১৯৪৭ সালে বৃটিশ চলে যাবার পর, পাকিস্তান সরকার আসলে দেশ চালাচ্ছিলো বৃটিশের মতোই; কারণ, তারা এর বেশী কিছু জানতো না, তারা নিজেরাই কলোনিয়েল সিষ্টেমের ফসল ছিলো, মানসিকভাবে তারা ভারতীয় বৃটিশ ছিলো। মওলানা ভাসানী ও ততকালীন সামান্য পরিমাণ বাংগালী রাজনীতিবিদ স্বাধীনতার প্রাপ্তিকে কাজে লাগিয়ে জাতিকে আধুনিক বিশ্বের মতো গড়ে তুলতে, সুখে, শান্তিতে থাকতে সাহায্য করার জন্য আওয়ামী লীগ গঠন করেন। বাংগালীদের একমাত্র দল হিসেবে আওয়ামী লীগ শুরু থেকেই বাংগালীদের সাপোর্ট পেয়েছিলো, ১৯৫৪ সালে তারা পুর্ব পাকিস্তানে জয়ী হয়েছিলো।
মওলানা ভাসানীর অধীনে তারা সঠিক পথে এগুচ্ছিলো; কিন্তু নতুন স্বাধীন দেশে লোভী দখলকারীদের অভাব ছিলো না, গলাকাটা ক্যাপিটেলিজমের পক্ষের লোকেরা ভাসানীর মতো মানুষকে দলে রাখার পক্ষপাতি ছিলো না। মওলানা ভাসানী দল থেকে চলে যাবার পর, আওয়ামী লীগ ব্যবসায়ীদের দলে পরিণত হয়েছিলো। একই সময়ে পাকিস্তানে ভয়ানক ঘটনা ঘটে, আইয়ুব খানের নেতৃত্বে মিলিটারী দেশটাকে দখল করে নেয়; বৃটিশের ধারক-বাহকদের একাংশ উনার সাথে মিলেমিশে দেশ শাসনে যোগ দেয়।
১৯৬৯ সালে আওয়ামী লীগের ১ম পরীক্ষা হয়, মিলিটারী শাসক আইয়ুব খানের সরকার আওয়ামী লীগের সভাপতি, শেখ সাহেবকে আগরতলা মামলায় ফাঁসী দেয়; ব্যবসায়ীদের বেলায় যা ঘটে, সবাই শেখকে ফেলে পালিয়ে যায়; মওলানা ভাসানী রাস্তায় নেমে, মিলিটারীকে অগ্রাহ্য করে শেখ সাহেবকে প্রানে বাঁচান; সাধারণ মানুষ এগিয়ে এসে আইয়ুবের পতন ঘটায়। এরপর, মানুষ মিলিটারীর উপর বিক্ষব্ধ হয়ে, যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে ১৯৭১ সালে। আওয়ামী লীগ নির্বাচিত দল হিসেবে দেশের সরকার গঠন করে।
১৯৭৫ সালে, বাংলাদেশ মিলিটারী আওয়ামী লীগের প্রধান, দেশের প্রধান, শেখ সাহবকে হত্যা করে দেশ দখল করে নেয়; আও্যামী লীগ আবারো পালিয়ে যায়। মিলিটারী শেখের কবরের উপর বিএনপি নামের দল গড়ে তোলে; বাংলাদেশ-বিরোধীরা মিলিটারীর সাথে যোগ দিয়ে জাতিকে আগের পাকিস্তানী শাসনের মাঝে ফিরায়ে নেয়, '৭১ এর সব প্রাপ্তি শুন্য হয়ে যায়।
শেখ হাসিনা এসে মিলিটারীকে থামায়েছেন, দেশ-বিরোধীদের থামায়েছেন, এটার দরকার ছিলো; কিন্তু আওয়ামী লীগ তার আদর্শ থেকে সরে গেছে; ইহা এখন দখলকারীদের দলে পরিণত হয়েছে, ইহা ঠিক বিএনপি'র আদর্শে চলছে, ইহাতে শেখ নেই, ইহা জেনারেল জিয়ার পথ ধরে চলছে।। ইহার বর্তমান কার্যকলাপ রাজনীতির মাঝে পড়ে না; ইহা কলোনিয়েল নিয়ম-নীতি চালু করেছে দেশে, দেশকে নিজেদের বাজারে পরিণত করেছে। ইহার রাজনীতিতে ফিরার সম্ভাবনা নেই।
কিন্তু আওয়ামী লীগের আসল নীতি, মানুষকে সুখে শান্তিতে থাকার রাজনীতিতে বিশ্বাসীরা এখনো আছেন; তাদের উচিত হবে, জাতিকে সাহায্য করা; বর্তমান আওয়ামী লীগকে থামানোর সময় হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৫৯