করোনা যখন মহামারী হিসেবে চিহ্নিত হয়, বিশ্বব্যাপী মানুষ ইহার ভয়ে বেশ ভীত ও চিন্তিত হয়েছিলো শুরুতে; মহামারী থেকে সবাই নিজকে রক্ষা করতে চান, সবাই বাঁচতে চান। খুবই কষ্টজনক বাস্তবতা হলো, তা' কখনো সম্ভব হয় না; ইতিমধ্যেই ৮০( সরকারগুলোর হিসেবে মতে ৪০ লাখ) লাখের মতো মানুষ প্রাণ হারায়েছেন, এবং ভবিষ্যত এখনো পরিস্কার নয়। ৩য় বিশ্বে করোনা পুরোদমে রয়ে গেছে, মানুষের ভয় কমে গেছে, এবং ইহা ভয়ংকর ক্ষতিকে মেনে নেয়ার ভুল মানসিকতা।
আজকের সভ্যতায় মহামারী এমন এক মহা-সমস্যায় পরিণত হয়েছে, যা' দেশগুলোর সরকার ব্যতিত কোন নাগরিক বা কোন সংস্হা এককভাবে ইহার মোকাবেলা করতে পারছে না, পারার কথাও না; ইহা থেকে পালানোও সম্ভব নয়। ধনী কিছু দেশে, কিছু মানুষ করোনা থেকে পালিয়ে আছে, তারা অর্থের বিনিময়ে নিজেদেরকে এমনভাবে আইসোলেশনে রেখেছে যে, করোনা সেখানে প্রবেশ করতে পারার কথা নয়; কিন্তু এদের সংখ্যা খুবই নগন্য। উহানে করোনার শুরুতে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁরা বুঝেও উঠতে পারেনি যে, ইহা একটি মহামারীর শুরু ছিলো।
করোনার শুরু চীনে, চীনই একমাত্র দেশ, যা' উহাকে সঠিকভাবে কন্ট্রোল করতে পেরেছে; তবে, ব্যবসায়িক কারণে, এখনো ইহাকে সেখানে নির্মুল করতে পারেনি, যথাসম্ভব। করোনা প্রমাণ করেছে যে, ক্যাপিটেলিষ্ট অর্থনীতি এই ধরণের মহামারীকে সহজে কন্ট্রোল করতে পারবে না; আমেরিকা ও ইউরোপের ক্যাপিটেলিষ্ট অর্থনীতির কিছু মানুষ "ব্যক্তি স্বাধীনতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার নামে" করোনাকে দীর্ঘ সময় লালন পালন করার সম্ভাবনা আছে।
পশ্চিমের দেশগুলোর মাঝে কানাডা, জার্মানী, ইসরায়েল, অষ্ট্রেলিয়া ও স্কেনডেনেবিয়া ব্যতিত বাকী সবগুলোর সরকারেরা ভালোই অদক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে। তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশের সরকারগুলোকে অদক্ষ না বলে, 'অপরাধী' বলাই ঠিক হবে; এরা ইহাকে কন্ট্রোল করার জন্য বাস্তব পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। পুরো আফ্রিকা ও এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ সব সময় পশ্চিমের দিকে তাকিয়ে থাকে, ওরা এসে রক্ষা করবে; কিন্তু করোনার বেলায় তা সহজে ঘটবে না; সাহায্য আসবে, তবে, তার আগে অনেক মানুষের প্রাণ যাবে। তৃতীয় বিশ্বের লোকজন তাদের সরকারকে কোনভাবে চাপ না দিয়ে, নিজের পরিবারকে রক্ষার চেষ্টা করছে; ইহা কাজ করবে না; সবাই বাঁচতে চান, কিন্তু পরিবারভিত্তিক চেষ্টায় তা' সম্ভব হবে না, সরকারকে চাপ দিতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:২৩