আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পকে বাংগালীরা, ভারতীয়রা, পাকিস্তানীরা পছন্দ করে না; ট্রাম্প অকারণে পাকিস্তানে ডলার ঢালা বন্ধ করেছে; ওবামার সময়, পাকিস্তান তার পুরাতন সব ঋণ মওকুফ পেয়েছে, সেটার পরিমাণ ৪০ বিলয়ন ডলারের মতো, ১০/১২টা পদ্মাসেতু। ভারত তার আইটি ব্যবসায় বছরে ৫০/৬০ হাজার আইটি এইচ-১ ভিসা হারায়েছে সরাসরি পথে; তবে, তারা বিকল্প পথ বের করেছে! বাংগালদেশীরা ক্ষেপেছে, কারণ পারিবারিক ইমিগ্রেশনে যেতে বেশী সময় লাগছে; এর বাহিরে বাংগালীরা অন্য কোনভাবে জাতীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি; তাদের আরেক ক্ষতি আপেক্ষিক: হিলারী ক্লিনটন জিতে গেলে, বেগম জিয়াকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়ার সম্ভাবনা ছিলো বলে অনেক বাংগালী বিশ্বাস করেন।
গত আমেরিকান নির্বাচনে, রাশিয়া বিভিন্নভাবে প্রভাব খাটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে; ট্রাম্পের নির্বাচন কমিটির বড় বড় কর্মকর্তারা, ট্রাম্পের ছেলে, ও মেয়ের জামাই রাশিয়ান দুত ও অন্যান্য কুটনীতিবিদদের সাথে বিভিন্ন যায়গায় মিটিং করেছিলো; এসব মিটিং কোনভাবে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে কিনা সেটা বের করার জন্য ডেমোক্রেটরা সরকারী তদন্ত দাবী করে। ট্রাম্পের নিযুক্ত ডেপুটি এটর্নি জেনারেল ট্রাম্পের পুরোপুরি বিরোধিতার মুখেই এক স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে; উহা "স্পেশাল কাউন্সেল ইনভেষ্টিগেশন" নামে পরিচিতি পায়; এই তদন্ত যিনি পরিচালনা করেন, উনার নাম রবার্ট মুলার, তিনি সারা আমেরিকায় পরিচিত এক আইন বিশেষজ্ঞ।
২০১৭ সালের মে মাসে মুলার তদন্ত শুরু হয়, ২ বছরে তদন্ত শেষে এই বছর মার্চ মাসে তদন্ত রিপোর্ট বিচার বিভাগকে দিয়ে মুলার তদন্ত শেষ করেন। এই তদন্ত বন্ধ করানোর পরোক্ষ চেষ্টা করতে গিয়ে, ট্রাম্প এফবিআই প্রধান, এটর্নি জেনারেল থেকে অনেক বড় পদের লোকদের বরখাস্ত করেন। এসব লোকদের বরখাস্ত ও তদন্তের ফলে ট্রাম্পের ৪/৫ জন ঘনিষ্ট লোকদের জেল হওয়ায়, অনেকেই ভাবছিলেন যে, ট্রাম্পকে হয়তো ইমপিচ করা সম্ভব হবে(পদ থেকে বাদ দেয়া)। ২০১৮ সালে,আমেরিকার নির্বাচনে বিরোধীদল, ডেমোক্রেটিক দল কংগ্রেসে সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ করে; এতে ট্রাম্পের বাদ পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে চলছিলো।
কিন্তু সবকিছুর পর, যেভাবে তদন্ত শেষ হয়েছে; এতে, মনে হচ্ছে, ট্রাম্প আগের থেকে অনেক বেশী শক্ত হয়ে বসেছে। রিপোর্টে কি আছে, সেটা এখনো বের হয়নি; শীঘ্রই বের হবে; রিপোর্টে কি আছে, কংগ্রেস হয়তো পুরোপুরি জানতে পারবে; কিন্তু মানুষকে পুরোপুরিভাবে তা জানতে দেয়া হবে না; যথাসম্ভব জাতীয় স্বার্থের কারণেই সেটা করা হবে।
যাক, ট্রাম্প বাদ পড়েনি; বরং উল্টো ব্যাপার ঘটেছে, ট্রাম্প আরো শক্ত হয়ে বসেছে, এবং আগামী ভোটে তার জনপ্রিয়তা বাড়ার সম্ভাবনা। এখন ট্রাম্পের যেই অবস্হা, ট্রাম্পের বিপরিতে নিজের দল বা বিরোধীদল থেকে তেমন কোন শক্তিশালী প্রার্থী নেই। ডেমোক্রেটিকদের থেকে হয়তো প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট বাইডেন দাঁড়ালে, ট্রাম্পের সাথে শক্ত প্রতিযোগীতা হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১:১৮