পাকিস্তান, বাংলাদেশ, বার্মা ও মিশরে আজো মা-বাবা মেয়ের বর হিসেবে প্রধান্য দেন মিলিটারী অফিসারকে। ১৯৬২ সালে, বার্মায় যখন মিলিটারী ক্ষমতা দখল করেছিলো, শতকরা ৭০ ভাগের বেশী মানুষ মিলিটারী সরকারের পক্ষে ছিলো; আজকে, শতকরা ৭০ ভাগ ভোট পেয়েও সু কি মিলিটারীর হাতে আটক হয়ে বসে আছে। এখন জেনারেল সিসি মিশরে খুবই জনপ্রিয় মানুষ। পাকিস্তানের লোকেরা ইউনিভার্সিটির পিএইচডি বরের সাথে মেয়ে বিয়ে না দিয়ে, নন-কমিশন মিলিটারী সদস্যের কাছে মেয়ে বিয়ে দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে।
বাংলাদেশেও ইহার ব্যতিক্রম ঘটেনি; জেনারেল জিয়া যখন ক্ষমতা দখল করেছিলো, সে খুবই পপুলার ব্যক্তি হয়ে গিয়েছিলো; মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে একবার উনার সাথে হ্যান্ডসেক করতে চেয়েছিলো; এসব মানুষ কি জানতেন, এই লোকটার কারণেই আমাাদের যুদ্ধাকালীন প্রাইম মিনিষ্টার, তাজউদ্দিন সাহেব প্রাণ হারায়েছিলেন? আজক দেশের কি পরিমাণ মানুষ তাজউদ্দিন সাহেবের ভুমিকা জানেন? আমি ব্লগে উনার উপর পোষ্ট আসতে কখনো দেখি না; নুরু সাহেব বছরে উনার উপর ২টা পোষ্ট দেন, তেমন কেহ কমেন্ট করেন না, আমি উনার পোষ্টে গিয়ে তাজউদ্দিন সাহেবকে কিছুক্ষণ গালাগালি করে আসি।
আজকে কতজন বাংগালী জানে, জেনারেল জিয়া ৩০০ মুক্তিযোদ্ধাকে ফাঁসী দিয়েছিলো? যেইলোক মুক্তিযোদ্ধা সৈনিকদের ফাঁসী দিয়েছিলো, তাকে নেতা যারা বলছে, তারা আমাদের ভালো জন্য ভালো কিছু করার মতো চিন্তাশীল মানুষ?
জেনারেল এরশাদ যখন বিচারপতি সাত্তার থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয়, সেদিন আওয়ামী বেকুবেরা খুশীতে আটকানা, বিএনপি ক্ষমতা হারায়েছে! তখনো বেকুবেরা বুঝতে পারেনি যে, মিলিটারী ২ ভাগ বিভক্ত হয়েছে, এখানে কোন সুখবর নেই, আনন্দের কিছু নেই।
যারা বাংলাদেশে জিয়ার মিলিটারী সরকারকে সমর্থন দিয়েছে, তারা কিন্তু পাকিস্তানী আমলে আইয়ুব খানকেও সমর্থন করেছে; সাধারণ বাংগালীরা যখন আইয়ুব খানের বিপক্ষে ক্রমাগতভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছিলো, বাংগালীদের একাংশ খুবই শক্তভাবে আইয়ুব খানকে সাপোর্ট করে আসছিলো; এরাই পরে আমাদের মুক্তিযু্দ্ধের বিরোধীতা করেছে, এদেরই একাংশ আমাদের মুক্তিবাহিনীর বিপক্ষ বুদ্ধ করে পরাজিত হয়েছিলো।
মিলিটারী অফিসারেরা কোন দেশকে ভালোর দিকে নিতে পারেনি, তারা রাজনীতি বুঝে না, তারা সাধারণ মানুষের অধিকার নিয়ে মাথা ঘামায় না; এবং ৩য় বিশ্বের মিলিটারী সব সময় আমেরিকান ক্যাপিটেলিজমের সমর্থন পেয়ে এসেছে। আমাদের দেশের মিলিটারীকে ক্ষমতায় এনেছিলো আমেরিকার সিআইএ ও পাকিস্তান সরকার মিলে। আজকে বাংলাদেশে যেই বিশৃংখলা ও ভয়ংকর অর্থনীতি দেখছেন, এগুলোর বীজ বপন করে গেছে জেনারেল জিয়া ও এরশাদ। জেনারেল জিয়া ও এরশাদ যদি রাজনীতিবিদদের হত্যা না করতো, তাদের থেকে ক্ষমতা কেড়ে না নিতো, বেগম জিয়া বা শেখ হাসিনার মতো অদক্ষ লোকজন কখনো এই দেশের ক্ষমতায় আসতে পারতো না, দেশের অবস্হা এই রকম ভয়ংকর হতো না।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৬