙলাকে উদ্ধারের জন্য আরো একটা বায়ান্ন দরকার। দরকার আরো একটি বিশুদ্ধ চেতনার। আমি সেই বিপ্লবী বায়ান্নর প্রত্যাশী। আমি সেই অজর চেতনার প্রত্যাশী। জানি না কখনো দেখা পাবো কিনা সেই চেতনার, সেই বিপ্লবের !




বাঙলা ভাষার জীবনি/ কতো নদী সরোবর : হুমায়ুন আজাদ
বাঙলা ভাষা(কবিতা) : হুমায়ুন আজাদ







সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:১৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×