somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইউনূসের দারিদ্র্য বানিজ্য

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গরীবদের ধর্ষণ করার জন্য যুগে যুগে শাসকশ্রেণী কণ্টকযুক্ত শিশ্ন আবিষ্কারের অশ্লীল সৃষ্টিশীলয়তায় মত্ত থেকেছে । তাঁরা তাঁদের আবিষ্কৃত শিশ্ন দিয়ে ধর্ষিতাকে ক্ষত বিক্ষত করেই তৃপ্ত হয়নি, ধর্ষিতার শেষ রক্তবিন্দু শুষে নেওয়ার জন্য জোঁকের মত লেগে থেকেছে । যখনই ধর্ষিতার আর্তচিৎকার বিপ্লবে পরিণত হয়ে তছনছ করে দিয়েছে ধর্ষকের কণ্টকযুক্ত শিশ্নকে তখনই ধর্ষক নবনির্মিত শিশ্ন দিয়ে ধর্ষণ করার জন্য ও্যঁৎ পেতে থেকেছে । শোষকের দানবীয় উল্লাস আর শোষিতের করুণ আর্তনাদে ইতিহাস পরিপূর্ণ । কখনো শোষক সামন্তপ্রভু সেজে, ব্রাহ্মণ সেজে শূদ্যের ওপর অথবা দাসপ্রভু সেজে দাসের ওপর শোষণ করেছে । আগে শোষণ সহজেই চোখে পড়ত। বর্তমানে শোষণ এতই রঙিন হয়ে উঠেছে যে, তা আধুনিক সভ্যতা বলে মনে হয় ! শোষণের রঙিন রূপ দেয়ার জন্য শাসক সম্প্রদায় এর উপর বিভিন্ন পদক জুড়ে দেয় । এমনকি নোবেলের মত পদক জুড়ে দিতেও সামান্যতম লজ্জাবোধ করে না । আমাদের দেশে ড. ইউনূসের নোবল প্রাপ্তি এর উৎকৃষ্টতম উদাহরণ । ইউনূসকে চোর, কর ফাঁকিবাজ, মিথ্যাবাদী, চাটুকার, দালাল, অমানবিক ইত্যাদি বিশষণে ভূষিত করলে সামান্যতমও ভুল হবে না ।

গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৩ সালে । ১৯৮৩ সালের সেপ্টম্বরের অধ্যাদেশে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের ৬০ ভাগ মালিক সরকার এবং বাকি ৪০ ভাগের মালিক ভূমিহীন গরীবরা(!) । পরবর্তী অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকারের শেয়ার কমিয়ে ৪৯% করা হয়েছিল । বর্তমানে সরকারের শেয়ার আরো কমিয়ে ২৫% করা হয়। আপাতদৃষ্টিতে এটিকে ভালো মনে হলেও, এটি আসলে করা হয়েছে লভ্যাংশ থেকে সরকারকে বঞ্চিত করার জন্য ।

১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কুয়ালামপুরের একটি সভায় বলা হয়েছিল গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার ১৬% । কিন্তু উক্ত বছর বাঙলাদেশি একটি পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাতকারে ইউনূস বলেছিলেন, " নিশ্চয়ই আমরা ২০ ভাগ সুদ নেই । যদি কেউ এটাকে বেশি বলে ভাবে, তাহলে বেশি। তবে আমি বেশি বিব্রতবোধ করি না । আমরা তো জোর করে ঋণ দেই না । " বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংক ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ সুদ নিয়ে থাকে । যেখানে বানিজ্যিক ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের ঋণ দিয়ে সর্বোচ্চ ১৮% (বর্তমানে সম্ভবত ১৫%) সুদের বেশি নেয় না, সেখানে ইউনূস গরীবদের ঋণ দিয়ে ২৫% থেকে ৩০% পর্যন্ত সুদ নিচ্ছেন ! এটা নিঃসন্দেহে শোষণ, অমানবিক এবং ভাঁওতাবাজি ।


গ্রামীণ ব্যাংকের প্রথমদিকে স্লোগান ছিল, " ঋণ মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার "। উপরোক্ত স্লোগানে মৌলিক এবং মানবিক শব্দ দু'টি হাস্যকর । ঋণ কখনই মানুষের মৌলিক অধিকার হতে পারে না। আর অমানবিক শব্দটি থেকে অ উপসর্গটি খসিয়ে মানবিক করা হয়েছে । এটি আসলে অমানবিক ।


১৯৯১ সাল থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রত্যেক সদস্য সপ্তাহে বাধ্যতামূলকভাবে তাদের গ্রুপ ফান্ডে ১ টাকা করে জমা দেন । অর্থাৎ প্রত্যেক সদস্য বছরে ৫২ টাকা জমা দেন । ইউনূসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১৯৯১ এর দিকে গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য ছিল প্রায় ১৬ লক্ষ । ফলে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় কয়েক শ' কোটি টাকা ফান্ডে জমা হয় । এছাড়াও ইউনূস বাঙলাদেশে গ্রামীণফোন মোবাইল কোম্পানি চালু করেন । গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক সর্বাধিক বিস্তৃত এবং সর্বাধিক গ্রাহক হলেও, গ্রামীণফোনের কলচার্জই সব থেকে বেশি । এভাবে গরিবের টাকা মেরে এবং দেশের মানুষদের শোষণের মাধ্যমেই তিনি মিরপুরে নির্মাণ করেছেন গ্রামীণ ব্যাংকের বিশাল বহুতল বিশিষ্ট ভবন । এই লাভের টাকাতেই তিনি বছরে অন্তত দশ-পনেরো বার বিদেশ ভ্রমন করেন । এছাড়াও তিনি আমেরিকায় প্রতিষ্ঠা করেছেন গ্রামীণ ফাউন্ডেশন ইউএসএ । ইউনূস যার প্রতিষ্টাতা এবং বোর্ড মেম্বর ।


সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর দালালি করে এবং গরিবের রক্ত চোষে ২০০৬ সালে তিনি আমাদের জন্য নোবেল পুরস্কার নিয়ে আসেন । কিন্তু গত বছরের পহেলা ডিসেম্বর নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করেছিল । এতে বলা হয়, প্রায় ৭০০ কোটি টাকা নিয়মবহির্ভূতভাবে ১৯৯৬ সালের শেষ দিকে ইউনূস "গ্রামীণ কল্যান" নামে নিজের প্রতিষ্ঠিত ও মালিকানাধীন অন্য একটি কোম্পানিতে স্থানান্তর করেন । তথ্যচিত্রটিতে আরো বলা হয় যে, বাঙলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংক গরীবদের দারিদ্র্য দূর করার পরিবর্তে তাঁদের দুর্দশাগ্রস্ত জীবনকে আরো বেশি দুর্দশায় নিক্ষেপ করে ।


টাকা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ইউনূস যুক্তি দেন যে, তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর করের বোঝা কমিয়ে আনার জন্য টাকা সরিয়েছেন । কিন্তু এই কর কাকে ফাঁকি দেওয়া হয়েছে ? এটি ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বাঙলাদেশ সরকারকে । সুতরাং বুঝতেই পারছেন, আমাদের গরিবের বন্ধু (!) এবং মানবতাবাদী (!) ইউনূস চোর এবং কর ফাঁকিবাজ ।


উক্ত তথ্যচিত্রটি প্রকাশের পর ৬ ডিসেম্বর আমেরিকার বিখ্যাত দ্যা ওয়াল স্ট্রিট্‌ জার্ণাল-জি " ক্ষুদ্র ঋণ : গ্রামীণের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ ইউনূস কি গরিবের রক্ত শোষণকারী ? " শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রচার করেছিল ।


আমারো একই প্রশ্ন, গ্রামীণের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ ইউনূস কি গরিবের রক্ত শোষণকারী ?





তথ্যসূত্র
ড. ইউনূসের দারিদ্র্য বানিজ্য : বদরউদ্দিন উমর
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০১১ দুপুর ২:৩৪
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×