আপনি যদি ১ জন গার্মেন্টস কর্মী, বা একজন বস্তি-বাসিন্দাকে বলেন, "বসনিয়ার জংগলে, আটকে-পড়া ২০০ বাংগালীকে সাহায্য করার জন্য কিছু দান করুন"; অনেকই দান করতে পারেন, তবে একটা বড় অংশ ক্ষেপে গিয়ে বলতে পারেন, "ওরা ওখানে গেছে কেন? ওরা ওখানে গেছে স্বেচ্ছায়, এখন ওরা নিজেদের ব্যবস্হা নিজেরা করুক"। বাংলাদেশের অশিক্ষিদের কতজন জানেন যে, বসনিয়া কোথায়, বাংগালীরা ওখানকার জংগল অবধি কি করে পৌঁছলেন, শীতে ওখানে তাপমাত্রা কতো, ওরা ওখানে কি খাচ্ছেন, এই ২০০ জনের ভবিষ্যত কি, শেষ অবধি কি হবে!
আপনি একই কথা বাংলাদেশের কয়েকজন ব্যুরোক্রেটকে বলে, ওদের জন্য সাহায্য চেয়ে দেখেন; সম্ভাবনা, এদের ১ জনও সাহায্য করবে না, এবং বলবে, "এসব কালপ্রিটরা দেশের সুনাম নষ্ট করছে, বিনা ভিসায় ওখানে গেছে, ওরা জাহান্মামে যাক, দেশে কাজের লোক পাওয়া যায় না।"
বসনিয়ার জংগলে এই ২০০ জন আটকা পড়ার পর, আজ অবধি ড: কামাল, ড: ইউনুস সাহেব, ইউনিভার্সিটি শিক্ষক সমিতি, ইন্জিনিয়ারিং এসোসিয়েশন, মির্জা ফখরুল থেকে শেখ হাসিনা কিংবা প্রেসিডেন্টকে এই ব্যাপারে কেহ কোন অনুরোধ করেনি, সবাই চুপ।
যদি ১জন ইসরায়েলী ইহুদী এইভাবে কোথায়ও আটকা পড়ে, তার দেশে কি কি হওয়ার সম্ভাবনা আছে? ১ জন কানাডিয়ান বিদেশে বিপদে পড়লে, সেই দেশের নিকটবর্তী দুতাবাস সাথে সাথে ব্যবস্হা নেবে।
বাংলদেশ সরকার বসনিয়ার জংগলে আটকা-পড়া ২০০ মানুষের জন্য কোন পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা আমি জানি না; আমার সাধারণ ধারণা থেকে বলছি, হয়তো নেয়নি, এবং নেবেনা।
সরকার ব্যবস্হা না নিলে, আমাদের শিক্ষিত নাগরিকেররা সরকারকে অনুরোধ করতে পারেন, চাপ দিতে পারেন; দেশের নাগরিকেরা এই ধরণের সমস্যায় পড়লে, এদেরকে সাহায্য করাই সরকারের দায়িত্ব, এবং যাতে ভবিষ্যতে এই ধরণের ঘটনা না ঘটে, সেটার জন্য পদক্ষেপ নেয়া উচিত। সরকার যদি নিজ দায়িত্ব পালন না করে, সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা শিক্ষিতদের দায়িত্ব, অশিক্ষিতরা এসব দায়িত্ব নিতে সক্ষম নন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৩